ফুটবলের ‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ ফিফা বিশ্বকাপের ২১তম আসর করা নাড়ছে দোরগোড়ায়। ২০১৮ সালের ১৪ জুন থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত ৩২ দিনের এই ফুটবল মহাযজ্ঞের জন্য তৈরি রাশিয়া। রাশিয়া বিশ্বকাপের ম্যাচ গুলো অনুষ্ঠিত হবে দৃষ্টিনন্দন ১২টি স্টেডিয়ামে। এই চোখ ধাঁধানো স্টেডিয়ামগুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। আজ থাকছে ছয়টি স্টেডিয়ামের বর্ননা।
লুজনিকি স্টেডিয়াম
রাশিয়া বিশ্বকাপের শুরু এবং শেষটা হবে বিখ্যাত লুজনিকি স্টেডিয়ামে। স্টেডিয়ামটির অবস্থান রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে, মস্কোভা নদীর তীরে। ১৯৫৬ সালে নির্মাণ হওয়া এই স্টেডিয়ামের প্রথমে নাম ছিল সেন্ট্রাল লেনিন স্টেডিয়াম। ধারণ ক্ষমতার দিক দিয়ে এটি এবারের বিশ্বকাপের বৃহত্তর ভেন্যু। এই স্টেডিয়ামটিতে ৮১ হাজার দর্শক ধারণের ক্ষমতা রয়েছে।
সেইন্ট পিটসবার্গ স্টেডিয়াম
বিশ্বের অন্যতম ব্যয়বহুল স্টেডিয়ামগুলোর মধ্যে এটি একটি। ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি ব্যয়ে নির্মিত হয় এই স্টেডিয়ামটি। দেখতে গোলাকার মহাকাশযানের মতো স্টেডিয়ামটির ডিজাইন করেছেন জাপানি স্থাপত্য প্রতিষ্ঠান কিশো কুরোকাওয়া। প্রাক্তন কিরোভ স্টেডিয়ামের স্থানে নির্মিত এই স্টেডিয়ামটির নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০০৫ সালে এবং শেষ হয় এ বছরের এপ্রিল মাসে। এটি মূলত স্থানীয় এফসি জেনিত স্পোর্টস ক্লাবের স্টেডিয়াম। এই মাঠে ৬৮ হাজার দর্শকের খেলা দেখার ব্যবস্থা রয়েছে।
ফিশ্ট অলিম্পিক স্টেডিয়াম
৪৭৭০০ আসন বিশিষ্ট ফিশ্ট স্টেডিয়ামটি সচিতে অবস্থিত। এটি মূলত তৈরি করা হয়েছিল ২০১৪ সালের শীতকালীন অলিম্পিকের জন্য। সে সময় উদ্বোধনী এবং সমাপনী- উভয় অনুষ্ঠানই এই স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। অলিম্পিকের পর স্টেডিয়ামটির অব্যবহৃত ছিল। ফলে এটিকে ২০১৮ বিশ্বকাপের জন্য উপযোগী করা হয়। মাঠটির একটি বিশেষ বিশিষ্ট হলো এর ছাদ বন্ধ এবং খোলার ব্যবস্থা রয়েছে।
একটারিনবুর্গ এরিনা
অ্যাথলেটিক্স, আইস স্কেটিং সহ বহুমুখী খেলার জন্য ১৯৫৭ সালে এই স্টেডিয়ামটি নির্মিত হয়। শুরুতে এটির নাম ছিল সেন্ট্রাল স্টেডিয়াম এবং ধারণ ক্ষমতা ছিল ২৭ হাজার। ২০১১ সালে এর আধুনিকায়ন করা হলেও তা ফিফার মানদণ্ড অনুযায়ী হয়নি। পরবর্তীতে আবারো সংস্কার মাঠটির বর্তমান ধারণক্ষমতা ৪৫ হাজার।
সামারা স্টেডিয়াম
রাশিয়ার সামারা শহরের স্থানীয় ক্লাব ফুটবলের জন্য এই স্টেডিয়াম নির্মাণের পরিকল্পনা চলছিল। কিন্ত ২০১২ সালে শহরটিকে ২০১৮ বিশ্বকাপের আয়োজক নির্বাচিত করার পর সেই পরিকল্পনা থেকে সরে আসে কর্তৃপক্ষ। পরে এটিকে বিশ্বকাপের উপযোগী করে গড়ে তোলা হয়। সামারা স্টেডিয়ামের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো এর ৩২টি প্যানেলের সমন্বয়ে গঠিত ৬৫.৫ মিটার উচ্চতা বিশিষ্ট গম্বুজাকৃতির ছাদ। স্টেডিয়ামটির আসন সংখ্যা ৪৫ হাজার। স্টেডিয়ামটি সামারা অ্যারিনা এবং কসমস অ্যারিনা নামেও পরিচিত।
ভোলগোগ্রাদ অ্যারিনা
ভোলগোগ্রাদ অ্যারিনা স্টেডিয়ামটির অবস্থান রাশিয়ার দক্ষিণের ভোলগোগ্রাদ শহরে ভোলগা নদীর পাড়ে। প্রাক্তন সেন্ট্রাল স্টেডিয়ামের জায়গায় এটি নির্মাণ করা হয়। ২০১৪ সালে পুরাতন স্টেডিয়ামটি ভূমিসাৎ করার পর ২০১৫ সালে এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এই স্টেডিয়ামটির বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, এর তারের সাহায্যে ঝুলন্ত ছাদ এবং জালিকাবিশিষ্ট বাইরের আবরণ। এই মাঠের ধারণক্ষমতা ৪৫ হাজার। তবে বিশ্বকাপের পর উপরের সারির আসনগুলো সরিয়ে একে ৩৫ হাজার আসনে পরিণত করা হবে।
বাংলা ইনসাইডার
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন