নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপ শামিম ওসমান ও মেয়র সেলিনা হায়াত আইভির দ্বন্দ্ব নিয়ে সৃষ্ট সমস্যার সমাধান একমাত্র প্রধানমন্ত্রীর হাতে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার।
রোববার রাতে যমুনা টেলিভিশনে আয়োজিত ‘রাজনীতির আলোচনায় নারায়ণগঞ্জ’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেন, সেলিনা হায়াৎ আইভীর সাথে আমার দ্বন্দ্ব ব্যক্তিগত বা রাজনৈতিক না। তার সাথে আমার দ্বন্দ্ব থাকলে, আমি তার নির্বাচনে জান্য প্রাণ দিয়ে কাজ করতাম না। শুধু জান-প্রাণ দিয়ে নয়, আরও অনেক কিছু দিয়েই কাজ করেছি। কিন্তু আমার মনে হয় নারায়ণগঞ্জের ঘটনায় তাকে কেউ ব্যবহার করছে। আমি দোয়া করি আইভী সুস্থ হোক। আমি মনে করি আর কেউ লাগবে না, আমরা দু’জন বসলে সমস্যার সমাধান হবে।
পূর্ব পশ্চিম ডট নিউজের প্রধান সম্পাদক পীর হাবিবুর রহমান বলেন, নারায়ণগঞ্জের ঘটনা একদিনের নয়, এটা ৫দশকের ঘটনা। ঘটনাটি পরম পরায় চলে আসছে, এর আরেকটা দিক হচ্ছে রাজনৈতিক। শামীম বা তৈমুর যখন আঙ্গুল তুলে কথা বলেন, তখন আমরা বলি রূদ্রমূর্তি নিয়েছেন তারা। আর যখন কোন মহিলা রাজনীতিক আঙ্গুল তুলে কথা বলেন তখন কিন্তু আমরা বলি না রণাঙ্গিনীমূর্তি রূপে তিনি আভির্ভূত হয়েছেন। ভারতেও কিন্তু আজকে মায়াবতীকে মাফিয়া বলা হচ্ছে। বাংলাদেশেও আজ ঘটফাদার হিসাবে বলা হয়। কিন্তু একজন শামীম ওসমানের সৃষ্টিটা কি? শামীম ওসমান যেদিন বেগম জিয়ার গাড়ী থামিয়ে ছিলেন, সেদিনও তিনি কাজটি ঠিক করেননি। তিনি সেদিন বেগম জিয়ার গাড়ী কেন থামিয়ে ছিলন, তা তিনি এবং তার দল জানে। তার খেশারত তাকেই বেশি দিতে হয়েছে।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরিণ কোন্দল। এ ব্যাপারে তাদের সতর্ক থাকা উচিত। নারায়ণগঞ্জে বহুদিনের একটা ক্ষোভের বর্হিপ্রকাশ ঘটেছে হকার সমস্যা নিয়ে এবং সেটা সংর্ঘষে রূপ নিয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, নারায়ণগঞ্জে হকার সমস্যার চেয়ে ব্যক্তিগত সমস্যাই বেশি। এখানে কিছু উস্কানি কাজ করেছে। শামীম ওসমানের ছেলের বিয়েতে ২৫ কোটি টাকা খরচ করেছে এগুলো দায়িত্বশীল কথা নয়। কিন্তু শামীম ওসমান যেভাবে বক্তব্য দিয়েছিলেন যে এটা আমার আদেশ না, অনুরোধ না, এটা আমার নির্দেশ। এই নির্দেশ শামীম ওসমান দিতে পারেন না। শামীম ওসমান এখানে মেয়রকে নয়, সরকারকে চ্যালেঞ্জ করেছেন। মেয়র ও এমপি যদি প্রকাশ্যে একে অপরকে দোষারোপ করেন, তখন নারায়ণগঞ্জের ইমেজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এখানে এলজিআরডি মন্ত্রী বলেছেন, মুখের কথা হাতাহাতিতে চলে যাবে, সেটা আমরা বুঝতে পারি নি। এই নারায়ণগঞ্জে কিছু কিংম্যাকার আছে। এদের সংখ্যা দুই-চারজন হবে।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের সমস্যার সমাধান একমাত্র প্রধানমন্ত্রীর হাতে। কারণ এখানে দু’জনই প্রধানমন্ত্রীর লোক। এখানে প্রধানমন্ত্রীর আগেই উচিত ছিল নারায়ণগঞ্জের দুই ব্যক্তির ব্যক্তিগত বিরোধের সমাধান করা। নারায়ণগঞ্জে হকার সমস্যা কোনো সমস্যা নয়, হকার হচ্ছে একটা উপলক্ষ মাত্র। এটা যে কোন সময় আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হতে পারে। তাদের দু’জনের যে সমস্যাটা সেটা সামাজিক নয়, এটা রাজনৈতিক। নারায়ণগঞ্জে কোন ঘটনা ঘটলে সেখানে বিএনপিকে দোষারোপ করা হয়। এটা শামীম ওসমান সব সময় করে। আমি দেখেছি তারা প্রত্যেকটা বিষয়ে বিএনপিকে দোষারোপ করে। নারায়ণগঞ্জে সমস্যাটা লাগলো কার সাথে।
ভিডিও ,..click here
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন