সর্বশেষ কোটা বিরোধী আন্দোলনে বিতর্কিত ভূমিকা পালন করা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন ছাত্রলীগের মেয়াদোর্ত্তীণ কমিটির সভাপতি এম সাইফুর রহমান সোহাগের ওপর গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। একই সঙ্গে ২৯ তম সম্মেলন ঠেকাতে কোনো ধরণের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন কিনা বা আন্দোলন ঠেকাতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে বারবার সাংগঠনিকভাবে ভূল সিদ্ধান্ত নেয়ার নেপথ্যে অন্য কারো ইন্ধন ছিল কিনা, এসব বিষয় নিয়ে সরকারি একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে বলে ভোরের পাতা নিশ্চিত হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সাইফুর রহমান সোহাগ কোটা বিরোধী আন্দোলনের শুরুতে একদম নিশ্চুপ ছিলেন। এমনকি যে রাতে ভিসির বাসভবনে গুজবের ওপর ভিত্তি করে তাণ্ডব চালানো হয়েছিল, সেখানেও তিনি ছুটে যাননি সময়মতো। এমনকি তার অনুসারীরাও যাননি ভিসিকে উদ্ধারে। সেদিক থেকে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন সেই রাতে সক্রিয় ছিলেন। পরদিন ছাত্রলীগের কয়েকজন পদধারী নেতা সাইফুর রহমান সোহাগের বিতর্কিত ভূমিকার কারণে প্রশ্ন তুলেন। এমনকি সর্বশেষ রোববার মধুর ক্যান্টিনে
ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ যুক্তরাজ্যে অবস্থানকারী বিএনপির সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছ থেকে কত টাকা খেয়েছেন তা সরাসরি তার কাছে জানতে চেয়েছেন সংগঠনটিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার একটি হল কমিটির সাবেক এক নেতা।
সোহাগের কাছে সরাসরি প্রশ্ন রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বুলবুল। বলেন, ‘ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কোটা সংস্কার নিয়ে পোস্ট দিচ্ছে? আন্দোলন করছে? আপনি নিশ্চুপ কেন? তারেক রহমান আপনাকে কত টাকা দিয়েছে?’।
এরপর থেকেই বিষয়টি নিয়ে গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে সাইফুর রহমান সোহাগের সঙ্গে তারেক রহমানের কোনো ধরণের যোগসাজশ রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সংগঠনের সভাপতির বিতর্কিত ভূমিকার কারণে অনেকটা কোণঠাসা হয়ে পড়েছে ছাত্রলীগ। তাই তার একক এবং ভুল সিদ্ধান্তগুলো পুর্নবিবেচনার কথা বলেছেন আওয়ামী লীগের একজন শীর্ষ নেতা যিনি ছাত্রলীগেরও শীর্ষ পদে ছিলেন। তিনি আরো বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতারা চরমভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। পরিস্থিতি মোকাবিলার নামে সুফিয়া কামাল হলের সভাপতি ইফফাত জাহান এশাকে প্রথমে বহিষ্কার এবং পরবর্তীতে ফুলের মালা পড়িয়ে বরণ করে নেয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সাথে নিয়ে সরাসরি ঘটনাস্থলে যেতে পারতো। সেটাও কেন সাইফুর রহমান সোহাগ করেননি, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। পরবর্তীতে নামমাত্র তদন্ত কমিটির মাধ্যমে ২৪ জনকে বহিষ্কার করা হয়। কোনো ধরণের গঠনতন্ত্র না মেনে তাদের বহিষ্কারাদেশ নিয়েও যৌক্তিক কোনো ব্যাখা দাঁড় করাতে পারছেন না সাইফুর রহমান সোহাগ।
এসব অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ভোরের পাতাকে বলেন, আমি কোটা বিরোধী আন্দোলনে শতভাগ সফল হয়েছি। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দিনে ২৪ ঘন্টাই কথা বলি। তার সঙ্গে কোনো ধরণের যোগাযোগ নেই। সুফিয়া কামাল হল ইস্যুতে তিনি বলেন, তদন্ত কমিটির পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কাছে জমা দিয়েছি। উনি যে সিদ্ধান্ত দিবেন তাই বাস্তবায়ন করা হবে।
ভোরেরপাতা
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন