মনজুরুল ইসলাম ওরফে রতন ও দেবাশীষ নাথ দেবু
কোটি টাকা চাঁদাবাজির মামলায় নগরীতে স্বেচ্ছাসেবক লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শনিবার সকাল ১১টার দিকে নগরীর সাগরিকা থেকে দেবাশীষ নাথ দেবুকে (৪৮) এবং দুপুরে মুরাদপুর থেকে এটিএম মনজুরুল ইসলাম রতনকে গ্রেফতার করা হয়।
শুক্রবার বন্ধন নাথ নামে এক প্রবাসীর মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। পাঁচলাইশ থানার ওসি মহি উদ্দিন মাহমুদ এ প্রসঙ্গে যুগান্তরকে বলেন, দেবাশীষ নাথ দেবু নগরীর পাঁচলাইশ থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি। বর্তমানে পদ না থাকলেও নগরীতে স্বেচ্ছাসেবক লীগ একাংশের অন্যতম নিয়ন্ত্রক দেবু। মনজুরুলও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা হিসেবে পরিচিত। যদিও কোনো পদে নেই। চাঁদাবাজির অভিযোগে বন্ধন নাথ নামে এক কুয়েতপ্রবাসীর দায়ের করা মামলায় দেবু ও রতনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, একেএম নাজমুল আহাসানকে প্রধান করে চার আসামির নামে মামলা দায়েরের পর আমরা অভিযুক্তদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু করেছি। ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাকিদেরও গ্রেফতার করা হবে। দেবু ও রতনকে শনিবার চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়।
অভিযোগে জানা যায়, নগরীর পাঁচলাইশ থানার পূর্ব নাছিরাবাদ এলাকায় ২০০৭ সালে একটি পুরনো ভবন কেনার পর সেটি ভেঙে নতুন ভবন তৈরির উদ্যোগ নেন বন্ধন নাথ। ২০১৬ সালে ডিজাইন সোর্স টিম লিমিটেড নামে একটি ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানকে ভবন তৈরির দায়িত্ব দেন তিনি। ওই বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি কাজ শুরুর পর দেবুর নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা ভবন তৈরি করতে হলে তাদের এক কোটি টাকা দিতে হবে বলে দাবি করেন। এতে অস্বীকৃতি জানালে তারা বন্ধনকে মারধর এবং পিঠের ডান পাশে গুলি করে গুরুতর জখম করে। পরে বন্ধন কুয়েত গিয়ে প্রাইম ব্যাংকের চেকের মাধ্যমে দেবুসহ সন্ত্রাসীদের ৭০ লাখ টাকা দিতে বাধ্য হন। এর মধ্যে ২০১৭ সালে ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান সেখানে ভবন নির্মাণে অস্বীকৃতি জানান। বন্ধন নাথ তার শুভাকাঙ্ক্ষী পাঁচজনের সঙ্গে মিলে সেখানে ভবন নির্মাণের কাজে হাত দেন। চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি কাজ শুরুর পর আবারও সন্ত্রাসীরা এসে আরও ৩০ লাখ টাকা দেয়ার জন্য চাপ দেন এবং কাজ বন্ধ করে দিতে বাধ্য করেন। ফলে ২৩ ফেব্রুয়ারি বন্ধন নাথ পাঁচলাইশ থানায় একটি মামলা দায়েরের পর পুলিশ আসামিদের গ্রেফতারে অভিযানে নামে।
তবে দেবুর ঘনিষ্ঠজনদের দাবি, বন্ধন নাথ যে পুরনো ভবন কিনেন, সেটির জন্য মূল মালিকের সঙ্গে মধ্যস্থতা করেছিলেন দেবু। মধ্যস্থতা বাবদ প্রতিশ্রুত টাকা পরিশোধ করতে পরে অস্বীকৃতি জানান বন্ধন। মূলত এর থেকেই বিরোধের শুরু হয় তাদের মধ্যে। এরপর সেই টাকা দেয়ার জন্য বন্ধনকে বিভিন্নভাবে চাপ দিতে থাকেন দেবু।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন