বিপিএলের সদ্য শেষ হওয়া আসরে একাদশে ৫ বিদেশিকে খেলানোর কারণে দেশীয় ক্রিকেটারদের জায়গাটা সংকীর্ণ হয়ে যায়। অপ্রতুল সুযোগের পরও তারকা ক্রিকেটারদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পারফর্ম করে গেছেন কিছু উদীয়মান ক্রিকেটার। তেমনই একজন হলেন খুলনা টাইটানসের হয়ে খেলা আবু জায়েদ রাহী। আগামীর সম্ভাবনাময় এ ক্রিকেটার যুগান্তর অনলাইনের সঙ্গে একান্ত আলাপে কথা বলেছেন বিভিন্ন বিষয় নিয়ে। তার সেই সাক্ষাৎকারের চুম্বক অংশ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল।সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আল-মামুন
যুগান্তর: উইকেটের দুই পাশেই সুইং করানোর দক্ষতা আপনার রয়েছে। এটি কীভাবে রপ্ত করলেন?
আবু জায়েদ রাহী: আসলে আমি মূলত অ্যান্ডারসনকে ফলো করি। তার বোলিং আমার কাছে খুব ভালো লাগে। তার খেলা দেখে শেখার চেষ্টা করি। তবে আমাকে সারোয়ার ইমরান স্যার বলেছেন- এখন দেশে অনেক বেশি পেস বোলার আছে। আলাদা কিছু না করতে পারলে জাতীয় দলে ডাক পাওয়া যাবে না। মূলত ইমরান স্যারের পরামর্শেই এটি করেছি, তাতে সফলও হয়েছি।
যুগান্তর: বিপিএলে তিন আসরে খেলেছেন। অনেক বিদেশি ক্রিকেটারের সঙ্গ পেয়েছেন। অভিজ্ঞতা ভাগাভাগির সুযোগও হয়েছে?
আবু জায়েদ রাহী: বিপিএলের গত আসরে ঢাকা ডায়নামাইটসে থাকার সময় ডোয়াইন ব্রাভো আমাকে সবসময় উৎসাহ ও পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেতেন- তোমার বলে ভ্যারিয়েশন আছে। তা ছাড়া কুমার সাঙ্গাকারাও আমাকে উৎসাহ দিয়েছেন। মূলত তাদের উৎসাহের কারণে এবারের আসরে আমি আগের চেয়ে ভালো করার চেষ্টা করেছি, সফলও হয়েছি।
যুগান্তর: বিপিএলে খেলা তিন আসরের মধ্যে কোনটাকে এগিয়ে রাখবেন?
আবু জায়েদ রাহী: উইকেটের দিক থেকে বললে এবারের আসরকেই এগিয়ে রাখব। আগের দুই আসরের চেয়ে এবার অনেক ভালো হয়েছে।
যুগান্তর: ভালো হয়েছে বলছেন। যে লক্ষ্য নিয়ে বিপিএল শুরু করেছেন, সেটি পূর্ণ হয়েছে?
আবু জায়েদ রাহী: আসলে লক্ষ্য পূর্ণ হয়নি। টার্গেট ছিল, সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি হওয়া। তবে যা হয়েছে তাতেও আমি খুশি। আগামীতে এর ধারাবাহিকতা ধরে রেখে, আরও ভালো করার চেষ্টা করব।
যুগান্তর: বিপিএলের তিন আসরে খেলা কোন ম্যাচটিকে এগিয়ে রাখবেন?
আবু জায়েদ রাহী: এবারের বিপিএলের দ্বিতীয় ম্যাচটি আমার ক্যারিয়ারের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে। রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে সেই ম্যাচে আমি ক্রিস গেইলের বিপক্ষে বোলিং করেছিলাম। আমাকে রিয়াদ ভাই অনেক সাহস জুগিয়েছেন। তিনি বলেন, সাহস রাখো। ভালো জায়গায় বোলিং করো, দেখবে সফল হবে। আমার এখনও মনে আছে, আমার বল গেইল খেলতেই পারছিল না।
যুগান্তর: যুব বিশ্বকাপে আপনার সঙ্গে খেলা সৌম্য সরকার অনেক আগেই জাতীয় দলে জায়গা করে নিয়েছেন?
আবু জায়েদ রাহী: আসলে এটি ভাবলে নিজের কাছে হতাশ লাগে। তবে আমি হতাশ নই। একদিন সুযোগ আসবেই। সেই অপেক্ষায় আছি। সুযোগ পেলে নিজেদের সেরাটা দিয়ে চেষ্টা করব, জাতীয় দলে অবস্থান ধরে রাখতে।
যুগান্তর: বিপিএলে ভালো করা তরুণদের জাতীয় দলের সিস্টেমের মধ্যে নিয়ে আসার কথা ভাবছে বিসিবি?
আবু জায়েদ রাহী: আসলে সে অপেক্ষায়ই রয়েছি। অনেক দিন হল ক্রিকেট খেলছি, এখনও জাতীয় দলে সুযোগ পেলাম না। আমার সঙ্গে যারা যুবদলে খেলেছে, তারা এখন জাতীয় দলের অনিবার্য সদস্য।
যুগান্তর: আপনার এখন লক্ষ্য কী?
আবু জায়েদ রাহী: লক্ষ্য একটিই- জাতীয় দলে খেলা সুযোগ পাওয়া। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই স্বপ্ন দেখছি- একদিন জাতীয় দলের হয়ে খেলব। সেই অপেক্ষায় রয়েছি, যদি কখনও সুযোগ আসে নিজেকে প্রমাণ করার চেষ্টা করব। কারণ আমার বাবার স্বপ্ন ছিল আমি যেন ক্রিকেটার হই। জাতীয় দলে খেলি, কিন্তু ২০০৫ সালে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে বাবা আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। আমাকে নিয়ে বাবার যে স্বপ্ন ছিল, চেষ্টা করব সেই লক্ষ্য পূর্ণ করতে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন