প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কোনো কিছুতেই তৃপ্ত হন না। সে এক অতৃপ্ত বাসনা নিয়েই রাজত্ব চালাবে, যতই পান ততই চান। মানুষের দুঃখ, কষ্ট, যন্ত্রণা তাকে পুলকিত করে, আনন্দিত করে।
মানুষের জন্য কোনো কিছু করে তিনি কোনো আনন্দ লাভ করতে পারেন না। এরকম বিকৃত মানসিকতা সম্পন্ন একটা ব্যক্তির কবলে সারা দেশ।
তিনি আরও বলেন, সরকার খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখেছেন। তারপরও সন্তষ্ট নন। দেশনেত্রী জেলখানায় আছেন এতেও তার স্বস্তি নয়। তার মৃত্যুর সংবাদ তিনি যতক্ষন পর্যন্ত না শুনবেন ততক্ষন পর্যন্ত তিনি বিচলিত। এটাই তার পণ, এটা তার অঙ্গীকার। এজন্য তাকে একসঙ্গে সহযেগিতা করছে প্রশাসন ও আদালত।
খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়ে গয়েশ্বর বলেন, কারো মুখাপেক্ষী হয়ে নয়, নিজেরাই আন্দোলন করে নিজেদের দাবি আদায় করতে হবে। দলীয় নেতাকর্মীদের সর্বোচ্চ ত্যাগ ও পরিশ্রম ছাড়া খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা সম্ভব নয়।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন এসব কথা বলেন তিনি।
কৃষক দলের আহবায়ক শামসুজ্জামান দুদু‘র সভাপতিত্বে সদস্য এসকে সাদীর পরিচালনায় মানববন্ধনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব, খায়রুল কবির খোকন, আবদুস সালাম আজাদ, উলামা দলের নেসারুল হক, কৃষক দলের সদস্য জাফির তুহিন, তকদির হোসেন জসিম, নাজিমউদ্দিন মাস্টার, শহীদুল ইসলাম ভুঁইয়া, নাসির হায়দার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে দলীয় সদস্যদের সংসদে দেখতে নেতা-কর্মীরা চায় না- এমন মন্তব্য করে গয়েশ্বর বলেন, ‘আমরা দেখছি যে, আমাদের সঙ্গে থাকলো, আমাদের মাথায় কাঁঠাল রাইখা তিনি (সুলতান মো. মনসুর) এখন কাঁঠাল খাচ্ছেন সংসদে বইসা। কী মনসুর। আমাগো লগে থাইকা, আমাদের এখান থেকে আমরা পাখি ছাইড়া দিলাম, সংসদে চইলা গেলো। আরো কিছু অপেক্ষা (সংসদে যোগদান) করছে কিনা, আরো কিছু যাবে কিনা-তাও জানি না।
পাখি যায় যাক, সেই পাখিদের একটাই বলব, গণতন্ত্রের নেত্রী গণতন্ত্রের মা খালেদা জিয়াকে জনগনের কাছে হস্তান্তর করে কারো যদি সংসদ যাওয়ার শখ থাকে যান, কিছু বলব না। কিন্তু তিনি (খালেদা জিয়া) জেলে থাকবেন আর পার্লামেন্টে গিয়ে কথা বলবেন সেই কথা শুনার জন্য কিন্তু আমরা কখনোই প্রস্তুত থাকবো না।
খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে সংসদ নির্বাচনে যাওয়ার দলীয় সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলে স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচন হবে না, হাসিনাকে রেখে নির্বাচন হবে না। এই দুইটির একটিও কার্যকর করলেন না। হাসিনাকে রাখলেন, খালেদা জিয়াকে মুক্ত না করে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করলেন। আপনারা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এদেশের গণতন্ত্র- জনগণের ভোট আদায় করে আপনারা সরকার গঠন করবেন, খালেদা জিয়া মুক্ত হবেন-এই যে ধারনা রাজনীতিতে এরচেয়ে নিবুর্দ্ধিতার পরিচয় আর কিছু হতে পারে না। সেই কারণেই আজকে বলব, এই সরকারকে বৈধকরনের জন্য আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহন করছিলাম কিনা?
গয়েশ্বর বলেন, রাজনীতিতে পান্ডিত্যের চেয়ে বেশি প্রয়োজন জনগনের মনোভাব বুঝা। জনগণের পালস যারা বুঝতে পারে না তারা রাজনীতিতে কখনো সফলতা লাভ করতে পারে না, জনগণকে কিছু দিতে পারে না। বিএনপির জন্ম হয়েছে জনগণের জন্য, বিএনপির জনগণকে কিছু দেবে এটা প্রতিশ্রুতি। কিন্তু আওয়ামী লীগের জনগণের জন্য হয়নি, তাদের জন্ম হয়েছে নিজেদের জন্য। তারা ক্ষমতায় থেকে লুটপাট করবে খাবে সরকারি কর্মচারিদের ভাগ-বাটোয়ারা দেবে। এই রাজত্বে জনগণের কথা থাকবেন না, সেই রাজত্বে জনগণের অধিকারের কথা থাকবে না।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন