ফোন বেজে উঠল বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসের। ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখলেন লন্ডনের নম্বর। পড়িমরি করে ফোনটা ধরলেন। অপরপ্রান্ত থেকে পরিচিত গলা ‘আব্বাস ভাই কেমন আছেন?’ পরিচিত গলা কিন্তু এটা তারেক জিয়ার গলা নয়, মির্জা আব্বাস কিছুক্ষণ ভাবলেন। তাঁর নিস্তব্ধতায় অন্য প্রান্ত থেকে বলা হলো, ‘ভাই চিনতে পারলেন না, আমি হারিছ?’ এবার তো ভিমরি খাওয়ার অবস্থা তাঁর। ‘আরে হারিছ আপনি লন্ডনে?’ প্রায় আর্তচিৎকারের মতো করে বললেন মির্জা আব্বাস। অপর প্রান্ত থেকে উত্তর এলো, ‘জ্বি, আমি ভাইয়ার সঙ্গেই আছি। নিন কথা বলুন।’ এরপর হারিছ চৌধুরী ফোনটা দিলেন তারেক জিয়াকে। মির্জা আব্বাস তারেক জিয়ার সঙ্গে কথা বললেন, কিন্তু ভাবনায় রইল হারিছ চৌধুরী।
বিএনপির বর্তমান পরিস্থিতির জন্য যাদের দায়ী করা হয় তাদের একজন হলেন বেগম খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তিনি ছিলেন হাওয়া ভবনের প্রতিনিধি, হাওয়া ভবনের নির্দেশে ফাইল আটকে কমিশন নেওয়াই ছিল তাঁর একমাত্র কাজ। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কি হয় না হয় সেই খবর তারেক জিয়াকে নিয়মিত সরবরাহ করতেন তিনি। এভাবেই হারিছ চৌধুরী হয়ে ওঠেন দুর্দান্ত ক্ষমতাবান। ২০০৭ সালে ওয়ান ইলেভেনের সঙ্গে সঙ্গেই হারিছ চৌধুরী পালিয়ে যান। তাঁর অনুপস্থিতিতেই দুর্নীতি মামলায় তিন বছরেরে কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন হারিছ। তাঁর বিরুদ্ধে সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ. এম. এস. কিবরিয়া হত্যা মামলা, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলাসহ বেশ কয়টি মামলা রয়েছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর হারিছ চৌধুরীর সঙ্গে বিএনপি নেতৃবৃন্দের যোগাযোগ শিথিল হয়ে যায়। অধিকাংশ বিএনপি নেতাই স্বীকার করেন হারিছ চৌধুরী এবং গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের সীমাহীন দুর্নীতি এবং স্বেচ্ছাচারিতার পরিণাম ওয়ান ইলেভেন। বর্তমানে হারিছ চৌধুরী বিএনপির কোনো কমিটিতেই নেই। তিনি কোথায় আছেন এ নিয়ে বিএনপিতে নানা জল্পনা-কল্পনা ছিল। কিন্তু সর্বশেষ খবরে জানা গেছে, হারিছ চৌধুরী লন্ডনে আছেন। সেখানে তিনি রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্যও আবেদন করেছেন। লন্ডনে আবার তারেক হারিছ দুষ্ট-চক্রের মিলন হয়েছে। লন্ডনে তারেক জিয়া যে রাজনৈতিক অফিস করেছেন, সেখানে হারিছ চৌধুরী নিয়মিত বসছেন। তারেক জিয়ার ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন হারিছ চৌধুরী।
একাধিক সূত্র জানিয়েছে, তারেক জিয়ার আগ্রহে এবং উদ্যোগেই হারিছ চৌধুরী ভারত থেকে লন্ডনে এসেছেন । বিএনপির একটি সূত্র বলছে , হারিছ চৌধুরী সম্ভবত বিপুল পরিমাণ টাকা দিয়ে তারেক জিয়ার মন জয় করেছে। ওয়ান ইলেভেনের সময় জানা গিয়েছিল হারিছ চৌধুরীর অন্তত দেড় হাজার কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে।
শুধু মির্জা আব্বাস নয়, হারিছ চৌধুরী ইদানিং অনেক বিএনপি নেতাকেই ফোন করেই আদেশ নির্দেশ দিচ্ছেন। বিএনপির একজন নেতা দুঃখ করে বললেন, দশ বছরে তারেক জিয়ার কিছুই বদলায়নি। দুষ্ট-চক্ররা আবার মিলিত হচ্ছে। ক্ষমতায় আসার আগেই যদি হারিছরা বিএনপিতে ভর করে, তাহলে ক্ষমতায় এলে কি হবে?
বাংলা ইনসাইডার
পাঠক মন্তব্য
India gov. ki anguul chushchilo jokhon Harris okhaney chilo etodin- r koto fake news korben apnara?
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন