বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামির কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত আমির মন্জুরুল ইসলাম ভুঁইয়া বলেছেন, ‘৫২র ভাষা শহীদরা মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় যে আত্মোৎস্বর্গের দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন, তা বিশ্ব ইতিহাসে বিরল । অথচ সরকার ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস বিকৃত করে প্রকৃত ভাষা সৈনিকদের অবমূল্যায়ন করছে।’
মঙ্গলবার রাজধানীর একটি মিলনায়তনে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ আয়োজিত ‘২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি ।
মন্জুরুল ইসলাম ভুঁইয়া বলেন, ‘মহান একুশের চেতনায় স্বাধীনতার আন্দোলনের উন্মেষ ঘটে এবং তা ১৯৭১ সালে মুক্তিসংগ্রামের মাধ্যমে পূর্ণতা লাভ করে। মূলত ভাষা আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল প্রিন্সিপাল আবুল কাসেমের নেতৃত্বাধীন তমুদ্দুন মজলিশের মাধ্যমে। ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহও মহান ভাষা আন্দোলনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন। ডাকসুর সাবেক জিএস অধ্যাপক গোলাম আযম ছিলেন ভাষা আন্দোলেনর অন্যতম পুরোধা ও সংগঠক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিএস থাকাকালীন অবস্থায় রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে পাকিস্থানের প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খানের কাছে স্মারকলিপি পেশ করেছিলেন। মূলত ইসলমপন্থীরাই ছিলেন ভাষা আন্দোলনের নেতৃত্বে। অথচ একটি মহলবিশেষ ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস বিকৃত করে প্রকৃত ভাষা সৈনিকদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেয়ার পরিবর্তে বামপন্থী ও সরকারের প্রতি আনুগত্যশীলদের মূল্যায়ন করছে।’
তিনি বলেন, ‘ফেব্রুয়ারি আসলেই বাংলা ভাষার মর্যাদা সম্পর্কে অনেক আলোচনা হয়। কিন্তু ভাষার উৎকর্ষ ও বিকাশ সাধনে কোনও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় না। অনেক ত্যাগের বিনিময়ে বাংলা ভাষা রাষ্ট্রীয় মর্যাদা লাভ করলেও রাষ্ট্রের সকল পর্যায়ে এখনও বাংলা ভাষার প্রচলন করা সম্ভব হয়নি। দেশের আইন-আদালত, চিকিৎসা শাস্ত্র, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিষয়ক প্রকাশনাগুলো এখনও বাংলা ভাষায় রচনা বা অনুবাদ করা হয়নি। ফলে উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে বাংলা ভাষা এখনও উপেক্ষিত।’
তিনি ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন এবং শহীদদের পরিবার-পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুস সবুর ফকির, বিশিষ্ট আইনজীবী ইসলামিক ল’ ইয়ার্স কাউন্সিলের সহ-সভাপতি ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য এ্যাডভোকেট এসএম কামাল উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী এ্যাডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক, সিনিয়র আইনজীবী এ্যাডভোকেট জাকির হোসেন, এ্যাডভোকেট আবু তাহের, এ্যাডভোকেট মুজাহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
শীর্ষনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন