পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে গতকাল। কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া অনেকটা শান্তিপূর্ণ এ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল তুলনামূলক কম। অনেক উপজেলায় চিত্র ছিল হতাশাজনক। দিনভর নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের ভোটারদের অপেক্ষায় থাকতে দেখা যায়। নির্বাচনে আগের রাতে সিল মেরে বাক্স ভরার অভিযোগে তিনটি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত ও নির্বাচনী কর্মকর্তাসহ ৯ জনকে আটক করা হয়েছে। সারা দেশের ৭৮টি উপজেলায় গতকাল ভোটগ্রহণ হলেও ভোটারদের তেমন কোনো সাড়া মেলেনি। নির্বাচন হওয়া উপজেলাগুলোর মধ্যে ২৮টি কেন্দ্রে ব্যালট পেপার ছিনতাইসহ নানা অনিয়ম ও জালভোটের অভিযোগে ভোট স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন।
কুড়িগ্রাম সদর, চিলমারী, নাগেশ্বরী, রৌমারী, উলিপুর, লালমনিরহাটের পাটগ্রাম, সিরাজগঞ্জের সদর, শাহজাদপুর, রাজশাহীর গোদাগাড়ী, সুনামগঞ্জের সদর, ছাতক, তাহিরপুর, শাল্লা, হবিগঞ্জের বানিয়াচং ও আজমিরীগঞ্জ উপজেলার এসব কেন্দ্রে জোরপূর্বক ব্যালট পেপারে সিল মারা, ব্যালট পেপার ছিনতাই, প্রিজাইডিং ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারদের বিধিবহির্ভূত কর্মকাণ্ডের জন্য ভোট স্থগিত করা হয়।
এ ছাড়া বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকের সমর্থক ও বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা সামলাতে গিয়ে কয়েকজন পুলিশ ও আনসার সদস্য আহত হন। ভোটগ্রহণ শেষে নির্বাচন ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, সিরাজগঞ্জে দুইজন প্রিজাইডিং ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। লালমনিরহাটের পাটগ্রামেও নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা দুজন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া যারা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ছিল এরকম ১০ জনের অধিককে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, প্রথম দফায় সিরাজগঞ্জ জেলার ৭টি উপজেলায় নির্বাচন হয়েছে। বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠু হলেও কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ছিল খুবই কম। নির্বাচনে আগের রাতে ভোট প্রদান ও ভোটার উপস্থিতির চেয়ে অতিরিক্ত ভোট সংগ্রহ ও জালভোট দেয়ার অভিযোগে ২টি উপজেলার ৩টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত, একটি কেন্দ্রে স্থগিত করে কর্তব্যরত প্রিজাইডিং অফিসার ও দুইজন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং জালভোট দিতে এসে কাজিপুরে ইউপি সদস্যসহ সদর মিলে ৬ জন আটক হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরকার মোহাম্মদ রায়হান জানান, সদরের মাহমুদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটের আগের রাতে জালভোট প্রদানে সহযোগিতা করায় প্রিজাইডিং অফিসারসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে। একই সঙ্গে ওই ভোটকেন্দ্র স্থগিত ঘোষণা করেছেন জেলা রিটার্নিং অফিসার। আটককৃতরা হলেন- প্রিজাইডিং অফিসার আনোয়ার হোসেন, সহকারী প্রিজাইডিং আব্দুল আলীম ও বেলাল হোসেন। এর আগে রোববার রাত আড়াইটার দিকে ওই কেন্দ্রটিতে ভোট কারচুপির ঘটনা ঘটলে কেন্দ্রটির ভোটগ্রহণ স্থগিত ঘোষণা করা হয়।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল হোসেন জানান, সংবাদ পেয়ে রাতেই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ রহমত উল্লাহকে নিয়ে কেন্দ্র পরিদর্শন করেছি। এরপর কেন্দ্রটি স্থগিত ঘোষণা এবং অভিযুক্ত প্রিজাইডিং অফিসারসহ তিনজনকে আটক করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অপরদিকে, ভোটারের উপস্থিতির চেয়ে কাস্টিং ভোট বেশি হওয়ায় সিরাজগঞ্জে শাহজাদপুরের দুটি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করেছেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা। রোববার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার শ্রীফলতলা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কৈজুরী মুহিব উল দাখিল মাদরাসা কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করা হয়। জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল হোসেন জানান, শ্রীফলতলা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কৈজুরী মুহিব উল দাখিল মাদরাসা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলাকালে দুষ্কৃতিকারীরা কেন্দ্র দখল করে জালভোট দেয়। প্রিজাইডিং অফিসারদের এমন অভিযোগের ভিত্তিতে ওই ভোটকেন্দ্র ২টি স্থগিত করা হয়েছে।
এদিকে, সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে জালভোট দিতে গিয়ে ইউপি সদস্যসহ চারজনকে আটকের পর অর্থদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। দুপুরের দিকে উপজেলার খুদবান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। অর্থদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কাজিপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য শামীম হোসেন, একই গ্রামের জুয়েল রানা, বিপ্লব রানা ও আসিফ জাহান।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাকিয়া সুলতানা জানান, খুদবান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ঢুকে জালভোট দেয়ার চেষ্টা করছিলেন ইউপি সদস্য শামীম হোসেনসহ তার তিন সহযোগী। এ সময় তাদের আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে শামীম হোসেনকে ৭ হাজার টাকা বাকিদের ৫ হাজার টাকা অর্থ দণ্ডাদেশ দেয়া হয়।
এ ছাড়াও সিরাজগঞ্জ সদরে জালভোট দেয়ার সময় দুই যুবককে আটক করেছে পুলিশ। বেলা ১২টার দিকে শহরের সালেহা ইসহাক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। আটকরা হলেন- পৌর এলাকার ধানবান্ধি মহল্লার ছানোয়ার হোসেন ছানার ছেলে সাকিব (১৬) ও তার সহযোগী একই এলাকার নাইম (১৮)।
কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি জানান, নানা অনিয়মের অভিযোগের মধ্যে দিয়ে জয়পুরহাটের কালাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল ৮টা থেকে শুরু করে একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত ৪৫টি ভোটকেন্দ্রের ২৯৫টি কক্ষে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে মোট ১ লাখ ১১ হাজার ৫৩৯ ভোটার রয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার সংখ্যা রয়েছে ৫৪ হাজার ৫৬২ এবং মহিলা ভোটার সংখ্যা রয়েছে ৫৬ হাজার ৯৭৭। এ নির্বাচনে কালাই উপজেলার কুসুম সাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে প্রায় ১১টায় জাসদ মনোনীত প্রার্থী মশাল মার্কা সমর্থিতদের হামলায় নৌকার দুই কর্মী কুসুম সাড়া গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে আব্দুস সবুর ও আব্দুস জোব্বারের স্ত্রী জরিনা বেগম আহত হওয়ার অভিযোগ ওঠে। অন্যদিকে, দুপুর আড়াইটার দিকে কালাই প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এজেন্টদের মারপিট করে বের করে দেয়া এবং কেন্দ্র দখলের অভিযোগে জাসদ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী তারেকুল ইসলাম মিলন সরকার ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। এ ছাড়াও নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে কালাই উপজেলার উদয়পুর ইউনিয়নের বাসুরা উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে আমিনুল ইসলাম সোহাগ নামে এক ইউপি সদস্যকে ১০ দিনের কারাদণ্ড এবং জালভোট প্রদানের অভিযোগে মোসলেমগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে আন্তাজ নামে এক ব্যক্তিকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক সপ্তাহের কারাদণ্ড প্রদান করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। একই সময়ে বিয়ালা উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে একই অভিযোগে আতিকুর রহমান নামে অপর এক ব্যক্তিকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে এক সপ্তাহের কারাদণ্ড প্রদান করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
রাজশাহীতে ভোটকেন্দ্র ফাঁকা প্রিজাইডিং কর্মকর্তাসহ আটক ৩
আসলাম-উদ-দৌলা, রাজশাহী থেকে জানান, প্রথম ধাপে রাজশাহীর ৯টি উপজেলার মধ্যে ৮টিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকা ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের নানাভাবে হয়রানির কারণে ভোটার উপস্থিতি ছিল কম। কোনো কোনো কেন্দ্রে ভোটারদের দেখা পাওয়াটাই ছিল মূল আকর্ষণ। ভোটার না থাকায় দায়িত্বরত প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, পুলিশ ও আনসার সদস্য থেকে শুরু করে পোলিং এবং এজেন্টরদের বসে থেকে সময় পার করতে দেখা গেছে। জেলার বাগমারা, দুর্গাপুর, তানোর, পুঠিয়া, গোদাগাড়ী, বাঘা, চারঘাট, মোহনপুর ও বাঘার অধিকাংশ কেন্দ্রের একই অবস্থা। এরইমাঝে গোদাগাড়ী উপজেলায় নৌকা প্রতীকে জাল ভোট দেয়ার অভিযোগে সুলতানগঞ্জ আল জামিয়াতুস সালাফিয়া আলিম মাদরাসার ভোট স্থগিত করা হয়েছে। এ সময় দুইজন প্রিজাইডিং কর্মকর্তাসহ তিনজনকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। দুপুর ১টার দিকে এই কেন্দ্র স্থগিত করেন রিটানিং অফিসার ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম।
আটকরা হলেন- সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা নাজমুল হক ও মুকিদ আলী মাস্টার, নৌকা প্রতীকের পোলিং এজেন্ট মাসুদ রানা।
রিটানিং অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন, তিনজন মিলে নৌকার পক্ষে ব্যালটে সিল মারছিল। বিষয়টি ভ্রাম্যমাণ আদালতের নজরে আসলে দ্রুত গিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে বেশ কিছু সিল মারা ব্যালট পেপার জব্দ করে। পরে ওই কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।
এ ছাড়া দুর্গাপুরে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল মজিদের পোলিং এজেন্টকে কয়েকটি কেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার পর থেকেই এই ঘটনা ঘটে। উপজেলার অন্তত ৫টি কেন্দ্রে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেছেন চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল মজিদ।
সকাল ১১টার দিকে বাগমারা উপজেলার মচমইল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, একজন ভোটারও আসেনি। বাইরে কাঠের বেঞ্চে বসে সময় পার করছেন নির্বাচনে দায়িত্বরতরা। উপজেলার অন্য কেন্দ্রগুলোতে একই অবস্থা বিরাজ করছে সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত।
সকাল ১০টা পর্যন্ত গোদাগাড়ী পৌরসভার মহিষালবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ২ হাজার ৭৭ ভোটারের মধ্যে ভোট দেয় মাত্র ৫৮ জন। কেন্দ্রটির প্রিজাইডিং অফিসার খন্দকার মাহফুজুল হক বলেন, ভোটার কম হলেও অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ চলছে।
অন্য উপজেলাগুলোতেও ভোটার উপস্থিতি কম ছিল। সকাল ১০টা পর্যন্ত সর্বোচ্চ ভোটার দেখা গেছে গোদাগাড়ীর সারেংপুর সরকারি বিদ্যালয় কেন্দ্রে। এখানে ২ হাজার ৯শ’ ভোটারের মধ্যে সকাল ১০টা পর্যন্ত প্রায় ৪শ’ ভোটগ্রহণ হয়েছে বলে জানান প্রিজাইডিং অফিসার মিজানুল হক।
এরমধ্যে শনিবার দিবাগত রাতে গোদাগাড়ীর প্রেমতলী এলাকার একটি ভোটকেন্দ্র থেকে মইদুল ইসলাম আপেল নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। তিনি উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র সহসভাপতি। রাতেই কেন্দ্রে গিয়ে নৌকা প্রতীকে সিল মেরে ব্যালট ভর্তির দাবি জানালে তাকে আটক করা হয়। এই গোদাগাড়ীতে নৌকার প্রার্থী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম।
সুনামগঞ্জে ভোটারহীন ভোট উৎসব, ৩ উপজেলায় হাঙ্গামা
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, সুনামগঞ্জের ৯টি উপজেলার মধ্যে তাহিরপুর, শাল্লা ও ধর্মপাশা উপজেলায় ভোটকেন্দ্র এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ওই তিন উপজেলার ৮টি কেন্দ্রে সাময়িক ভোটগ্রহণ বন্ধের পর আবারো চালু হয়। এ ছাড়া ৯ উপজেলার ৫৪১টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৫৩৩টি ভোটকেন্দ্রে শান্তিপূর্ণভাবেই ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এদিকে, ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের উপস্থিত ছিল খুবই কম। অনেক কেন্দ্রে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করার পরও ভোটারদের দেখা যায়নি। জেলার ৯টি উপজেলায় ভোটারহীন ভোট উৎসব হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, তাহিরপুর উপজেলার দীঘলবাক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুপুর ১২টার দিকে কেন্দ্র দখল নিয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী করুনা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আনিসুল হকের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে উভয় পক্ষের ৭ জন আহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েক রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে পুলিশ। তবে, সংঘর্ষ থামলেও এলাকায় বিরাজ করছিল উত্তেজনাকর পরিস্থিতি। পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় বেলা আড়াইটার দিকে ওই কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করে দেয়া হয় বলে জানিয়েছেন উপজেলা রিটার্নিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম। একই উপজেলার কড়ইগড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রেও দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ চার রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে বলে জানান তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নন্দন কান্তি ধর।
শাল্লা উপজেলার কাশিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আল আমিন চৌধুরী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী অবনী মোহন দাসের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলে। এ সময় একটি কক্ষের ভোটবাক্স ভাঙচুর করা হয়। একই উপজেলার ইয়ারাবাদ কেন্দ্রে স্বতন্ত্র প্রার্থী অবনী মোহন দাসকে অবরুদ্ধ করে রাখে নৌকার সমর্থকরা। পরে তাকে পুলিশ উদ্ধার করে। এই কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ সাময়িক স্থগিত করা হয়। এই উপজেলার চব্বিশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শ্রীহাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
ধর্মপাশা উপজেলার দুঘনই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েও আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। কিছু সময় ভোটগ্রহণ বন্ধ ছিল এ কেন্দ্রে।
এদিকে, সকাল থেকেই জেলার ৯টি উপজেলার ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের উপস্থিত ছিল খুবই কম। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার উপস্থিতি বেশি হবে এমনটা আশা করলেও তা বিফলে যায়। জেলার বিভিন্ন উপজেলায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সব উপজেলায় ভোটার উপস্থিতি খুবই কম। কিছু সময় পর দু-একজন করে ভোটার এসে ভোট দিয়ে যাচ্ছেন। ভোটারদের ভিড় না থাকার কারণে বসে বসে চা খাচ্ছেন সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও পোলিং কর্মকর্তারা। অলস সময় পার করছেন নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা পোলিং এজেন্ট ও আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মকর্তারাও।
আজমিরীগঞ্জে নৌকার সিলমারা ৪৩টি ব্যালট জব্দ
স্টাফ রিপোর্টার, হবিগঞ্জ থেকে জানান, হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে নৌকা প্রতীকের সিলমারা ৪৩টি ব্যালট পেপার জব্দ করা হয়েছে। রোববার দুপুরে ওই উপজেলার চৌধুরী হামদু মিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে এসব ব্যালট উদ্ধার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করে আজমিরীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার নাঈমা খন্দকার জানান, তারা জানতে পারেন ওই কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকে সিলমারা ব্যালট নিয়ে কয়েকজন প্রবেশ করেছে। খবর পেয়ে সেখানে অভিযান চালালে তারা ব্যালট ফেলে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
চিলমারীতে জোরপূর্বক নৌকায় সিল, ২ কেন্দ্রস্থগিত, গ্রেপ্তার ২
চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ৫ম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। রোববার সকাল ৮টায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে বিরতিহীনভাবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে। ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল তুলনামূলকভাবে কম। দুপুর ১২টায় জোরপূর্বক ব্যালট পেপারে সিল মারার অভিযোগে রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের খালেদা শওকত পাটওয়ারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৩টা ৪০ মিনিটে চিলমারী ইউনিয়নের চর বৈলমনদিয়ার খাতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। ব্যালট পেপারে সিল মারার অভিযোগে কেন্দ্র দুটির ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে বলে জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার। অপরদিকে জাল ভোট দেয়ার চেষ্টার অপরাধে রাধা বল্লভ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে এরশাদুল হক ও শরীফের হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে স্বপন মিয়া নামের দুই যুবককে গ্রেফতার করে প্রশাসন।
চিলমারীতে ৬ ইউনিয়ন মিলে মোট ৯২ হাজার ৬৮৫ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৪৪ হাজার ৭৬৪ জন ও মহিলা ভোটার ৪৭ হাজার ৯২১ জন।
সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ মো. শামসুজ্জোহা জানান, কিছু দুষ্কৃতিকারী জোর করে ব্যালট পেপারে সিল মারার ঘটনায় কেন্দ্র দুটির ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। সার্বিকভাবে উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নীলফামারীতে ভোটারবিহীন ভোটকেন্দ্র
নীলফামারী প্রতিনিধি জানান, বিন্দুমাত্র উৎসাহ-উদ্দীপনা নেই ভোটারদের মাঝে। কোনো কোনো কেন্দ্রে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ভোটারই আসেনি। এতটাই ভোট বিমুখ ভোটাররা যে, কোনো কোনো কেন্দ্রে ভোটারের চেয়ে ভোটগ্রহণ কাজে নিয়োজিতদের সংখ্যাই ছিল বেশি। শহরের মশিউর রহমান কলেজ কেন্দ্রের একটি কক্ষে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১টা ভোটও বাক্সে পরেনি। দুপুর ১টা পর্যন্ত উত্তর রামকলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ১৪১৯ জন ভোটারের মাত্র ৮০ জন ভোটার ভোট প্রদান করেন বলে জানান, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার মাসুদুর রহমান। দুপুর দেড়টা পর্যন্ত টুপামারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে মাত্র ২২০টি ভোট পড়েছে। এ কেন্দ্রের মোট ভোটার ২২৪৩ জন বলে জানান, প্রিজাইডিং অফিসার মৃণাল কান্তি রায়। হাজারারীরহাট স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রের ২৪১৫ জন ভোটারের মধ্যে দুপুর ২টা পর্যন্ত মাত্র ৪০০ ভোটার ভোট প্রয়োগ করেছেন। ওদিকে কুন্দপুকুর ইউনিয়নের ফকিরপাড়া কাইমিয়া মাদরাসা কেন্দ্রে দুপুর ২টা পর্যন্ত সাদ বাক্সে ভোট পড়ে মাত্র ১৬৫টি। একেন্দ্রের ভোট সংখ্যা ২৩৯৭টি বলে জানান, প্রিজাইডিং অফিসার ব্যাংক ম্যানেজার তরিকুল ইসলাম গোলাপ। এছাড়া জেলা সদরের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র উদয়ন শিশু বিদ্যাপিঠ কেন্দ্রে দুপুর ১২টা পর্যন্ত একটি বুথে মাত্র ২৬ জন ভোটার ভোট প্রদান করেছেন। এ কেন্দ্রের ভোটার সংখ্যা প্রায় ৩ হাজার। এছাড়া শহরের আলিয়া মাদরাসা কেন্দ্র, পুলিশ লাইন্স একাডেমি, আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, ভোকেশনাল, বোসাদ্ধার কেন্দ্র ঘুরে একই চিত্র দেখা গেছে। ভোটারের উপস্থিতি নেই বল্লেই চলে।
অলস সময় কাটাতে দেখাতে গেছে ভোট গ্রহণের কাজে নিয়োজিতদের। তার পরেও যে দুই-চারজন ভোট কেন্দ্রে এসেছেন তারাও পড়েছেন চরম বিড়ম্বনায়। ভোটার তালিকায় নাম ও ক্রমিক নম্বর পেতে হিমশিম খেতে হয়েছে। কোনো কোনো কেন্দ্রের বাইরে ভোটার তালিকা নিয়েও বসেনি প্রার্থীর লোকজন। অনেক কেন্দ্রে পুলিং এজেন্ট পর্যন্ত নেই। একই অবস্থা জেলার অন্যান্য সবকটি উপজেলাতেই। তবে নির্বাচনী পরিবেশ ছিল শান্তিপূর্ণ। ভোটার উপস্থিতি আশানরূপ না হলেও নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট সব পক্ষই ছিল তৎপর।
শাহিদের পক্ষে রায়: এদিকে নীলফামারী সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে একক প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক শাহীদ মাহমুদকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করে গত ২০শে ফেব্রুয়ারি রিটার্নিং অফিসারের জারি করা গণবিজ্ঞপ্তিকে বৈধ বলে রায় দিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। গতকাল সকালে প্রধান বিচারপ্রতির নেতৃত্বে ৬ সদস্যের ফুলবেঞ্চ এ রায় প্রদান করেছেন।
কুড়িগ্রামে ব্যালট ছিনতাই, ১৩ কেন্দ্র স্থগিত
স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম থেকে জানান, কুড়িগ্রামে ব্যালট পেপার ছিনতাই এবং কারচুপির অভিযোগে ৫টি উপজেলার ১৩টি কেন্দ্রে ভোট স্থগিত হয়েছে। কেন্দ্রগুলো হলো, সদর উপজেলার মালভাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শিবরাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, টগরাইহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ। উলিপুর উপজেলার হোকোডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মদিনাতুল উলুম সিনিয়র মাদরাসা, কিসামত মালতিমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও হাতিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। নাগেশ্বরীতে কুটি নাওডাঙ্গা ফোরকানিয়া এবতেদায়ী মাদরাসা ও পূর্ব পয়রাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। চিলমারীতে খালেদা শওকত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বৈলমন্দিয়ারখাতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং রৌমারীতে ধনার চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। রিটার্নিং কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে।
উলিপুরের হোকোডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রিজাইডিং অফিসার আবু বকর সিদ্দিক জানান, ৭নং বুথে একদল দুষ্কৃতকারী হামলা চালিয়ে একটি ব্যালট বাক্স, চেয়ারম্যানের ১টি এবং দুই ভাইস চেয়ারম্যানের ২টি ব্যালট বই ছিনতাই করে নিয়ে যায়। সকাল ৯টায় ১০ মিনিটের দিকে এ ঘটনা ঘটে। অপরদিকে মদিনাতুল উলুম সিনিয়র মাদরাসা কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মিজানুর রহমান জানান, সকাল ১০টা ৫ মিনিটের দিকে এই কেন্দ্রে হামলা চালিয়ে বেশ কিছু ব্যালট বই ছিনতাই করে নিয়ে যায়। পরে কিছু উদ্ধার করা সম্ভব হলেও ২০০ বই উদ্ধার করা সম্ভব হয় নেই। এদিকে নাগেশ্বরীর কুটি নাওডাঙ্গা ফোরকানিয়া এবতেদায়ী মাদরাসা কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার সাদিকুর রহমান জানান, ১০টা ৪০ মিনিটের দিকে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের ব্যালট পেপার ছিনতাই করে সিল মারার অভিযোগে এবং সদর উপজেলার শিবরাম প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সকাল ১১টার দিকে একদল দুষ্কৃৃতকারী ৭নং বুথে ঢুকে সকল ব্যালট পেপারে সিল মেরে বাক্সে ঢোকান। এরপর আমাকে চাপ সৃষ্টি করেন আরো ব্যালট পেপার দেয়ার জন্য ফলে বাধ্য হয়ে এই কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্তগিত করা হয়। এছাড়াও রৌমারীর যাদুরচর ইউনিয়নের ধনার চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুষ্কৃতকারীর ৫০০ ব্যালট পেপার ছিনতাই করে জোর করে বাক্সে ঢোকানোর চেষ্টা করলে ভোটগ্রহণ স্তগিত করা হয়।
ডোমারে ভোটারের দেখা নেই
ডোমার (নীলফামারী) প্রতিনিধি জানান, কেন্দ্রের বাইরে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নজীরবিহীন নিরাপত্তা। কেন্দ্রের ভেতরে প্রিজাইডিং অফিসার। আছেন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং পোলিং এজেন্ট। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে যা যা দরকার তার কোনোটাতেই কমতি নেই। কিন্তু এত সব আয়োজন যাদের জন্য তাদের দেখা মিলছে না কেন্দ্রগুলোতে। ডোমার উপজেলার বিভিন্ন্ন ভোট কেন্দ্র ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। ভোটারের উপস্থিতি একেবারেই কম। প্রথম দুই ঘণ্টায় কোনো কোনো কেন্দ্রে ১০-২০টি পরার খবর পাওয়া গেছে। ভোটাররা না আসায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকজন গল্প করেই সময় পার করছেন। উপজেলার কয়েকটি কেন্দ্রে প্রথম দিকে ভিড় লক্ষ্য করা গেলেও তা ৩০ শতাংশের বেশি নয়। সকাল আট থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলছে ভোটগ্রহণ। চেয়ারম্যান পদে তিনজন ও ভাইস চেয়ারমন পদেও তিনজন করে মোট নয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
সকাল থেকেই ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতি একেবারেই কম। তবে দুপুরের দিকে কিছুটা ভোট পড়তে দেখা গেলেও তা নগন্য। সরজমিনে বিভিন্ন ভোটকেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, বিচ্ছিন্নভাবে কিছু ভোটার ভোট প্রদান করছেন। কেন্দ্রের সামনে নেই কোনো ভোটারের লাইন। ভোটকেন্দ্রের মাঠগুলো ভোটার না থাকায় খাঁ খাঁ করছে। আনসাররা গল্পগুজব করে সময় পার করছেন। বিকাল সাড়ে তিনটা অবধি ভোট কেন্দ্রগুলোয় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ভোট পড়তে দেখা গেছে। বিভিন্ন ভোটারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিরোধী দলের প্রার্থীরা নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় ভোটারদের মাঝে ভোটের কোন আমেজ নেই। তবে সব কেন্দ্রেই শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। অনেক ভোটার জানান, এক সময় কেউ আর ভোটে দাঁড়াবার আগ্রহ প্রকাশ করবে না। ভোটারদের কম উপস্থিতি ভোটকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে বলে মনে করছেন বিশিষ্টজনরা।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন