জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্র্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, জাতীয় পার্টিকে অনেকেই সংসদের গৃহপালিত বিরোধী দল বলে মন্তব্য করেন। এটা শুনলে আমার খারাপ লাগে। ঘটনা ঘটে গেছে, কিছু করা যাবে না। তবে জাতীয় পার্টি আর আগের মতো নেই। জাতীয় পার্টির দিকে মানুষ চেয়ে আছে। এরশাদ বলেন, দুই দলের নির্যাতনের হাত থেকে মানুষ পরিত্রাণ চায়। শান্তি, সুখ ও নিরাপত্তা চায়। শান্তির ও নিরাপত্তার ভরসার স্থান একমাত্র জাতীয় পার্টি। রংপুরের নির্বাচনের পর দেশের মানুষ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আমাদেরকে আর কেউ ফেলনা মনে করে না। তোমরা শক্তি অর্জন কর, সাংগঠনিক ভাবে শক্তিশালী হও। ১৫ ফেব্রুয়ারি মহাসমাবেশে প্রমাণ করতে হবে সাংগঠনিক শক্তি আছে, সামর্থ্য আছে, জনবল আছে, মানুষের ভালবাসা আছে। আমি মৃত্যুর আগে পার্টিকে দেশ পরিচালনার সরকার হিসেবে ক্ষমতায় দেখতে চায়। তবেই মরে আমি শান্তি পাবো।
সোমবার জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানীর কার্যালয়ে আয়োজিত যৌথসভায় সভাপতির বক্তব্যে এরশাদ এসব কথা বলেন। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি দলের সমাবেশকে সফল করতে এই সভার আয়োজন করা হয়। যৌথ সভায় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু এমপি, গোলাম কিবরিয়া টিপু, অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি, আজম খান, শফিকুল ইসলাম সেন্টু বক্তব্য রাখেন। এছাড়া যৌথ সভায় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জি.এম কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, অধ্যাপিকা মাসুদা এম রশীদ চৌধুরী এমপি, ফকরুল ইমাম এমপি, তাজুল ইসলাম চৌধুরী এমপি, সৈয়দ মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান, একেএম মাঈদুল ইসলাম চৌধুরী এমপি, হাবিবুর রহমান, এস এম ফয়সল চিশতী, মীর আবদুস সবুর আসুদ, মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, এটিইউ তাজ রহমান, আতিকুর রহমান আতিক, আব্দুর রশীদ সরকার, মেজর খালেদ আখতার (অব.), অধ্যাপিকা রওশন আরা মান্নান এমপি, রিন্টু আনোয়ার, ক্বারী হাবিবুল্লাহ বেলালী, মেরিনা রহমান এমপি, সৈয়দ দিদার বখত, ব্যারিষ্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, অ্যাড. রেজাউল ইসলাম ভূইয়া, মোঃ নোমান এমপি, কাজী মামুনুর রশীদ, সোমনাথ দে, জাফর ইকবাল সিদ্দিকী, নাজমা আক্তার, ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ¦ আব্দুস সাত্তার মিয়া, এম এ তালহা, জিয়াউল হক মৃধা এমপি, নুরুল ইসলাম মিলন এমপি, শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ এমপি, অধ্যাপক ইকবাল হোসেন রাজু, জহিরুল ইসলাম জহির, আলমগীর সিকদার লোটন, নুরুল ইসলাম নুরু, দিদারুল আলম দিদার, আমানত হোসেন আমানত, সরদার শাহজাহান, এমরান হোসেন মিয়া, শওকত চৌধুরী এমপি, মেহেরুন্নেসা খান হেনা, রুস্তম আলী ফরাজী এমপি, নুরুল ইসলাম ওমর এমপি এমএ মুনিম চৌধুরী বাবু এমপি, আমির হোসেন ভূইয়া এমপি, সেলিম উদ্দিন এমপি, মৌলভী ইলিয়াস এমপি, পীর ফজলুর রহমান মেজবাহ এমপি, খুরশেদ আরা হক এমপি, মামুনুর রশীদ এমপি, আলতাফ হোসেন এমপি, শাহানারা বেগম এমপি, নুরুল ইসলাম তালুকদার এমপি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মৃত্যুর আগে নিজ হাতে গড়া জাতীয় পার্টিকে আবার ক্ষমতায় দেখে যেতো চান-এমন আকাঙ্খা ব্যক্ত করে এরশাদ বলেন, আমার যা ছিল শেষ হয়ে গেছে। পথের ভিখারি আমি এখন। মৃত্যুর আগে দেখে যেতে চাই জাতীয় পার্টি সরকার গঠন করেছে। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির সামনে আশার আলো এসেছে। জাতীয় পার্টির নয় বছরের শাসনামলে দেশে গুম-খুন হয়নি, মানুষ ওই সময়ে ফিরে যেতে চায়।
এরশাদ বলেন, দু’দলের কেউ আমাদের সাথে ভাল ব্যবহার করেনি। আমি আবারও বলি দুর্বলের সাথে কেউ হাত মেলায় না। আমার উপরে যে অত্যাচার হয়েছে, পৃথিবীর কোথাও কোন দেশের রাজনৈতিক নেতা এরকম নির্যাতিত, নিপীড়িত হয়নি।
পাঁচ কোটি টাকা বাজেটের সমাবেশ
আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় পার্টি বড় আকারের সমাবেশের আয়োজন করতে যাচ্ছে। এ আয়োজনকে সামনে রেখে দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থক জড়ো করতে প্রাথমিকভাবে পাঁচ কোটি টাকা বাজেট ধরা হয়েছে জানিয়ে এরশাদ বলেন, আমাদেরকে এই বাজেট সংগ্রহ করতে হবে। দেখাতে হবে জনগণ আমাদের প্রতি আকৃষ্ট। দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসবে। লঞ্চ ভাড়া করতে হবে। বাস ভাড়া করতে হবে, ট্রেন ভাড়া করতে হবে।
পার্টির মহাসচিব বলেন, দল শক্তিশালী হয় না নেতাদের কারণে, কর্মীদের দোষ নয়। এজন্য দায়ী আমিসহ এখানে উপস্থিত প্রথম সারির নেতারা। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি ছেড়ে অনেক নেতা চলে গেছেন। আবার ফিরে আসতে চায়। ফিরে আসলে তাদের সুযোগ দেব। দলকে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য সাংগঠনিক শক্তি অর্জন করবো। ভোটের মাধ্যমে মানুষ আমাদের মতামত দেবে। নির্বাচিত হয়েই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যাবো। ইনশাআল্লাহ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন