বিএনপি ১৯৭৬ সাল থেকে শুরু করে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত সংবিধান নিয়ে ফুটবল খেলেছে। আমরা এখন সংবিধান নিয়ে আর ফুটবল খেলতে দিব না। বিরোধী দল, বিশেষ করে বিএনপির এ আচরণবিধির সমালোচনা করে তিন কারণে। প্রথমত, তারা বুঝুক আর না বুঝুক সমালোচনার খাতিরেই সমালোচনা করে। দ্বিতীয়ত, তাদের যে ওয়াইডার পরিকল্পনা ছিল তা অনেকটা নষ্ট হয়ে গেছে এবং তৃতীয়ত, তাদের পড়াশুনা নেই এ ব্যাপারে।
.
মঙ্গলবার সচিবালয়ে বিচারকদের আচরণবিধির গেজেট প্রকাশের পর এক প্রতিক্রিয়ায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক তার অফিস কক্ষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী প্রশ্ন তুলে বলেন, বিএনপি নেতারা কী বলতে চান, ওনারা কি আচরণবিধি বোঝেন? আপনারাই বলেন, আচরণবিধি নিয়ে উচ্চ আদালতের সাথে টানাপোড়েন হলো ক্যামনে? আমি তো বুঝলাম না। উচ্চ আদালতের সাথে তো কনসাল্ট করেই এ আচরণবিধি গেজেট আকারে প্রকাশিত হলো। সুপ্রিম কোর্টও বলবে না তাদের সাথে আলোচনা করা হয়নি।
মন্ত্রী বলেন, আপিল বিভাগের বিচারপতিদের সাথে বসে তারপর এ আচরণবিধি তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। তারা যখন এটা অ্যাপ্রুফ করেছেন তখন আমরা এটা করেছি। দে এগ্রিড ইট। বাংলাদেশের সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদে বলা আছে, আচরণবিধি সংক্রান্ত ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির কাছে থাকবে। তিনি (রাষ্ট্রপতি) সুপ্রিম কোর্টের সাথে পরামর্শ করে ১৮ অনুচ্ছেদ তৈরি করেছেন। সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদকে রক্ষা করতেই এ আচরণবিধি।
আনিসুল হক বলেন, এখানে রুলস ২৯- এ বলা হয়েছে, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ সুপ্রিম কোর্টের সাথে পরামর্শ করে এ বিধিমালা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। এরপর অনুচ্ছেদ ২৯ (২) এ বলা হয়েছে, উপবিধি ১ এ বর্ণিত উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের প্রস্তাব ও সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ অভিন্ন না হলে সেই ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ প্রাধান্য পাইবে।
মন্ত্রী জানান, মাজদার হোসেন মামলার যে ১২টি ডিরেকশন ছিল তার ৭ম ডিরেকশনে যা ছিল সেটাকেও এটার মধ্যে গ্রহণ করে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এ আচরণবিধি করা হয়েছে। এ আচরণবিধি সাব-অর্ডিনেট জুডিশিয়ারির জন্য।
তিনি বলেন, আমি পরিষ্কার করে বলতে পারি, এ আচরণবিধি করায় সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা ক্ষুণ্ন করা হয়নি বরং কিছুটা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা এ আচরণবিধি তৈরিতে বাধা ছিল কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি পেছনের দিকে আর ফিরে যেতে চাই না। আমি শুধু বলতে চাই, ষোড়ষ সংশোধনী আর্টিকেল ৯৬ নিয়ে। এ ষোড়ষ সংশোধনী যখন আর্গুমেন্ট হয়, আর্টিকেল ৯৬ এর ওপরই কিন্তু আর্গুমেন্ট হয়। ইস্যু কিন্তু আর্টিকেল ১১৬ ছিল না। কিন্তু উনি (এসকে সিনহা) তার জাজমেন্টের মধ্যে সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ আলট্রাইজ অব কনস্টিটিউশন করে দিয়েছেন। এটার পরে আপনারাই (সাংবাদিকদের) বোঝেন, উনি কিভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে রেখেছিলেন।
আজ একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে প্রধানপতির এ পদটি ভারপ্রাপ্ত দিয়ে চলা সংবিধান সম্মত নয়, এ বিষয়ে আপনার মত কী- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি রিপোর্টটি দেখেছি, কিন্তু পড়িনি। আমরা সংবিধান অনুযায়ীই কাজ করব। সংবিধানের বাইরে আমরা কোন কাজ করিনি।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন