উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট প্রদানের জন্য সপরিবারে গ্রামের বাড়ি ফারুয়ায় যান উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সুরেশ কান্তি তঞ্চঙ্গ্যা। ভোটের পরদিন মঙ্গলবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে উপজেলার আলীক্ষ্যং এলাকায় ফেরার পথে তিন সশস্ত্র সন্ত্রাসী ইঞ্জিন বোট থামিয়ে বুকে ও মাথায় গুলি করে হত্যা করে তাকে।
নিহত উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতার ছেলে নিরূপম তঞ্চঙ্গ্যা (২৮) জানায়, ‘উপজেলা নির্বাচনে ভোট দেওয়ার জন্য আমরা সপরিবারে গ্রামের বাড়িতে যাই। মঙ্গলবার সকালে বোটে করে আমরা উপজেলা সদরে আসার জন্য সপরিবারে রওয়ানা দিই। সকাল সাড়ে আটটার দিকে আলীক্ষ্যং এলাকায় এলে হঠাৎ বোটের চালক ইঞ্জিন থামিয়ে দেয়। কারণ জানতে চাইলে সে কূলের দিকে আমাদের তাকাতে বলে। তখন আমরা কূলে (পাড়ে) তাকিয়ে দেখি তিনজন সশস্ত্র সন্ত্রাসী অস্ত্র হাতে দাঁড়িয়ে আছে। এরপর বোট চালককে দ্রুত বোট চালিয়ে যেতে বললে সে জানায় না থামলে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা গুলি চালাবো।
নিরূপম বিভৎস ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আরও জানায়, পরে আমাদের বোট কূলে (পাড়ে) ভেড়ানো হয়। পাড়ে বোট ভেড়ানোর পর তারা প্রথমে আমার বাবার বুকে, পরে দ্বিতীয় পিস্তল ঠেকিয়ে মাথায় গুলি করে। এ সময় আমার মা তাদের বাধা দিলে তারা মাকেও লাথি মেরে লেকে (পানিতে) ফেলে দেয়।
‘আমার বাবার কোনও শত্রু থাকার কথা নয়। আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার কারণেই আমার বাবাকে এমন নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন,’ বলেন সুরেশের ছেলে।
বিলাইছড়ি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) এসএম সাইফুল্লাহ জানান, ‘নিহত সুরেশ কান্তি তঞ্চঙ্গ্যার লাশ বোট যোগে রাঙামাটি এনে ময়নাতদন্ত ও সুরুতহাল করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।’
এদিকে গুলিতে উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাকে হত্যার ঘটনায় সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতিকে (জেএসএস) দায়ী করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। তবে অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে জেলা জেএসএস।
উল্লেখ্য, দ্বিতীয় ধাপে সোমবার অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এই উপজেলায় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) সমর্থিত প্রার্থী বীরোত্তম তঞ্চঙ্গ্যার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী জয়সেন তঞ্চঙ্গ্যা। জেএসএস দুর্গ এই বিলাইছড়িতেই দীর্ঘ আটারো বছর দলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন সুরেশ কান্তি তঞ্চঙ্গ্যা।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন