মাত্র সাত বছর বয়সে যুদ্ধ ঘরছাড়া করেছিল লুকা মডরিচকে। সার্বিয়ান বাহিনীর গুলি ও বোমা থেকে বাঁচতে মডরিচ আশ্রয় নিয়েছিলেন জাদারের উদ্বাস্তু শিবিরের হোটেল কলোভারে। সেখানেই কেটেছে আট বছর। যুদ্ধের বিভীষিকা থেকে উঠে আসেন মডরিচ। রাশিয়া বিশ্বকাপ মডরিচের মতো আরও অনেক উদ্বাস্তুর উত্থানের গল্প লিখেছে। লিখেছে ঘৃণা ও উপেক্ষা জয় করে কী করে লিখতে হয় যুদ্ধবিরোধী ভালোবাসার গল্প।
এবারের বিশ্বকাপ উদ্বাস্তুদের বিশ্বজয়ের স্বপ্নময় অধ্যায়। ফ্রান্স দলের সেরা তরকাদের প্রায় সবাই উদ্বাস্তু। পল পগবা, মাতুইদি, কিলিয়ান এমবাপ্পে, উমতিতি, কান্তে- কেউই জন্মগতভাবে ফ্রান্সের অধিবাসী নন। ১৯৯৮ বিশ্বকাপজয়ী ফ্রান্স দলে মাত্র দু’জন ছিলেন মূল অধিবাসী। বাকিরা সবাই অভিবাসী।
রাশিয়া বিশ্বকাপে অংশ নেয়া ১০টি ইউরোপীয় দলে অভিবাসী খেলোয়াড় ছিলেন ৮৩ জন। তারাই নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইউরোপের। ফুটবলবিশ্বে ইউরোপের যে আধিপত্য, সেটা অভিবাসী ফুটবলারদের কল্যাণেই। সোনালি প্রজন্মের বেলজিয়াম দলের অন্যতম তারকা রোমেলু লুকাকু। তার শৈশবও কেটেছে উদ্বাস্তু শিবিরে। চরম দারিদ্র্য ও অবহেলা অতিক্রম করে আজ তিনি বিশ্বজয়ী এক ফুটবলার। বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় ফুটবল দলে রয়েছে অভিবাসী ফুটবলারের আধিক্য। সবচেয়ে বেশি ফ্রান্সে। ফ্রান্স জাতীয় দলের ৭৮.৩ শতাংশ ফুটবলার অভিবাসী। সুইজারল্যান্ডের ৬৫.২, বেলজিয়াম ও ইংল্যান্ডের ৪৭.৮, জার্মানির ৩৯.১ ও পর্তুগালের ৩০.৪ শতাংশ ফুটবলার অভিবাসী।
স্বদেশ থেকে বিতাড়িত, যুদ্ধতাড়িত প্রজন্মের এই ফুটবলাররা নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিশ্ব ফুটবলে। তাদের পায়ের ছন্দে ছন্দে খেলা করছে ভালোবাসার জয়গান। যুদ্ধের বিপরীতে তারাই রাশিয়ায় লিখেছেন শান্তির মহাকাব্য। ওয়েবসাইট।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন