বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আদালতের কাঠগড়ায় থাকবেন আর তারা (আওয়ামী লীগ) নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা চালবেন এমনটা হবে না বলে জানিয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
.
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে এক আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৩তম জন্মদিন উপলক্ষে এর আয়োজন করে যুবদল।
মোশাররফ হোসেন বলেন, এখন একটাই দাবি, আগামী নির্বাচন সকল দলের অংশগ্রহণে হতে হবে। এর জন্য এখন থেকে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড লাগবে। আওয়ামী লীগের নেতা-নেত্রী সরকারি সুবিধা নিয়ে হেলিকপ্টারে করে ভোট চাচ্ছেন। আর আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া আজকে আদালতের কাঠগড়ায় থাকবেন আর তারা (আওয়ামী লীগ) নির্বাচনের প্রচারণা চালাবেন, এটা হবে না।’
তিনি বলেন, এখন থেকেই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকতে হবে। তাই আমাদের নেত্রী বলেছেন দলীয় সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীও ১৯৯৬ সালের একই কথা বলেছিলেন। আজকে নিজের স্বার্থে তার কথা অস্বীকার করছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আজকে তিনি ইতিহাস বিকৃতির কথা বলছেন। যারা এ ধরনের কথা বলেন তারাই ইতিহাস বিকৃতি করছেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ১৭৩ দিন হরতাল করেছিলেন। সেদিন আওয়ামী লীগের দাবি গ্রহণ করে সুষ্ঠু নির্বাচন দিয়েছেন আমাদের নেত্রী। আজকে তিনি (শেখ হাসিনা) সেটা অস্বীকার করে সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে সংকটের সৃষ্টি করেছেন।’
আগামী নির্বাচন নিয়ে দেশের মানুষ উদ্বিগ্ন, কি ধরনের নির্বাচন হবে এমনটা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচন শেখ হাসিনার অধিনে হবে না।’
আওয়ামী লীগের দিকে দিকে ইঙ্গিত করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘উপযুক্ত সময়ে নির্বাচকালীন সরকারের একটি রূপরেখা দিবেন। সেই রূপরেখা মেনে নিয়ে দেশে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। আর যদি সেই পথে না এসে ২০১৪ সালের পথে হাঁটেন তাহলে জনগণ এবার তা গ্রহণ করবে না।’
নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সরকার রাজি না হয়, তহালে দেশের জনগণ রাস্তায় নেমে আসবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
বিএনপি এ বলেন, ‘সরকার আজকে ভীত। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে দলের সিনিয়র নেতাদেরকে সাজা দিয়ে তারা একটা নির্বাচন করে তথাকথিত পাতানো খেলা করে ২০১৪ সালের মত আবার ক্ষমতায় আশার স্বপ্ন দেখছে।
তিনি বলেন, ‘আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেখ হাসিনার অধিনে হতে পারবে না। এদেশের জনগণ মেনে নিবে না। এই জন্য ২০১৪ সালের নাটক জনগণ দেখেছে। আজকে এই প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন নিয়ম রক্ষার নির্বাচন। তিনি জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। বিদেশি বন্ধুদের সঙ্গে একই ধরনের কথা বলে প্রতারণা করেছেন। দেশের মানুষ দ্বিতীয়বারের মত এই পাতানো খেলা মেনে নিবে না।’
তারক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আশার প্রসঙ্গে দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, ‘আমরা যদি নির্বাচনের মাধ্যমে বিজয় ছিনিয়ে আনতে পারি, তাহলেই তারেক রহমান বীরের বেশে বাংলাদেশে ফিরে আসবে।’
যুবদল সভাপতি সাইফুল আলম নিরবের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব হাবীব উন নবী খান সোহেল, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সহ সংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সহ যুব বিষয়ক সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু, সিনিয়র সহ সভাপতি মুরতাজুল করিম বাদরু, যুবদল নেতা মামুন হামান, নুরুল ইসলাম নয়ন প্রমুখ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন