দক্ষিণ আফ্রিকায় টাইগারদের বড় ভোগান্তির নাম স্বাগতিকদের ওপেনিং জুটি। তা সে যেই ওপেন করতে নামুক। ডিন এলগার-আইডেন মারকরাম জুটি কিংবা হাশিম আমলা-কুইন্টন ডি কক জুটি। ওপেনাররা ভোগাচ্ছেন টাইগারদের। এদিন হাশিম আমলার বদলে স্বাগতিকদের নতুন ওপেনিং জুটিও একই হাল করেছে টাইগারদের। রোববার শেষ ওয়ানডেতে কুইন্টন ডি ককের সঙ্গে টেম্বা বাভুমা যোগ দিলেও একই চিত্র। স্বাগতিকরা ১১৯ রানের উড়ন্ত সূচনা পাওয়ার পর আউট হন টেম্বা বাভুমা। টাইগারদের হয়ে ব্রেক থ্রু এনে দেন ওয়ানডে সিরিজে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা অফ স্পিনার মেহেদী হাসান।
মিরাজের বলে লং অন দিয়ে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে লিটন দাসের হাতে ধরা পড়েন বাভুমা। আউট হওয়ার আগে ৪৭ বলে ৪৮ রান করেছেন তিনি। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ২০ ওভারে ১ উইকেটে ১২৭ রান। হাফ সেঞ্চুরি পেরিয়েছেন ডি কক। এগিয়ে যাচ্ছেন সেঞ্চুরির সুবাস পাচ্ছেন। ৭১ রানে উইকেটে আছেন। নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে নেমেছেন অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসি। ৬ রান নিয়ে ব্যাট করছেন তিনি।
এদিন ফ্যাফ ডু প্লেসি টস জিতে ব্যাটিংটাই নিয়েছেন। আগের ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে রানের পাহাড় গড়েছিলেন তারা। বিরাট জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ জয়ও নিশ্চিত করে ফেলেছে তার দল। রোববারের এই অসম লড়াইটাও প্রোটিয়াদের জন্য প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করার। আর বাংলাদেশের জন্য এটি হোয়াইটওয়াশের লজ্জা এড়ানোর।
এর আগে এদিন তামিম ইকবালের জায়গায় সৌম্য সরকার এবং নাসির হোসেনের জায়গায় মেহেদী হাসান মিরাজ খেলতে নামেন। সফরে প্রথম ওয়ানডে খেলতে নেমে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার সাথে নতুন বলই হাতে পেয়েছিলেন মিরাজ। কিন্তু বাংলাদেশের বিস্ময় অফ স্পিনারকে তার প্রথম ওভারেই তিনটি বাউন্ডারির মার উপহার দিলেন কুইন্টন ডি কক। ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারে ১২ এক বোলারের কাছ থেকে। দক্ষিণ আফ্রিকা ইস্ট লন্ডনে কয়েকটি পরিবর্তন এনেও শুরুটা বরাবরের মতো ভালোই করেছে। পরের ওভারে আর মেহেদীর হাতে বল দেওয়ার সাহস করেননি মাশরাফি। পরে সেই মিরাজ এনে দিয়েছেন প্রথম সাফল্য।
টেস্টে অভিষিক্ত এবং সেঞ্চুরিয়ান আইডেন মারকরামের ওয়ানডে অভিষেক হয়েছে। ভবিষ্যতের জ্যাক ক্যালিস যাকে বলা হচ্ছে সেই ১৯ বছরের অল রাউন্ডার উইয়ান মালডারের আন্তর্জাতিক অভিষেকের ম্যাচ এটি। টেম্বা বাভুমা একটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছেন আগে। ছোটোখোটো বিস্ফোরক ব্যাটসম্যান আইরিশদের বিপক্ষে সেই ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছিলেন। হাশিম আমলা, জেপি ডুমিনি বিশ্রামে।
নাসির হোসেন প্রথম দুটি ম্যাচে খেলার সুযোগ পেয়েও বলার মতো কিছু করতে পারেননি। মিস্টার ফিনিশারের বদলে তাই মেহেদীকে ঢোকানো হয়েছে টাইগার দলে। আর তামিম ইনজুরির কারণে বাকি ম্যাচগুলোতে আর খেলতে পারবেন না। ওয়ানডে সিরিজে দ্বিতীয় ম্যাচটি খেললেও প্রথমটি খেলতে পারেননি তিনি। মোস্তাফিজুর রহমানও ইনজুরির কারণে দেশে ফিরছেন। চোট জর্জর বাংলাদেশ দল বড় কঠিন পরীক্ষাতেই। বোলাররা এই সফরে যে কোনো প্রভাবই রাখতে পারেননি। ব্যাটসম্যানদের অবস্থাও তথৈবচ।
অধিনায়ক হিসেবে ৫০তম ম্যাচ খেলতে নামছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। বাংলাদেশ বরাবরই মাইলফলকের ম্যাচগুলো ভাল খেলে। মাশরাফির এই ব্যক্তিগত মাইলস্টোন স্পর্শের দিনে উদ্বুদ্ধ হয়ে মাঠে ভাল খেলতে পারলে টাইগাররা তাদের হারানো আত্মবিশ্বাস অনেকটাই ফিরে পাবে।
বাংলাদেশ দলঃ মাশরাফি বিন মুর্তজা (অধিনায়ক), ইমরুল কায়েস, সৌম্য সরকার, লিটন দাস, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মেহেদী হাসান মিরাজ, মুশফিকুর রহীম, রুবেল হোসেন, সাব্বির রহমান, সাকিব আল হাসান, তাসকিন আহমেদ।
দক্ষিণ আফ্রিকা দলঃ ফ্যাফ ডু প্লেসি (অধিনায়ক), আইডেন মারকরাম, কুইন্টন ডি কক, এবি ডি ভিলিয়ার্স, টেম্বা বাভুমা, ফারহান বেহারডিন, উইয়ান মালডার, ইমরান তাহির, ড্যান প্যাটারসন, আন্ডিলে ফেহলুকওয়ায়ো, কাগিসো রাবাদা।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন