রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনুর স্ত্রী সালমা শাহাদাতকে অধ্যক্ষের চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
রাজশাহী মাদারবখস গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের অধ্যক্ষ পদে থেকে কলেজ পরিচালনা পর্ষদের নেওয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না করায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সালমা শাহাদাত ২০০৩ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছিলেন।
কলেজটির সভাপতি ও রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শফিকুর রহমান বাদশা স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে গত সোমবার বরখাস্তের এই আদেশ দেওয়া হয়। পরে শনিবার বরখাস্তের কাগজপত্র গণমাধ্যমে পাঠানো হয়। মুঠোফোনে যোগাযোগ করে বিষয়টির সত্যতা জানতে চাইলে তা নিশ্চিত করেন বাদশা।
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, সম্প্রতি নয়টি অনিয়ম অধ্যক্ষ সালমা শাহাদাত করেছেন। এ নিয়ে তাকে শোকজ করা হয়। কিন্তু তিনি শোকজের কোনো জবাব দেননি। তাই তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্তের আদেশের কপি সালমা শাহাদাতকেও দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
জানতে চাইলে অধ্যক্ষ সালমা শাহাদাত ঢাকাটাইমসকে বলেন, সভাপতি এককভাবে আমাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছেন। কলেজে চিঠিটা আজ (শনিবার) আমি পেয়েছি। কিন্তু তিনি এটা করতে পারেন না। কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভায় আমাকে বরখাস্তের বিষয়ে অনুমোদন নিতে হতো। পরিচালনা পর্ষদের সভায় বিষয়টি তিনি উত্থাপন না করে এককভাবে আমাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছেন।
বরখাস্তের আদেশে বলা হয়েছে, কলেজ কর্তৃপক্ষের পরামর্শ, আদেশ, নির্দেশ ও গভর্নিং বডির সিদ্ধান্তকে অবমাননার কারণে কলেজের অধ্যক্ষ সালমা শাহাদাতকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। একই সাথে কলেজের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ের সহকারী অধ্যাপিকা মাহমুদা খাতুনকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হলো।
এই বরখাস্তের আদেশকে রাজনৈতিক কারণ হিসেবে দেখেন না সালমা শাহাদাত। তিনি বলেন, সভাপতি কলেজের একজন শিক্ষককে উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দিতে বলেছিলেন। কিন্তু পরিচালনা পর্ষদে তা অনুমোদন হয়নি। এজন্য তিনি ওই শিক্ষককে উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দিতে পারেননি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে শুধু ব্যক্তিগত কারণে বরখাস্তের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
অধ্যক্ষ সালমা শাহাদাত বলেন, দায়িত্ব হস্তান্তরের জন্য তাকে গত বুধবার সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি তা করেননি। শনিবারও তিনি কলেজ করেছেন। আগামীতেও করবেন। একক সিদ্ধান্তে সভাপতি তাকে বরখাস্ত করতে পারেন না বলে তিনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
জানতে চাইলে সভাপতি শফিকুর রহমান বাদশা ঢাকাটাইমসকে বলেন, শোকজ করার পরও জবাব না দিলে সভাপতি একক সিদ্ধান্তে সাময়িক বরখাস্ত করতে পারে। তিনি তাই করেছেন। স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করতে হলে পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন লাগে। একক সিদ্ধান্তে বরখাস্ত করায় অধ্যক্ষ সালমা আদালতে গেলেও কিছু যায় আসে না বলে মন্তব্য করেন বাদশা।
ঢাকাটাইমস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন