২৬ মে ২০০৫। ১৬ বছর বয়সের এক কিশোরের মাথায় উঠেছিলো টাইগারদের টেস্ট ক্যাপ। তাও আবার লর্ডসের মাঠে। দিন যত গড়িয়েছে, সময়ের সঙ্গে ততটাই পরিণত হয়েছে তার পারফরম্যান্স। বাংলাদেশের হয়ে সর্বপ্রথম ও একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে হাঁকিয়েছেন তিনটি ডাবল সেঞ্চুরি। নিশ্চয় বুঝে গেছেন, বলা হচ্ছে মুশফিকুর রহিমের কথা। কেবল টেস্ট নয়, ওয়ানডে আর টি-টুয়েন্টিতেও ধারাবাহিক পারফরম্যান্স তাকে এনে দিয়েছে মিঃডিপেন্ডেবলের তকমা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৫ বছর পূর্ণ করলেন মুশি।
ভদ্রলোকের খেলা ক্রিকেটে সর্বোচ্চ মর্যাদার ফরম্যাট টেস্ট। আর ক্রিকেটের তীর্থস্থান খ্যাত লর্ডস। একবার ভাবুন তো সেই লর্ডসে টেস্ট অভিষেক, একজন ১৬ বছরের কিশোরের পক্ষে ব্যাপারটা কি আদৌ কল্পনা করা সম্ভব? ঠিক ১৫ বছর আগে স্বপ্নিল মুহূর্তটা যাপনের আগে হয়তো নিজেও এমনটা ভাবেননি টাইগার ক্রিকেটে গেলো দশকের সবচেয়ে ধারাবাহিক পারফর্মার মুশফিকুর রহিম। সেইদিনটা কেবল মুশির জন্যই স্মরণীয় নয়, তাকে স্মরণে রাখবে খোদ লর্ডসও। লর্ডসের মাটিতে অভিষিক্ত হওয়া সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটারকে যে এদিনটায় খুঁজে পেয়েছিলো তার ইতিহাস মোড়ানো ২২ গজ।
ক্যারিয়ারে এখনও পর্যন্ত সাদা পোশাকে খেলেছেন ৭০ ম্যাচ। ৩৬ দশমিক চার সাত গড়ে করেছেন ৪ হাজার ৪১৩ রান। টাইগার ব্যাটসম্যানদের মধ্যে যা সর্বোচ্চ সংগ্রহ। টেস্ট ক্যাপ পাওয়ার ৫ বছরের মাথায় ১৭ তম টেস্টে এসে প্রথম দেখা পান তিন অংকের। পরের ১০ বছরে আরও ৭টি সেঞ্চুরি। যার মধ্যে তিনটিই পরিণত করেছেন ডাবল সেঞ্চুরিতে। শুরুটা ২০১৩ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গল টেস্টে। প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে হাঁকান দ্বি-শতক। লকডাউনের আগে সর্বশেষ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মিরপুর টেস্টেও তার নামের পাশে ছিল অপরাজিত ২০৩ রানের মারকাটারি এক ইনিংস। মাঝে একই প্রতিপক্ষের সঙ্গে ২০১৮ তে আছে আরও একটা দ্বি-শতক।
লাল-সবুজের প্রয়োজনে যেমন মাটি কামড়ে ধরে ক্রিজে থেকে সেশনের পর সেশন কাটিয়ে সামলেছেন বিপর্যয়। সাদা বলের সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটেও তার ব্যতিক্রম নয়। অসময়ে হাল ধরেছেন, দরকার হলে তাণ্ডব চালাতেও পিছপা হননি। যদিও একদিনের ২১৮টা ম্যাচে ২০৪ বার ব্যাট হাতে নেমে সংগ্রহ করা ৬ হাজার ১৭৪ রানে গড়টা ৩৬ দশমিক ৩,২। তবে ২০১৩ সালের পর থেকে ওয়ানডেতে মুশফিকের গড়টা চোখে লাগার মতো। ২০১৮ মৌসুমে তো ১৯ ম্যাচে ৫৫ গড়ে করেন ৭৭০ রান। টাইগার স্কোয়াডে তো একারণেই তিনি মিঃ ডিপেন্ডেবল।
পরিসংখ্যান বিচারে টি-টুয়েন্টি ফরম্যাটেই কিছুটা পিছিয়ে এমআর ফিফটিন। কিছু ক্যামিও ইনিংস থাকলেও এখনও শতকের দেখা পাননি। ৮৬ ম্যাচে ৭৭ ইনিংস খেলে করেছেন ১২৮২ রান।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন