আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে ছাত্রদলের সাবেক ক্যাডাররা স্থান পেয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া গঠনতন্ত্র না মেনে জেলা কমিটির সদস্যদেরও কেন্দ্রীয় উপকমিটিতে ঠাঁই দেয়া হয়েছে।
পূর্বপশ্চিমবিডি.নিউজের অনুসন্ধানে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যরিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফলের সহ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পেয়েছেন তিন জন। তাদের মধ্যে দুইজনই ছাত্রদলের ক্যাডার। মিজানুর রহমান জনি ছাত্রদলের ঢাকা কলেজের একজন অস্ত্রধারী ক্যাডার ছিলেন। ৯০ পরবর্তী সময়ে ঢাকা কলেজ ছাত্র সংসদের সাংস্কৃতিক সম্পাদক সিরাজের গ্রুপের একজন সক্রিয় অস্ত্রধারী ক্যাডার ছিলেন জনি। জনির বাবারও আব্দুল হক হওলাদারও বাগেরহাটের মোড়লগঞ্জ উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক।
এছাড়া অন্যান্য সহসম্পাদক ও উপ কমিটির সদস্যদের মধ্যে রিয়াজ এবং এস ডি রুবেল ঠাঁই পেয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে। রিয়াজও ছাত্রদলের ঢাকা কলেজ শাখার ক্যাডার ছিলেন। এছাড়া আওয়ামী লীগের অনুমোদিত উপ-কমিটিতে সংস্কৃতি বিষয়ক উপ-কমিটির তিন নম্বর সদস্য হিসেবে আছেন জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী এস ডি রুবেল।
উপ-কমিটিতে এস ডি রুবেলের জায়গা পাওয়া নিয়ে দলের ভেতরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। এমনকি বিএনপি নেতারাও হাস্যরস করছেন বিষয়টি নিয়ে।
এস ডি রুবেল বিএনপির সাংস্কৃতিক সংগঠন জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) দীর্ঘ দিন কেন্দ্রীয় নেতা ছিলেন। এ ছাড়া ছাত্রজীবনে ঢাকা কলেজে ছাত্রদলের নেতা ও ক্যাডার হিসেবে পুরো ছাত্রজীবন পার করেছেন। এমনকি এস ডি রুবেল ছাত্রদলের ঢাকা কলেজ শাখার সাংস্কৃতিক সম্পাদকও ছিলেন।
এস ডি রুবেল যখন ছাত্রদল করতেন সে সময় ঢাকা কলেজে ছাত্রলীগের একাধিকজন উপ-কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন। তাদের একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রুবেলের হাতে ছাত্রলীগের অনেক ত্যাগী নেতাকর্মী নির্যাতিত হয়েছে। এছাড়া ছাত্রদলের ঢাকা কলেজের সাবেক ক্যাডার জিপসি রুবেলও ঠাঁই পেয়েছেন। কবীর নামেও একজন ছাত্রদল ক্যাডার যিনি ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদ গ্রুপের একজন অস্ত্রধারী ছিলেন।
আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জেলা কমিটির কোনো সদস্য বা পদদারী কেন্দ্রীয় কমিটিতে আসতে পারবেন না। এবার সে নিয়মও মানা হয়েনি। পিরোজপুর জেলা কমিটির সদস্য ইসহাক আলী খান পান্না, মানিকগঞ্জের ফাহিম হোসেন রনি, যশোরের জয়দেব নন্দী, বরিশালের শাহে আলমও কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক এবং উপ কমিটির সদস্য হয়েছেন।
ছাত্রদলের ক্যাডার এবং নিয়ম না মেনে এসব পদ দেয়ায় খোদ আওয়ামী লীগের মধ্যেই বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, কে কোন পোস্ট পেয়েছে তা আমার জানা নেই। আমি কোনো কাগজে স্বাক্ষর করিনি। তাই এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য নেই।
এদিকে, গতকাল বুধবার সন্ধ্যার পর থেকেই আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ স্বাক্ষরিত বিভিন্ন উপ কমিটি এবং সহ-সম্পাদকের নাম বেরিয়ে আসে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন