লন্ডনে অবস্থানরত একাধিক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচার না করার বিষয়ে আদালতের আদেশ রয়েছে উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘এক্ষেত্রে একটি বাধা আছে, হাইকোর্টের একটি অর্ডার আছে, সে অর্ডার যদি অমান্য করা হয় নিশ্চয়ই সেটা আদালত অবমাননা করা হবে। সেক্ষেত্রে আমি সবাইকে হাইকোর্টের এ আদেশটি পালন করার অনুরোধ করবো।’
তিনি বলেন, তারেক রহমানের বক্তব্য আমার মনে হয় না সরকারি দিক থেকে প্রচার করা হচ্ছে। তারেক রহমান বাংলাদেশের নাগরিকত্ব অস্বীকার করেছেন বলেও দাবি করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
আগামী ২৮ এপ্রিল জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
আইনমন্ত্রী বলেন, এই মুহূর্তে তিনি (তারেক রহমান) বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ডিনাই (অস্বীকার) করেছেন। তবে ভবিষ্যতে তিনি যদি বাংলাদেশের নাগরিক হতে চান, তাহলে পারবেন না, এটা তো না।
তিনি বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত তার হাতে পাসপোর্ট ছিল ততক্ষণ পর্যন্ত তার আইডেন্টিটি ছিল তিনি বাংলাদেশের একজন নাগরিক। যখন তিনি স্বেচ্ছায় বলছেন, আমি আমার পাসপোর্ট স্যারেন্ডার করে দিলাম এবং পাসপোর্ট স্যারেন্ডার করে দেয়ার পর কি বলা যাবে তিনি বাংলাদেশের নাগরিকত্ব রেখে দিয়েছেন?
পাসপোর্টের সাথে নাগরিকত্বের সম্পর্ক কি- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশে যদি আপনি থাকেন এবং আপনার যদি বাংলাদেশের পাসপোর্ট না থাকে তাহলে কিন্তু আপনার নাগরিকত্ব এফেক্টেড হয় না। দেশের বাইরে যাওয়ার জন্য এটা প্রয়োজন হয়। বাইরে গেলে আপনি যে বাংলাদেশের নাগরিক এ পাসপোর্টই হলো সেটার আইডেন্টিটি (পরিচয়পত্র)।
'যেই বিতর্ক হচ্ছে সেখান থেকে আমি যেটা জানতে পেরেছি, সেটা হচ্ছে, একজন দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি তারেক রহমান, তিনি ইউনাইটেড কিংডমে রাজনৈতিক আশ্রয় গ্রহণ করার জন্য তার পাসপোর্ট স্যারেন্ডার (জমা) করেছেন। তার মানে তিনি বলছেন, আপাতত আমি বাংলাদেশের নাগরিক থাকতে চাই না, আমি এই পাসপোর্টটা স্যারেন্ডার করলাম, আপনারা আমাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিন। এটাই কিন্তু আমি জানতে পেরেছি, বলেন তিনি।
আইনমন্ত্রী বলেন, তিনি যখন গিয়েছিলেন, মুচলেকা দিয়ে গিয়েছিলেন। তারপর তিনি তার পাসপোর্ট স্যারেন্ডার করেছেন। তার মানে তিনি স্বেচ্ছায় বলছেন, আমি ওখন বাংলাদেশের নাগরিক থাকতে চাই না। আমাকে এখানে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়া হোক। তিনি ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছেন, তারা তাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়েছে কি না সে ব্যাপারে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। যদি দিয়ে থাকে তাহলে ভালো কথা। না দিয়ে থাকলে সেটা আমি জানি না।
তিনি বলেন, আমাদের ভূখণ্ডে তিনি অপরাধ করেছেন। তখন তিনি বাংলাদেশের নাগরিক ছিলেন। এসময় তারেক রহমান বাংলাদেশের নাগরিক না হলেও তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা যাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচার না করার বিষয়ে আদালতের আদেশ থাকলেও কিছু গণমাধ্যম কিভাবে তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচার করছে সে বিষয়ে জানতে চান একজন সাংবাদিক। জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, তারেক রহমানের যে বক্তব্য প্রচার করা হচ্ছে, এটা কিভাবে প্রচার করা হচ্ছে সেটা হচ্ছে প্রথম ব্যাপার। এক্ষেত্রে যে বাধা আছে, হাইকোর্টের একটি অর্ডার রয়েছে, সে অর্ডার যদি অমান্য করা হয় নিশ্চয়ই সেটা আদালত অবমাননা করা হবে। সেক্ষেত্রে আমি সবাইকে হাইকোর্টের এ আদেশটি পালন করার অনুরোধ করবো।
তিনি আরও বলেন, তার বক্তব্য আমার মনে হয় না সরকারি দিক থেকে প্রচার করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ব্যক্তি মালিকানাধীন ইলেক্ট্রনিকস মিডিয়ায় যারা প্রচার করছে তাদেরকে আমি এটুকুই বলবো, এখানে হাইকোর্টের একটি আদেশ আছে। সেটা প্রতিফলন করা সকল বাংলাদেশি নাগরিকের কর্তব্য। আমি সেটা প্রতিপালন করার অনুরোধ করছি।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন