ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুফিয়া কামাল হলের সাবেক সভাপতি খালেদা হোসাইন মুন বলেছেন, তিনি জানেনই না কেন তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
সুফিয়া কামাল হলে গত ১০ এপ্রিল ছাত্রলীগ নেত্রী এশাকে লাঞ্ছনার ঘটনায় তদন্ত করে ছাত্রলীগ ২৪ জনকে সংগঠন থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করে। এদের মধ্যে খালেদা হোসাইন মুনও রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছয়টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
মুন দাবি করেন, তাকে কেন বহিষ্কার করা হয়েছে, তার কিছুই তিনি জানেন না।
এমনকি ছাত্রলীগের গঠিত তদন্ত কমিটি তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেনি বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
যোগাযোগ না করেই সেই তদন্ত কমিটি কিভাবে তাকে বহিষ্কার করল, তার জবাব তিনি ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে চেয়েছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে ছাত্রলীগের এই কেন্দ্রীয় নেত্রী বলেন, ‘আমি এক বছর ধরে হলে অবস্থান করি না। ঘটনার দিনও ছিলাম না। মালিবাগ খালার বাসায় ছিলাম। তাহলে আমাকে কিভাবে অভিযুক্ত করা হলো?’
সেই রাতের ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘১০ এপ্রিল রাতে আমি মালিবাগ খালার বাসায় ছিলাম। ঘটনার সময় ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ফোন দিয়ে বলেন- মুন তুমি কোথায়? আমি বলেছি আমি মালিবাগ। তিনি ঘটনা জানানোর পর আমিই সভাপতিকে বলেছি- আমার জন্য একটা বাইক পাঠান। আমি হলে যেতে চাই। কিন্তু, আমার জন্য কিছুই পাঠানো হয়নি। গভীর রাতে আমিও একা বের হইনি।’
নির্যাতিতা ছাত্রলীগ নেত্রী ইফফাত জাহান এশা তার অনুসারি দাবি করে মুন বলেন, ‘আমি ২০১৩ সালে হলে উঠি। ২০১৪ সালে এশা হলে ওঠে। এশার মাধ্যমেই তার পরের ব্যাচের সকলে হলে ওঠে। যার রগ কেটে যাওয়ার কথা বলা হচ্ছে, সেই মোর্শেদাও এশার হাত ধরে আমার মাধ্যমে হলে ওঠে। মোর্শেদা এক সময় আমার অনুসারি ছিল। কিন্তু, থাএই ন্যাক্কারজনক ঘটনার জন্য আমি তার বিচার চাই।’
এ সময় তিনি বলেন, ‘তদন্ত কমিটির উচিত, সেই দিনের ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখে ব্যবস্থা নেয়া। তাছাড়া মুনীরা সুলতানা নামে একজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অথচ সে ঘটনার আগের দিন ভারতে গেছে। তাহলে তাকে কিভাবে বহিষ্কার করা হলো? তার মানে তদন্ত কমিটি অনুমানের ভিত্তিতে তদন্ত করেছে।’
মুন বলেন, ‘বহিষ্কার হওয়ার কারণে আমার সম্মানহানি হয়েছে। আমি এই সম্মান ফেরত চাই।’
তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন এবং পুনঃতদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের শাস্তি দাবি করেন।
এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক যে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। আমি ছাড়াও তিনজন তদন্ত কমিটির সদস্য ছিলেন। তারা মুনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে কিনা জানতে হবে।’
তদন্ত কমিটির আরেক সদস্য ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নুসরাত জাহান নুপুর পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘আমি মুনের সঙ্গে যোগাযোগ করিনি। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ আল হাসান তাকে ফোন দিয়েছিলেন। কিন্তু, সেটি বন্ধ ছিল।’
এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ আল হাসানের ফোনে কয়েকবার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে এসএমএস করলেও তিনি কোনো জবাব দেননি।
মুনের অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত কমিটি যে রিপোর্ট দিয়েছে, তার ভিত্তিতে ২৪ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন