বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, দেশে বর্তমানে গণতন্ত্র নেই, স্বৈরাশাসক রয়েছে সেটা দুশ্চিন্তার বিষয়। কিন্তু আমি বেশি দুশ্চিন্তা করি এই জন্য যে, বর্তমান স্বৈরাচারী সরকার গণতন্ত্রের ভান ধরেছে আর সেটা ভীমরতির প্রতীক।মঙ্গলবার (২৪ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে ‘বর্তমান প্রেক্ষাপট: মানবাধিকার আইনের শাসন ও গণতন্ত্র’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার পরিষদ।তিনি বলেন, বর্তমান দেশে যে অবস্থা এ অবস্থা থেকে যদি গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে না পারি তাহলে মুক্তিযুদ্ধাদেরকে অপমান করা হবে এবং আমরা অপমান করছি। যদি স্বৈরশাসকের ধারা অব্যাহত থাকে তাহলে যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন এবং কবরে চলে গেছেন তারা কি কবর থেকে প্রশ্ন করবে না এই জন্য কি আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম, দেশের এই অবস্থার সৃষ্টি করতে কি আমরা যুদ্ধ করেছিলাম? আমি বলব বাংলাদেশের বর্তমান যে পরিস্থিতি তা স্বৈরশাসনের চেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে।সৈরাশাসক এর চেয়ে খারাপ অবস্থা কারণ হলো ভান করা আমরা স্বৈরশাসক হয়ে গণতন্ত্রের ভান করি সেটা কিন্তু স্বৈরশাসকের চেয়ে বেশি খারাপ। আমরা কিন্তু বর্তমানে দেশে তাই করছি।মঈন খান বলেন, আমরা সারা বিশ্বকে বলে বেড়াচ্ছি বাংলাদেশে এখন বিশাল গণতন্ত্র রয়েছে এমন বিশাল গণতন্ত্র যে সংসদে ৩ শত আসনের মধ্যে ১৫৪ আসন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয় এবং বাকি ১৪৬ আসনে ৫ শতাংশ ভোট পড়ে না।
ভারত আমাদের বন্ধুদেশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, পৃথিবীর দুইশত দেশের মধ্যে ভারত আমাদের সবচেয়ে বন্ধু দেশ কারণ তারা মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদেরকে সাহায্য করেছিল। তার জন্য তাদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞ। কিন্তু তারা সামান্য ভুলের কারণে এ বন্ধুত্ব হারাতে চায়। আমরা তা চাই না। তাদের চিন্তা করতে হবে এ বন্ধুত্ব কেন হারাচ্ছে। কারণ তারা দুটি দেশের মধ্যে কেন বন্ধুত্ব করছে? জনগণের সাথে কেন করছে না? আমার বিশ্বাস দুটি দেশের মধ্যে বন্ধুত্ব না করে দু'দেশের জনগণের সাথে বন্ধুত্ব করলে সে বন্ধুত্ব আজীবন টিকবে।বর্তমান সরকারের পায়ের নিচে মাটি নেই মন্তব্য করে বিএনপির এ নেতা বলেন, বর্তমান সরকার এত বুদ্ধিমান যে তারা নিজেদেরকে সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী মনে করেন। কিন্তু তারা জানে না তাদের পায়ের নিচে মাটি নেই। যারা এত অন্যায় অত্যাচার করে তাদের পায়ের নিচে মাটি থাকতে পারে না এবং কেউ কেউ তাদেরকে বুদ্ধিমান মনে করে তাহলে আমার প্রশ্ন হল তারা এত বুদ্ধিমান কিন্তু নাগরিকত্ব ও ট্রাভেল ডকুমেন্ট এর মধ্যে সামান্য ব্যবধান কি তারা বুঝতে পারে না, তাহলে তারা সরকার চালাবে কিভাবে? আমি বলব না সেটা তাদের বেকুবী। তার চেয়েও বেশি।
দেশের আইন পরিস্থিতি সম্পর্ক নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, গাজীপুর খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন হবে সেখানে সরকার এমপি মন্ত্রী পাঠাবে সেটা আইন। আমাদের দেশে কেয়ারটেকার ছিল না। তারপর কেয়ারটেকার হলো আবার চলে গেল। আসা-যাওয়ার মধ্যে তো আইন। যারা ক্ষমতায় আছে তারা নিজেদের মতো করে সব কিছু বদলাতে পারে, এটাই আইন। বর্তমানে আওয়ামী লীগের যিনি আছেন তিনি এক ব্যক্তির শাসক তিনি যেটা করবেন সেটাই আইন সমস্ত প্রশংসা তার প্রাপ্য আর আমরা তার চামচামি করে বেড়াবো এটাই আইন।সরকার এখন ফাঁপরের মধ্যে আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া কি অসুস্থ নাকি চিন্তায় আছেন তার জন্য সরকার ফাঁপরে আছে।তিনি বলেন, বেগম জিয়াকে ভিতরে রাখলেও বিপদ বাইরে রাখলেও বিপথ তাকে হসপিটালের নিলেও বিপদ কারাগারে নিলেও বিদেশে পাঠাতে চাইলেও বিপদ। এজন্য সরকার ফাঁপরে আছে।
তিনি বলেন, আইনি প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা যাবে না। তাকে মুক্ত করতে হলে কঠিন আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। আর আন্দোলন আপনারা এত সহজে করতে পারবেন না। যদি নির্বাচনের তিন মাস আগে আন্দোলন করতে চান তাহলে কি কঠিন আন্দোলন করতে পারবেন? পারবেন না। কারণ তার তিন মাস পরে তো নির্বাচন সরকার যদি নির্বাচন দেয় আর তখন আপনারা নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকবেন আন্দোলন করবেন কিভাবে? আন্দোলন করতে হলে আগে থেকেই করতে হয়।আয়োজক কমিটির চেয়ারম্যান কৃষিবিদ প্রফেসর ড. মো. রফিকুল ইসলাম সভাপতিত্বে মহাসচিব অধ্যাপক আ স ম মোস্তফা কামালের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ, ঢাকা মহানগর সভাপতি ফরিদ উদ্দিন, কৃষিবিদ সুমন, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন