১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী এবং পাকিস্তানি হানাদারদের সহযোগী জামায়াতে ইসলামী অাগামী ২৬ মার্চ (সোমবার) স্বাধীনতা দিবসকে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করতে দলের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির আ ন ম শামসুল ইসলাম এ আহ্বান জানান। এতে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের ’জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
জামায়াতে ইসলামীর প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামী ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। আমাদের জাতীয় জীবনে এ দিনের তাৎপর্য ও গুরুত্ব অপরিসীম। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা ও লাখ জনতার সীমাহীন ত্যাগ এবং কুরবানীর বিনিময়ে আমরা মহান স্বাধীনতা অর্জন করেছি। ক্ষুধা, দারিদ্র ও বেকারত্ব মুক্ত কল্যাণমূলক একটি দেশ প্রতিষ্ঠার জন্য এ দেশের সাহসী সন্তানেরা যে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল, তারই ধারাবাহিকতায় বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। এ দেশের মানুষের স্বপ্ন ছিল স্বাধীনতার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক অধিকার, ভাতের অধিকার, ভোটের অধিকার ও বেঁচে থাকার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। জনগণের জানমাল, ইজ্জত-আব্রুর নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় স্বাধীনতার ৪৭ বছর অতিবাহিত হওয়ার পরও জনগণের সে স্বপ্ন পূরণ হয়নি। সরকার জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। দেশে চলছে সীমাহীন দুর্নীতি, সন্ত্রাস, লুটপাট, হত্যা, ধর্ষণ, গুম, অপহরণ ও নৈরাজ্য।
এতে আরো বলা হয়, সরকার জাতীয় ঐক্য ধ্বংস করে জাতিকে বিভক্তির দিকেই ঠেলে দিচ্ছে এবং গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠিয়েছে। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হলে দল-মত-নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস, হত্যা, খুন, গুম, অপহরণ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বাংলাদেশকে এক রক্তাক্ত জনপদে পরিণত করেছে। এ অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। জনতার আন্দোলনের মাধ্যমেই মহান স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে ইনশাআল্লাহ।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রাজাকার, আলবদরসহ নানা বাহিনী গড়ে, পূর্ব পাকিস্তান সরকারে যোগ দিয়ে নানাভাবে সেনাবাহিনীকে সহায়তা করেছে জামায়াতে ইসলামী। যুদ্ধের শেষ দিকে বুদ্ধিজীবী হত্যায়ও জড়িত ছিল জামায়াতের সে সময়ের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘ। এই সংগঠনটি এতটাই কুখ্যাত হয়ে উঠে যে, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বাংলাদেশে রাজনীতি করার সুযোগ পেয়ে এই নামে সংগঠন না খুলে ইসলামী ছাত্রশিবির নামে ছাত্র শাখা খুলে জামায়াত।
স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী এবং যুদ্ধাপরাধীদের এই দলটি চাপের মুখে নিজেদের ভোল পাল্টানোর চেষ্টায় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশংসায় মেতে উঠেছে বলে বিশ্লেষকরে মনে করছেন।
মুক্তিযোদ্ধাদের জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান হিসেবে অাখ্যায়িত করলেও এখন পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে ১৯৭১ সালে তাদের স্বাধীনতা বিরোধী অবস্থান, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে সহায়তা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণের জন্য দেশবাসীর কাছে ক্ষমা প্রার্থণা করা হয় নাই।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন