ভিডিও >> সত্যের পক্ষে লড়াই করে যাব প্রয়োজনে ইসলামের জন্য জীবন দিব: মাহমুদুর রহমান
22 Jul, 2018
কুষ্টিয়ায় আদালত এলাকায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীদের হামলায় মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন ‘আমার দেশ’ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।আদালত এলাকায় দীর্ঘ সময় তাকে ঘিরে রেখেছিল ছাত্রলীগ ও যুবলীগ কর্মীরা।
সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ কুষ্টিয়ার সদস্য সচিব এডভোকেট শামীম উল হাসান অপু আমাদের নতুন সময়কে জানান, ‘মানহানির একটি মামলায় জামিন নিতে রোববার কুষ্টিয়া সদর জুডিশিয়াল ম্যাজেস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করেন মাহমুদুর রহমান। উভয় পক্ষের শুনানির পর বিচারক এম এম মোর্শেদে জামিন আদেশ দেন।’
এ সময় মাহমুদুর রহমান সাথে থাকা বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) মহাসচিব আব্দুল্লাহ আমাদের নতুন সময়কে বলেন, ‘আদালতে মাহমুদুর রহমানকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। পরে আদালতের ওসি এসে বললো যে এভাবে বসে থাকলে তো হবে না। চলেন আমরা গাড়িতে তুলে দেই আপনারা চলে যান। আমরা বললাম কি গাড়িতে তুলে দিবেন, আমাদের গাড়িতো অবরুদদ্ধ করে রেখেছে। আমাদের গাড়ির চাবি নিয়ে গেছে। পরে পুলিশ জানালো গাড়ি একটা আছে আপনারা আসেন। পরে তারা একটা প্রাইভেটকারে তুলে দেয়। সে সময় বৃষ্টি হওয়ার কারণে ছাত্রলীগ দোকানপাটে গিয়ে ঢুকে ছিল। গাড়ি চলার সাথে সাথে তারা হিংস্র হায়েনার মতো গাড়ির উপর হামলে পড়ে। বাঁশ, লাঠি, দা, ইট নিয়ে হামলা করে। ইট দিয়ে মাহমুদুর রহমানের মাথা থেতলে দেয়। পরে তিনি রক্তাক্ত হয়ে পড়েন। কুষ্টিয়া চিকিৎসা করানো নিরাপদ মনে না করায় যশোর নিয়ে যাচ্ছি, সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সন্ধ্যা সন্ধা ৭টা ২০ মিনিটে ফ্লাইটে তাকে ঢাকা নিয়ে ইউনাইটেড হাসপাতালে নেয়া হবে।’
দুপুর ১টার দিকে তিনি সঙ্গীদের সাথে আদালত থেকে বের হওয়ার মুহূর্তে আদালত ভবনের প্রতিটি প্রবেশ দ্বারে ছাত্রীলীগের নেতাকর্মীরা আটকে দেয়। এসময় তিনি পুনরায় আদালতের এজলাসে আশ্রয় নেন। দীর্ঘ সময় একই পরিবেশ বিরাজ করায় তিনি আদালতকে বিষয়টি জানান।পরে লিখিতভাবে পুলিশ প্রেটেকশনের জন্য তিনি আবেদন করেন। এসময় আদালতে মাহমুদুর রহমানের আইনজীবী কুষ্টিয়া ব্যারের সিনিয়র আইনজীবি প্রিন্সিপাল আমিরুল ইসলাম, বিএফইউজে মহাসচিব এম আব্দুল্লাহ, কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমীসহ অনেকে তার সাথে আছেন। পরে তিনি আদালত এলাকা থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করলে তার ওপর হামলা চালানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তার ওপর ব্যাপকভাবে ইট-পাথর বর্ষণ করা হয়। এতে তিনি মারাত্মকভাবে আহত হন।যতদিন বেঁচে থাকবো সত্যের পক্ষে লড়াই করে যাবো আহত হওয়ার আগে মাহমুদুর রহমান আমাদের নতুন সময়ের এ প্রতিবেদককে জানান, ‘আমি এই অভিজ্ঞতায় মোটেও অবাক হইনি। কারণ দিল্লির প্রতিনিধিত্বকারী বর্তমান দখলদার সরকারের আমলে দেশে এরকমই হওয়ার কথা। বাংলাদেশের জনগণের কোনো অধিকার নেই, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নেই, এখানে এক ধরনের জঙ্গলের আইন চলছে। যার সর্বোচ্চ প্রমাণ আমরা কুষ্টিয়ায় পেলাম। এরকম দৃশ্য আজ পর্যন্ত কুষ্টিয়ায় কেউ দেখেনি। কারণ, আমার এখানের আইনজীবী যারা আছেন, তারা প্রত্যেকেই বললেন, এটি তাদের নতুন অজ্ঞিতা। এখানে ছাত্রলীগের ক্যাডারার মহড়া দিচ্ছে এবং তাদের দাবি কি তাও তারা বলছে না। একটাই বুঝতে পারছি, তারা আমাকে এখান থেকে বের হতে দিবে না। আমি এখানে এসেছি একটি মানহানি মামলার হাজিরা দিতে।
আপনারা জানেন, মানহানি মামলায় জামিন দিতে হয় এটাই তার আইন। এই আইন ভেঙ্গে আমার জামিন আটকানোর কোনো সুযোগ নেই। ম্যাজিস্ট্রেট সাহেব আমাকে জামিন দিয়েছেন। কিন্তু জামিন দেওয়ার পর থেকে আমাকে এখান থেকে বের হতে দিচ্ছে না। এর পেছনে পুরো ইন্দন হচ্ছে এখানকার যে ওসি ভদ্রলোক এবং এসপির। ওসি, এসপি তারা দেখেও না দেখার ভান করছেন।
এমনকি আমাদের সামনে ম্যাজিস্ট্রেট সাহেব ওসিকে ডাকলেন, তিনি ম্যাজিস্ট্রেটের ডাকে সাড়া না দিয়ে সরাসরি ম্যাজিস্ট্রেটকে বলেছেন তিনি আসতে পারবেন না। বাংলাদেশের আইনের শাসন কোথায় গিয়েছে এবং পুলিশের উদ্ধত্ত কোন পর্যায় গিয়েছে। যে ম্যাজিস্ট্রেট সাহেবের আহ্বানকে উপেক্ষা করে একজন ওসি বলেছিলেন আসতে পারবে না। আমি বন্ধি আছি তাতে কিছু যায় আসে না। আপনারা যানেন আমি ৫ বছর বন্ধি অবস্থায় আছি। আমার নামে বিভিন্ন জেলায় ১২৫টি মামলা আছে। আমি ৩৮ দিন রিমান্ডে ছিলাম, সেখানে আমাকে পুলিশ মেরে ফেলতে চেয়েছিল। আমার হায়াত আছে বিদায় আপনাদের মাঝ আবার আসতে পেরেছি। যতদিন বেছে আছি তত দিন অন্যায়ের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে লড়াই করে যাব। এখান থেকে যাতে বের হতে পারি তার জন্য আপনারা আমাদের জন্য দোয়া করবেন। আর জীবিত অবস্থায় না বের হতে পারলে মাগফেরাতের জন্য দোয়া করবেন। আর সত্যের পক্ষের লড়াইয়ের পুরস্কার আমরা যেন আল্লাহর দরবারে গিয়ে পাই।’আস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন