বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে কত বারই তো চরম পরীক্ষার মুখোমুখি হয়েছেন লিওনেল মেসি। পায়ের মোহনীয় জাদুতে সেই পরীক্ষায় পাশও করেছেন। অনেক অনেকবারই ক্লাব বার্সেলোনাকে খাদের কিনারা থেকে উদ্ধার করে পরিয়েছেন শিরোপা সাফল্যের মুকুট। একক জাদুতে খাদের কিনারা থেকে উদ্ধার করেছেন আর্জেন্টিনা জাতীয় দলকেও। ২০১৮ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বেই যেমন, শেষ ম্যাচে দুর্দান্ত এক হ্যাটট্রিক করে মেসি একাই আর্জেন্টিনাকে তুলে দেন বিশ্বকাপে।
সময়ের চাকা ঘুরে আবারও চরম পরীক্ষার মুখোমুখি মেসি। কোপা আমেরিকার শিরোপা জয়ের দাবি নিয়েই ব্রাজিলে পা রেখেছে আর্জেন্টিনা। মেসি নিজেও পণ করেছেন, জাতীয় দলের হয়ে তিনি কিছু একটা জিতবেনই। কিন্তু মেসির আর্জেন্টিনার শিরোপা স্বপ্ন প্রথম ম্যাচেই ধাক্কা খেয়েছে। শিরোপা তো অনেক দূরের পথ। প্রথম ম্যাচে কলম্বিয়ার কাছে ২-০ গোলে হেরে বিশ্বসেরা মেসির আর্জেন্টিনার এখন কোয়ার্টার ফাইনালে উঠা নিয়েই দেখা দিয়েছে শঙ্কা।
সেই শঙ্কা মুছে শেষ আটের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে হলে আগামীকাল বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় ম্যাচে তাদের জিততেই হবে। এই সমীকরণই বলছে, কালকের ম্যাচটি মেসি এবং তার আর্জেন্টিনার জন্য চরম পরীক্ষা। বিশেষ করে মেসির জন্য। কালকের সেই পরীক্ষায় মেসিদের প্রতিপক্ষ প্যারাগুয়ে।
মেসিদের জন্য স্বস্তির, প্রতিপক্ষ প্যারাগুয়ের শুরুটাও ভালো হয়নি। প্রথম ম্যাচে ২-০ গোলে এগিয়ে গিয়েও তারা শেষ পর্যন্ত ২-২ গোলে ড্র হতাশায় পুড়েছে পুঁচকে কাতারের সঙ্গে। ফলে বেলো হরিজন্তের এস্তাদিও মিনেইরো স্টেডিয়ামের কালকের দ্বৈরথটি আসলে দুই দলের জন্যই বাঁচা-মরার লড়াই। মেসির জন্য পরীক্ষাটা একারণেই আরও বেশি কঠিন। কারণ, প্যারাগুয়েও চাইবে আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালের পথটা প্রশস্ত করতে।
তা চাইবে বটে। তবে প্যারাগুয়েইনদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স মেসিদের আশাবাদী করেই তুলতে পারে। নিজেদের সর্বশেষ ৬ ম্যাচে মাত্র একটিতে জিতেছে প্যারাগুয়ে। একমাত্র সেই জয়টাও দুর্বল গুয়েতেমালার বিপক্ষে। বাকি ৫ ম্যাচের দুটিতে হেরেছে। তিনটিতে ড্র করেছে। অন্য দিকে সর্বশেস ৬ ম্যাচের ৪টিতে জিতেছে আর্জেন্টিনা। হেরেছে দুটিতে। গত ১৫ জুন কলম্বিয়ার কাছে ২-০ গোলে হারার আগে ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে হেরেছিল ৩-১ গোলে। যেটি ছিল সাময়িক অবসর ভেঙে মেসির প্রত্যাবর্তন ম্যাচ।
অবশ্য অন্য একটি তথ্য প্যারাগুয়েকে অনুপ্রাণিত করবে। দুই দলের সর্বশেষ সাক্ষাতে জিতেছিল প্যারাগুয়েই। ২০১৬ সালের সেই ম্যাচটিতে প্যারাগুয়ে জিতেছিল ১-০ গোলে। যে ম্যাচে পেনাল্টি মিস করেছিলেন সার্জিও আগুয়েরো।
তবে এসব পরিসংখ্যা, ইতিহাস কেবলই আত্মতৃপ্তির উপদান মাত্র। জিততে হলে মাঠে খেলেই জিতবে হবে। পুরো আর্জেন্টিনাই তাকিয়ে আছে মেসির দিকে। মেসি নিজেও হয়তো চরম পরীক্ষায় পাশের সূত্রই খুঁজে ফিরছেন। পাশ না করতে পারলে শিরোপা স্বপ্ন জলাঞ্জলি দিয়ে ধরতে হবে বাড়ির পথ। দেহে প্রাণ থাকতে মেসি যে শেষের আগে স্বপ্ন শেষ হতে দিতে চাইবেন না, এটা না বললেও চলে।
উল্লেখ্য, ম্যাচটা শুরু হবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় ভোর সাড়ে ৪টায়।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন