বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ও সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেছেন, ‘বর্তমান সরকার লুটেরা সরকার। ভোটারবিহীন এ সরকার ক্ষমতায় এসে যেসব ওয়াদা দিয়েছিল তার একটিও বাস্তবায়ন হয়নি। প্রশ্ন ফাঁস, দুর্নীতি, মাদক, গুম-খুন ও রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরকার চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।’শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বাংলাদেশ জনদল (বিজেডি) এর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব বলেন।
বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, ‘এটা কোনো সরকার হলো, যে সরকার প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে পারে না, সে সরকার নাকি দুর্নীতি ঠেকাবে? প্রশ্নফাঁস আমাদের লজ্জার। প্রশ্ন ফাঁসের ফলাফল ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ হবে। জাতিগতভাবে দুর্নীতিপ্রবণতা তৈরি করবে।’গুম-খুন ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে বি চৌধুরী বলেন, ‘পৃথিবীর অন্য দেশে গুম হয় খুন হয় মানছি। কিন্তু পার্থক্য হলো, সেসব দেশে খুন হলে খুনি ধরা পড়ে, গুম হলেও উদ্ধার হয়, ফিরে আসে। কিন্তু আমাদের দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পুরোটাই ব্যর্থ। খুন হলে খুনী থাকে অধরা, বিচার হয় না। আর গুম হলে তো কথাই নেই। ফেরে না অথবা লাশ পাওয়া যায়। কেউ ফিরলেও কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলে।’
রেহিঙ্গা ইস্যুতে তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, আপনারা নাকি চুক্তি করে আসলেন? কি চুক্তি জনগণকে জানান না কেন? আমরা কি বুঝি না, জানি না? সই করেছেন কিন্তু তা বাস্তবায়নের টাইম (তারিখ) নাই, জাতিসংঘ মধ্যস্থতা করছে তার নামই নাই! এখন শুনতেছি রোহিঙ্গারা নাকি যাবে না, গেলেও মিয়ানমারে নয়, সেইফ জোনের ক্যাম্পে। তাহলে তাদের উপর যে নির্যাতন চলছে তা কি বন্ধ হবে? এসব ব্যাপারে সরকারের কোনো সফলতা নেই।তিনি বলেন, আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ভারত সহযোগীতা করেছে। ইন্দিরা গান্ধি আমাদের স্বাধীনতার দাবির পক্ষে সমর্থন আদায়ে ৮টি দেশ ঘুরেছেন। আপনি (প্রধানমন্ত্রী) রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিশ্বের ক’টি দেশের সমর্থন পেয়েছেন। চীনকে দূরে সরিয়ে দিয়েছেন। রাশিয়াও পাশে নেই। আর যে ভারতকে নিয়ে আপনাদের দাপট সেই ভারতও সমর্থনও দিলো না। এরপরেও নিজেদের সফল বলেন কি করে?
এ সরকার গণতন্ত্র, সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে না দাবি করে বিদরুদ্দোজা বলেন, ৮ বার বিদ্যুতের দাম বাড়ালেন? কার স্বার্থে? কি কথা দিয়েছিলেন? ভুলে গেছেন? এমন অবস্থায় সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন করে আবার ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখেন? সে আশা কখনো পূরণ হবে না।জনগণের মেরে দেয়া টাকা যায় কোথায়? খবর কি আসে না? কোন পণ্যটির দাম সাধারণের নাগালে। বেতন বাড়ান আপনার সরকারি চাকরিজীবীদের, আর ভোগে সাধারণ জনগণ। ১০ টাকায় চাল খাওয়াবেন বলেছিলেন। সে চাল এখন ৭০ টাকা। আমার তো মনে হয়, ‘তুলনা করলে বলবো সোনার চেয়ে চালের দাম বেশি।’বাংলাদেশ জনদলের চেয়ারম্যান ডা. এস এম শাহজাহানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) কমরেড খালেকুজ্জামান, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) এর সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি’র সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক, ন্যাপের মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন