গত বছরের ২২ ডিসেম্বর অনুমোদন দিয়ে সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ৭৫ সদস্যবিশিষ্ট যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে সেখানে পৌর মেয়র আয়ুব বখত জগলুল জীবত থাকলেও তাঁর নামের শেষে মরহুম যুক্ত থাকায় জন্ম দিয়েছে রহস্যের।
দুই পৃষ্ঠার কমিটির শেষ পৃষ্ঠায় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার তারিখ সম্বলিত স্বাক্ষর থাকলেও প্রথম পৃষ্ঠায় স্বাক্ষর না থাকায় এ নিয়ে সংশ্লিষ্টরা হয়তো নয়-ছয় করেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন অনেকে।
তবে এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষে থেকে আনুষ্ঠানিক কোন প্রতিক্রিয়া না জানিয়ে স্পর্শকাতর এ বিষয়টিকে এড়িয়ে যেতে চাইছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা।
প্রসঙ্গত, জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদনের খবর গত ১৫ মার্চ মৌখিকভাবে গণমাধ্যমকে জানান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ মতিউর রহমান। এর পাঁচ দিন পর লিখিত অনুমোদিত কপি প্রকাশের পর জগলুলের নামের শেষে লেখা 'মরহুম' শব্দ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
কমিটির তালিকার ৭ নম্বরে সহ-সভাপতি পদে রয়েছে আইয়ুব বখত জগলুল এর নাম। নামের পাশে লিখা রয়েছে বন্ধনীযুক্ত অবস্থায় 'মরহুম' শব্দ লেখা। অথচ গত বছরের ডিসেম্বরের ২২ তারিখ যখন পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা তখন মেয়র জগলুল তখন সুস্থ-সবল ভাবে বেঁচে ছিলেন। তিনি প্রয়াত হন চলতি বছরের পহেলা ফেব্রয়ারি অর্থাৎ পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেয়ার একমাস ৯ দিন পর।
কমিটির বিশ্বাসয্যোগতা নিয়ে যেসকল নেতা-কর্মী সন্দেহ পোষণ করছেন তাদের প্রশ্ন হলো, জগলুলের জীবদ্দশায অনুমোদিত কমিটিতে তার নামের পাশে মরহুম লেখা হলো কিভাবে। কমিটি গঠনের দায়িত্বে থাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কী আগে থেকেই জানতেন কমিটি প্রকাশের সময় জগলুল পৃথিবী আর বেঁচে থাকবেন না। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে নেতা-কর্মীরা দাবি করছেন বিষয়টি যাতে গুরুত্বের সাথে খতিয়ে দেখে কেন্দ্র। এতবড় 'ভুল' কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীলরা করতে পারবেন না বলেও মত তাদের। এই ঘটনায় নেতা-কর্মীদের মাঝে বিশ্বাসের যে সংকট তৈরি হয়েছে তার ফিরিয়ে আনতে কেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রত্যাশা করেন তারা। আর প্রকৃত অর্থে জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি নিয়ে কেউ 'নয়ছয়' করে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি তাদের।
এদিকে, দীর্ঘ ২০ বছর পর ঘোষিত সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের নবগঠিত কমিটি ঘিরে দলের নিবেদিত প্রাণ ত্যাগী নেতাকর্মীদের বঞ্চিত করায় ইতোপূর্বে তাদের মাঝে তীব্র অসন্তোষ ও ক্ষোভই দেখায় দেয়নি, রীতিমতো বিস্ময় ও কৌতূকের সৃষ্টি করেছে, মর্মে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে।
উল্লেখ্য, সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আয়ুব বখত জগলুল গত ১ ফেব্রুয়ারি ভোরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত সুনামগঞ্জ-৪ আসনের দলীয় মনোয়ন নিয়ে জেলা সভাপতি আলহাজ মতিউর রহমানের সঙ্গে ও জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে সাধারণ সম্পাদক এনামুল কবির ইমনের সাতে চরম বিরোধ ছিল প্রয়াত জগলুলের।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন