সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও প্রবীণ রাজনীতিক ড. কামাল হোসেন বলেছেন, জীবনের শেষ কাজ হিসেবেই জাতীয় ঐক্য গঠন করার প্রক্রিয়ায় পা বাড়িয়েছি। আমার আর কোনো চাওয়া-পাওয়া বা ইচ্ছে নাই।সোমবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।কামাল হোসেন বলেন, এখনকার ছাত্রদের মধ্যেও জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে কোনো আলোচনা হয় না। দেশের সবাই রাজনীতিবিমুখ হয়ে যাচ্ছে। অথচ ভাষা আন্দোলন ছিল একটি রাজনৈতিক আন্দোলন। একাত্তরে দেশ স্বাধীনের মাধ্যমে দেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের বিজয় হয়েছে। অথচ এখন দেশের মানুষের মধ্যে একটা অসহায় ভাব।তিনি বলেন, গণতন্ত্র তো আমাদের দেশে থাকার কথা। সংবিধানের বঙ্গবন্ধুর স্বাক্ষরিত দলিলটি এখনো যাদুঘরে সংরক্ষিত। আমাদের সবার মিছিল নিয়ে গিয়ে দেখা দরকার দলিলটা আসলে আছে কিনা তা দেখা দরকার। সংবিধানে কী কী রয়েছে সেগুলো এখন মানুষের মধ্যে তুলে ধরা দরকার।
তিনি আরো বলেন, সংবিধান মতে, জনগণই দেশের মালিক। মালিকের শুধু অধিকার থাকে না, কর্তব্য আরো বেশি। দেশে যা ঘটছে তাতে কেউ নিষ্ক্রিয় থাকলেও তিনি দায়ী থাকবেন। কারণ তিনিও দেশের মালিক। এছাড়া গণতন্ত্র অর্থহীন হয়ে যাবে। নাগরিকের অনেক গুরুত্ব দেয়া আছে সংবিধানে তা অনেকেই উপলব্ধি করেন না। পাঁচ বছর পরে শুধু একটি ভোট দিয়ে বিচার করবেন তা তো হয় না। এর চেয়ে বেশি সংকট আর হতে পারে না। অথচ ষাটের দিকে ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে ঐক্য গড়ে উঠেছিল। দেশে সুস্থ রাজনীতির কোনো বিকল্প নাই।এ রাজনীতিক বলেন, কেউ যদি ক্ষমতায় থেকে অন্যায় করেন আর মালিকরা যদি অপরাধীদের কিছু না বলেন সেটি হবে দায়িত্বহীনতা। কারণ আমরা তাদের শুধু প্রতিনিধি বানিয়েছি। দেশের ১৬/১৭ কোটি মানুষ যদি সংঘবদ্ধ হতে পারে তবে এ পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণ সম্ভব হবে।
ড. কামাল বলেন, বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীনের পর দেশে এসেই বলেছিলেন, স্বাধীনতা এদেশের মানুষদের ঐক্যের ফসল। জনগণের ঐক্য ধরে রাখতে না পারলে স্বাধীনতা রক্ষা করা যাবে না। ‘জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া’ জীবনের শেষ কাজ বলে পা বাড়িয়েছি। সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে। দেশের মালিকের কাছে তাদের ক্ষমতা বুঝিয়ে দিতে হবে।‘জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া’ আয়োজিত এই আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য দেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আব্দুল মান্নান, জাতীয় পার্টির (জেপি) মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম, বাংলাদেশের বিল্পবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি প্রমুখ।
purboposhchim
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন