রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন হিসেবে সংবিধানকে সমুন্নত রাখা, নির্বাহী বিভাগের প্রভাবমুক্ত নির্বাচন কমিশন, দুই মেয়াদের বেশি এক ব্যক্তির প্রধানমন্ত্রী না হওয়া, সংবিধান সংশোধনের জন্য কমিটি গঠনসহ সাত দফা প্রস্তাবের ভিত্তিতে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছে গণফোরাম।
শনিবার বেলা ৩টায় রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ও ম শফিক উল্লাহ লিখিত সাত দফা পড়ে শোনান। এ সময় তার পাশে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গণফোরামের ৭ দফার ভিত্তিতে সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তাদের ঐক্য হতে পারে। বৃহত্তর পরিসরে একটি জাতীয় ঐক্যের জন্য গণফোরামের পক্ষ থেকে সাত দফা প্রস্তাব তোলা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে সাত দফা দাবি সম্পর্কে বলা হয়, রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন হিসেবে সংবিধানকে সমুন্নত রেখে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে হবে। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ ও নিয়োগের ক্ষমতা, সেনাবাহিনী ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা দেওয়া ছাড়াও কমিশন নির্বাহী বিভাগের প্রভাবমুক্ত রাখতে হবে। এক ব্যক্তি দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী পদে থাকতে পারবেন না। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ, নির্বাহী বিভাগের প্রভাবমুক্ত সকল রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে বর্তমান সংবিধানের সময়োপযোগী সংশোধনের জন্য কমিশন গঠন করতে হবে এবং কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী সংবিধান সংশোধন করতে হবে। শুধুমাত্র নির্বাচনকালীন সময় ছাড়াও সব সময়ের জন্য জনগণের পক্ষপাতহীন অধিকারসমূহ নিশ্চিতকরতে জনপ্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, ভূমি প্রশাসন, স্থানীয় সরকার, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতসহ রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছ নিয়োগ দিতে হবে। রাষ্ট্রের আর্থসামাজিক উন্নয়ন, জনগণের সচ্ছলতা ও সামাজিক নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য কৃষিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে। গ্রাম ও শহরের দরিদ্র মানুষের জন্য সেনা সদস্যদের মতো রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
এ ছাড়া খনিজ সম্পদ ও প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণে জাতীয় সক্ষমতা অর্জন ও খনিজ ও জাতীয় সম্পদ লুণ্ঠনে দেশি বিদেশি চক্রান্ত রোধ করতে হবে। প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে পণ্যের আদান-প্রদান এবং বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে উপ আঞ্চলিক জোট গঠন এবং মিয়ানমারের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তন ও পুনর্বাসনের লক্ষ্যে জোর কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রাখা।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন, কেন্দ্রীয় নেতা আলতাফ হোসেন, জগলুল হায়দার, নৃপেন ঘোষ ও মোস্তাক আহমেদ।
শীর্ষনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন