হঠাৎ করেই গণমাধ্যমে খবর আসে- জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের আত্মগোপন নিয়ে। গত শনিবার রাতে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) থেকে ছাড়া পেয়ে বারিধারার প্রেসিডেন্ট পার্কের বাসভবনে ফেরেননি সাবেক এই প্রেসিডেন্ট। এ নিয়ে গুঞ্জন যখন তুঙ্গে তখন দলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে- এরশাদ অসুস্থ নন। বিশ্রামে আছেন তিনি। তাঁকে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নেয়ার প্রস্তুতি রয়েছে।
কিন্তু কোথায় বিশ্রামে আছেন সেটি জানানো হয়নি। গত দুদিন ধরে গণমাধ্যমের সামনে তার অনুপস্থিতি এমন গুঞ্জনকে আরও উস্কে দিয়েছে।
দলটির শীর্ষ নেতারা বলছেন, ৮৮ বছর বয়সী এরশাদ অসুস্থ নন। তবে তিনি বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় ভুগছেন। ভোটের আগে দলীয় কর্মীদের মনোবল ধরে রাখতে এরশাদের অসুস্থতার খবর গোপন রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে মহুর্মূহু মত বদলে একটা বিতর্কিত অবস্থান আছে এরশাদের। গেল কয়েক মাস ধরে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেয়ার কথা বলে আসলেও আগামী ৩০ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে এরশাদের অবস্থান এখনও স্পষ্ট নয়। এরশাদের জাপা আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট করে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিলেও শেষ পর্যন্ত এরশাদ কী করবেন তা নিয়েও রয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনে সংশয়।
২০০১ সালে বিএনপির সঙ্গে জোট করেও ভোটের আগে চার দল ছাড়েন এরশাদ। আবার ২০০৬ সালে বিএনপির সঙ্গে আলাপ চালিয়েও ভোটের আগে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটে যোগ দেন। ওই বছর তিন দিন আত্মগোপনে থাকার পর ১৮ ডিসেম্বর পল্টনে আওয়ামী লীগের মহাসমাবেশে যোগ দিয়ে রাজনীতিতে আলোচনার জন্ম দেন সাবেক এই প্রেসিডেন্ট।
সবশেষ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগেও কম নাটকীয়তার জন্ম দেননি এরশাদ। ২০১৩ সালের ২৫ অক্টোবর মহাজোট ছেড়ে নির্বাচনকালীন সরকারে যোগ না দেয়ার ঘোষণা দেন। কিন্তু পরের মাসেই নির্বাচনকালীন সরকারে যোগ দিয়ে ভোটে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
এর ১৫ দিনের মাথায়ই মত বদলে নির্বাচনকালীন সরকার থেকে দলীয় মন্ত্রীদের পদত্যাগ করে ভোট বর্জনের নির্দেশ দেন। জাপার একাংশ রওশন এরশাদের নেতৃত্বে বিএনপিবিহীন নির্বাচনে অংশ নেয়। ৫ জানুয়ারির নির্বাচন শেষে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত সিএমএইচে ‘চিকিৎসাধীন’ ছিলেন এরশাদ। হাসপাতাল থেকে এসে সংসদ সদস্যের শপথ নেন এবং বাসায় ফেরেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হয়ে।
অতএব, ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় একাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে আবারও রাজনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিতে পারেন এরশাদ। হতে পারে তারই অংশ হিসেবে জাপা প্রধানের এই ‘আত্মগোপন নীতি’।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন