প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সম্প্রতি একাদশ জাতীয় নির্বাচন হলো, যেখানে প্রায় ৫ লাখ আনসার সদস্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন ভোটকেন্দ্র পাহারায় ও ভোটারদের নিরাপত্তার স্বার্থে। অক্লান্ত পরিশ্রম করে তারা বাংলার জনগণকে সুষ্ঠু একটি নির্বাচন উপহার দিয়েছেন।
তিনি বলেন, এই দায়িত্ব পালনকালে পাঁচ আনসার সদস্য জীবন দিয়েছেন। তাদের আমরা আজ মরণোত্তর সাহসিকতা পদক দিয়েছি।
মঙ্গলবার (১২ ফেব্রুয়ারি) গাজীপুরের সফিপুরে আনসার-ভিডিপি একাডেমিতে বাহিনীটির ৩৯তম জাতীয় সমাবেশ ও কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্ত্যব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় যখন মুজিবনগরে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠিত হয়েছিল, তখন সেই নতুন সরকারকে গার্ড অব অনার দিয়েছিল এই আনসার বাহিনীই।
আনসার-ভিডিপির কাজের প্রসংশা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ২০১৪-১৫ সালে বিএনপি-জামায়াত যখন অগ্নিসন্ত্রাস চালায়; ককটেল ও বোমা মেরে রেল, গাড়ি, লঞ্চ, সিএনজি পুড়িয়ে যখন সাধারণ মানুষের চলাচলে বাধার সৃষ্টি করছিল, পুড়িয়ে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করছিল, তখন অগ্নিসন্ত্রাস প্রতিরোধ করার ক্ষেত্রে, বিশেষ করে রেলের নিরাপত্তায় বিশিষ্ট ভূমিকা রাখে। এই অনবদ্য ভূমিকার জন্য তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। তাদের জন্যই আমরা জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে সক্ষম হই।
দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি খেলাধুলা-সংস্কৃতি চর্চাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আনসার বাহিনী যথেষ্ট পারদর্শিতা দেখিয়েছে উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, তারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশে-বিদেশে সুনাম অর্জন করেছে।
আনসার বাহিনীর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতীয় সংকটকালে ও জরুরি মুহূর্তে আপনারা দক্ষতা ও সফলতার পরিচয় দিয়েছেন। প্রতিবছর জাতীয়, সামাজিক ও ধর্মীয় উৎসবে ব্যাটালিয়ন ও অঙ্গীভূত আনসার সদস্যরা নিরাপত্তা দিতে এবং জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস প্রতিরোধে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে সবসময় সজাগ থাকতে হবে।
এসময় আনসার বাহিনীর উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচির কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি আনসার সদস্যদের ঝুঁকিভাতা চালু ও বাড়ানোর কথাও তুলে ধরেন। বলেন আনসার-ভিডিপি ব্যাংক চালুর কথাও।
দেশকে এগিয়ে নেতে সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, অর্জন ধরে রাখতে সবাইকে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। আমরা ইতোমধ্যে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। এসবের সুফল ভোগ করবে মানুষ। দারিদ্র্য দূরীকরণে বয়স্ক-বিধবা ভাতাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছি। কোনো পতিত জমি যেন না থাকে সেজন্য ‘একটি বাড়ি একটি খামার’কে ‘আমার বাড়ি আমার খামার’ প্রকল্পে রূপ দিয়ে বাস্তবায়ন করছি।
দেশের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে এবং আর্থসামাজিক উন্নতির লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে জানিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, আমরা উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই।
প্রধানমন্ত্রী সমাবেশে আনসার সদস্যদের মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। এছাড়া তিনি বেশকিছু ভৌত কাঠামোর উদ্বোধন করেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন