মানিকগঞ্জের ঘিওর, দৌলতপুর ও শিবালয় উপজেলা নিয়ে মানিকগঞ্জ-১ আসন গঠিত। এ আসনটি সারা দেশের মধ্যেই আলোচিত। বিএনপির প্রয়াত মহাসচিব খন্দকার দেলেয়ার হোসেন ও বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক তারকা ক্রিকেটার ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক এ এম নাঈমুর রহমান দুর্জয়ের আসন থাকাতে। এ আসনে বর্তমানে বড় দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ১২ জন প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকলেও কার্যত আওয়ামী লীগের দুই প্রার্থী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। বর্তমান বিরুপ পরিস্থিতি বিরাজ করায় বিএনপির কোনো প্রার্থী সমাবেশ করতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন দলটির ছিনিয়র নেতারা।
মানিকগঞ্জ-১ আসন যা জাতীয় সংসদের ১৭২ নম্বর আসন। এ আসনে ১৯৭৩ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এ এম সায়েদুর রহমান। এরপর থেকে এ আসনটি আওয়ামী লীগের হাত ছাড়া হয়ে পড়ে। ১৯৭৯ সালের পর থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত বিএনপির প্রয়াত মহা সচিব খন্দকার দেলোয়ার হোসেন মোট পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এর মাঝ খানে ১৯৮৬ সালে তৃতীয় সংসদ ও ১৯৮৮ সালে চতুর্থ সংসদ নির্বাচনে এই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন জাতীয় পার্টির নেতা মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান।
কিন্তু ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনে খন্দকার দেলোয়ার হোসেনকে পরাজিত করে এই আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী এবিএম আনোয়ারুল হক। সর্বশেষ ২০১৪ সালের ১০ম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন জাতীয় টেস্ট ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক এ এম নাঈমুর রহমান দুর্জয়।
দুর্জয় ২০১৫ সালে নির্বাচনে জাসদ প্রার্থী আফজাল হোসেন খান জকিকে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
নির্বাচনের অনেটা কময় বাকী থাকলেও এর মধ্যে নির্বাচনী আমেজ চলে এসেছে। এই মুহূর্ত আওয়ামী লীগের সাংসদ এ এম নাঈমুর রহমান দুর্জয় ও বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এবং মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য সালাউদ্দিন মাহমুদ জাহিদ (এস এম জাহিদ) বিভিন্ন সভা সমাবেশ নিয়ে ব্যাস্ত সময় পার করছেন।
আওয়ামী লীগের এ দুই প্রার্থী ছাড়া সরকার দল থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী এবং বিএনপি কোনো প্রার্থী প্রকাশ্যে সমাবেশ করতে দেখা যাচ্ছে না।
আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচনেও দলের মনোনয়ন চাইবেন মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম এবং সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম আনোয়ারুল হক। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং ঘিওর উপজেলা পরিষদের দুই বারের চেয়ারম্যান আফজাল হোসেন খান জকি মহাজোটের পক্ষে মনোনয়ন চাইবেন। মানিকগঞ্জ পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সুভাষ চন্দ্র সরকার।
বিএনপি থেকে যারা মনোনয়ন চাইবেন তারা হলেন বিএনপির প্রয়াত মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের দুই ছেলে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার আব্দুল হামিদ ডাবলু ও জেলা বিএনপির কৃষিবিষয়ক সম্পাদক ড. খন্দকার আকবর হোসেন বাবলু, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক শিশু বিষয়ক সম্পাদক এবং জিয়া শিশু কিশোর সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সিরাজুল ইসলাম সেলিম, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এস এ জিন্নাহ কবীর। দৌলতপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক তোজাম্মেল হক তোজা। অপর দিকে সাবেক মন্ত্রী হারুনর রশিদ খান মন্নুর কণ্যা ও জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজ খান রিতাও এ আসন থেকে মনোনয়ন চাইবেন।
সব মিলিয়ে আগামী সংসদ নির্বাচনের জন্য এ আসন থেকে ১২ জন মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকলেও কার্যত মাঠে রয়েছেন আওয়ামী লীগের দুই জন প্রার্থী।
একজন বর্তমান সংসদ সদস্য এ এম নাঈমুর রহমান দুর্জয় ও আওয়ামী যবুলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম জাহিদ।
জাহিদ বিগত সময়ে সবচেয়ে বেশি মাঠে রয়েছেন। বিগত বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৩টি নির্বাচনী উপজেলায় ব্যাপক ত্রাণ বিতরণ করে আলোচনয় উঠে এসেছেন। বর্তমানে জাহিদ প্রতি সপ্তাহে দলীয় প্রগ্রামে অংশ নিতে বিভিন্ন এলাকা চড়ে বেড়াচ্ছেন।
অপর দিকে এ এম নাঈমুর রহমান দুর্জয় জাহিদের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য তিনিও বিভিন্ন সভা সমাবেশ নিয়ে ব্যাস্ত সময় পার করছেন। আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেট স্টেডিয়াম করার জন্য তিনি পাটুরিয়ার অদুরে সম্ভাব্য স্থান যাচাইসহ নানা পদক্ষেপ নিয়ে রাজনৈতিক মাঠ গরম রাখছেন।
সম্পতি তিনি ঘিওরে ক্রিকেট বোর্ড এর পক্ষ থেকে ত্রাণ দিতে বিশ্ব অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে এনে হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটিয়ে কৌশলে আগামী নির্বচনে নৌকায় ভোট প্রার্থনা করেন। দুর্জয়ও প্রতি সপ্তাহেই দলিয় কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছে।
বিএনপি প্রার্থৗদের মধ্যে প্রয়াত খন্দকার দেলোয়ার হোসেনর পুত্র অ্যাডভোকেট খন্দকার আব্দুল হামিদ ডাবলু এবং বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য এস এ জিন্নাহ কবীর মাঝে মাঝে নেতাকর্মিদের সাথে সমন্বয় করার চেষ্টা করছেন।
এই আসনে বিএনপির শক্তি শালি ৫ জন ও আওয়ামী লীগের ৪ জন প্রার্থী রয়েছে। আওয়ামী লীগের মধ্যে এগিয়ে আছেন বর্তমান সংসদ সদস্য সংসদ সদস্য এ এম নাঈমুর রহমান দুর্জয় ও আওয়ামী যবুলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম জাহিদ।
আর বিএনপির মধ্যে এগিয়ে আছেন বিএনপির প্রয়াত মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের দুই ছেলে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার আব্দুল হামিদ ডাবলু ও জেলা বিএনপির কৃষিবিষয়ক সম্পাদক ড. খন্দকার আকবর হোসেন বাবলু এবং জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এস এ জিন্নাহ কবীর।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন