শ্রীলঙ্কাকে এশিয়া কাপের গ্রুপপর্বে নাস্তানাবুদ করে আফগানিস্তান আগেই বার্তা দিয়েছিল তাদের বিপক্ষে লড়াই করা এত সহজ নয়। গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশকে লড়াই করার কোনো সুযোগ না দিয়েই একপেশে ম্যাচ জিতে নেয় দলটি। ব্যাটিং-বোলিং কোনো বিভাগেই বাংলাদেশ দাঁড়াতে পারেনি মাথা উঁচু করে।
আফগানিস্তানের দেওয়া ২৫৬ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে টাইগাররা ৪৭ বল বাকি থাকতেই ১১৯ রানে গুটিয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত ১৩৬ রানে রশিদদের কাছে পরাজয় বরণ করে নেয় মাশরাফিরা। আফগান বোলারদের দাপুটে বোলিংয়ের সামনে খুব অসহায় দেখাচ্ছিল টাইগার ব্যাটসম্যানদের।
ব্যাটিং-বোলিংয়ে বাংলাদেশের একমাত্র সফল খেলোয়াড় সাকিব আল হাসান। বোলিংয়ে চার উইকেট নেওয়ার পর ব্যাট হাতে করেন সর্বোচ্চ ৩২ রান। এ ছাড়া মাহমুদুল্লাহ (২৭) কিছুক্ষণ লড়াই করেও শেষ পর্যন্ত আউট হয়ে ফিরে যান সাজঘরে। শেষ দিকে মোসাদ্দেকের ব্যাট থেকে আসে ২৬ রান।
রশিদ খান ব্যাটিং-বোলিংয়ে দেখিয়েছেন অসাধারণ পারফরম্যান্স। ব্যাট হাতে অপরাজিত ৫৭ রান করা করার পর বল হাতে নিয়েছেন দুই উইকেট। আফগানিস্তানের হয়ে সামিউল্লাহ সেনওয়ারি ছাড়া সব বোলারই উইকেটের দেখা পেয়েছেন। নাইব-মুজিব নেন দুটি করে উইকেট। একটি করে উইকেট নেন আফতাব-নবী-রহমত।
এর আগে বাংলাদেশের বিপক্ষে নিয়মিত বিরতিতেই পড়ছিল আফগানদের উইকেট। কিন্তু শেষ দিকে নাইব-রশিদের জুটিতে ম্যাচ ছিটকে যায় টাইগারদের হাত থেকে। অষ্টম উইকেটে দুজনের এ জুটি থেকে আসে ৯৫ রান। শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভার খেলে সাত উইকেট হারিয়ে ২৫৬ রানের টার্গেট দেয় আফগানিস্তান।
আবুধাবিতে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন আফগান অধিনায়ক আসগর আফগান। খেলা শুরুর পর আবু হায়দার রনি ঝটপট দুই উইকেট তুলে নিয়েছিলেন ইনিংসের শুরুতেই। তবে আফগানরা ধাক্কা দ্রুত সামলে ওঠেন শাহজাদ-হাসমতুল্লাহর জুটিতে। এ জুটি থেকে আসে ৫১ রান। শাহজাদ ৩৭ রানে আউট হয়ে গেলে উইকেট পড়তে থাকে নিয়মিত বিরতিতে।
একপ্রান্তে তখনো আগলে ধরে রেখেছিলেন হাসমতুল্লাহ। তিনি ৫৮ রান করে সাজঘরে ফিরে যান। হাসমতুল্লাহ চলে গেলে নবী এসে ক্রিজে থিতু হওয়ার আগেই ফিরে যান। এরপর শুধুই রশিদ-নাইবের গল্প। এ দুজন অষ্টম উইকেটে জুটিতে ৫৬ বলে ৯৫ রান তুলেন। রশিদ ৩২ বলে ৫৭ এবং নাইব ৩৮ বলে ৪২ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন।
আঙ্গুলের ইনজুরির কারণে এশিয়া কাপ খেলা নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল সাবিক আল হাসানের। প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে সুবিধা করতে না পারলেও বোলিংয়ে নিয়েছিলেন এক উইকেট। তবে গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে বল হাতে জ্বলে উঠলেন দলের অন্যতম ভরসা সাকিব। চার আফগান ব্যাটসম্যানকে সাজঘরে পাঠিয়েছেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার।
দুই উইকেট নিয়েছেন আজই অভিষেক হওয়া পেসার আবু হায়দার রনি। এশিয়া কাপের গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচে উপলক্ষটাকে ভালোই কাজে লাগিয়েছেন রনি। তিন ওভারের দুর্দান্ত এক স্পেলে তুলে নিয়েছেন দুই আফগান ব্যাটসম্যানকে। এ ছাড়া রুবেল হোসেন নিয়েছেন এক উইকেট।
বাংলাদেশ-আফগানিস্তান আগেই এশিয়া কাপের সুপার ফোর নিশ্চিত করায় কাগজে কলমে এ ম্যাচে কোনো গুরুত্ব থাকছে না। ‘বি’ গ্রুপ থেকে দু’দলই শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে এশিয়া কাপের সুপার ফোর নিশ্চিত করে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন