বাংলাদেশে ভারত গণতন্ত্র চাইলে নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যা খুশি করতে পারবেন না বলে মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, তাহলে আওয়ামী লীগের আয়ুষ্কালও আর বেশি দিন নেই।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে রোববার সন্ধ্যায় এক প্রতিবাদ সভায় গয়েশ্বর এসব কথা বলেন।
ঢাকাস্থ ফেনী জেলা জাতীয়তাবাদী পরিষদ এ প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে।
গয়েশ্বর বলেন, ভারত যদি বাংলাদেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ না করে, তাহলে আওয়ামী লীগের আয়ুষ্কাল বেশি দিন নাই। একই সঙ্গে বাংলাদেশে গণতন্ত্র দেখার জন্য তারা (ভারত) যদি অপেক্ষা করে, তাহলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী নির্বাচনে যা খুশি তাই করতে পারবেন না।
খালেদা জিয়াকে কারাগারে নেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সরকার এটাকে টেস্ট কেস হিসেবে নিয়েছিল। খালেদা জিয়াকে জেলে দিয়ে, জামিন না দিয়ে কিছুদিন আটকে রাখার পর বিএনপির অবস্থাটা কী হয় দেখার জন্য। তারা ভেবেছিল- হয়তো বিএনপির কিছু লোক তারেক রহমানের নেতৃত্ব মানবে না। এরকম একটা ছক এঁকেছিল বলে আমার মনে হয়। কিন্তু তারেক রহমান দায়িত্ব নেয়ার পর বিএনপি ইউনাইটেড (ঐক্যবদ্ধ)।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এ নেতা বলেন, ‘তারেক রহমানের নেতৃত্বে দলে কোনো রকমের অসামঞ্জস্যতা নাই। উনার ভাবনা আমাদের ভাবনা একই। সবাই (নেতাকর্মীরা) এখন নিজেদের চাওয়া-পাওয়ার বিষয়টা বিসর্জন দিয়েছে। তারা একটা চাওয়াকে প্রতিষ্ঠিত করতে চান, সেটা হলো- গণতন্ত্রের মুক্তির পূর্বশর্ত খালেদা জিয়ার মুক্তি।’
এসময় তিনি বলেন, রাজনীতির দৃষ্টিতে প্রথম প্রতিবাদ, তারপর প্রতিরোধ, সবশেষ প্রতিশোধ। এখন কোন পর্বটা কখন শুরু হবে সেটা অপেক্ষা ও ভাববার ব্যাপার। তবে এটা যে বিনা চ্যালেঞ্জে যাবে না এ কথাটা ভাবতে হবে।
খালেদা জিয়ার সঙ্গে সরকার মশকরা করছে মন্তব্য করে গয়েশ্বর বলেন, ‘জেলখানায় গেলে আমরা দেখি যিনি যা প্রাপ্য না তিনি তা পান আর যিনি যা প্রাপ্য তাও পান না। সরকারের রাজনৈতিক বিবেচনায় সেখানকার সিদ্ধান্ত হয়। তাহলে খালেদা জিয়ার যে মর্যাদা সে অনুসারে সরকার তার সঙ্গে মশকরা করছে। মশকার বললে ভুল হবে, এটা তাকে মানসিকভাবে নির্যাতন।’
তিনি বলেন, ‘মইন ইউ আহমেদ এবং ফখরুদ্দীন যা পারেনি শেখ হাসিনা তা পারার জন্য চেষ্টা করছেন। আমি জেলখানায় থাকতে শুনেছি- খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতেই হবে। অর্থাৎ উনাকে সুরেন্দ্র কুমার সিনহার (সাবেক প্রধান বিচারপতি) মতো বিদেশ পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছিল।’
বিএনপির নেতাকর্মী জেগে গেলে সরকার খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে বাধ্য মন্তব্য করে দলের জ্যেষ্ঠ এ নেতা বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে আমরা যদি বাড়িতে নিরাপদে থাকতে চাই, তাহলে তাকে মুক্ত করা কষ্ট। আমরা যদি জেগে যাই, খালেদা জিয়াকে ছাড়তে বাধ্য শেখ হাসিনা।’
আয়োজক সংগঠনের সদস্য সচিব নজরুল ইসলাম জুয়েলের সঞ্চালনায় ও আহ্বায়ক নুরুল আমিন ভূঁইয়া বাদশার সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, বরকতউল্লাহ বুলু, যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সহ-কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক ও খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি ওয়াদুদ ভূঁইয়া প্রমুখ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন