মহাকাশে অ্যান্টি-স্যাটেলাইট মিসাইল পরীক্ষা চালাল ভারত। বুধবার এই মিসাইল দিয়ে মহাকাশে কাজে না লাগা একটি স্যাটেলাইট ধ্বংস করেছে দেশটি।
মূলত মহাকাশে শত্রুরাষ্ট্রের স্যাটেলাইটে হামলা চালানোর জন্যই এই মিসাইল তৈরি করে থাকে ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলো। স্যাটেলাইটকে অকেজো করে দেওয়া বা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার পাশাপাশি ব্যালিস্টিক মিসাইল থামিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা আছে অ্যান্টি-স্যাটেলাইট মিসাইলের।
১৯৫৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রে মহাকাশে স্যাটেলাইট বিধ্বংসী এই ক্ষেপণাস্ত্রের প্রথম পরীক্ষা চালায়। যখন মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠানোই ছিল নতুন ঘটনা। সে সময়ই অ্যান্টি-স্যাটেলাইট মিসাইল অর্জন করে ফেলে যুক্তরাষ্ট্র।
বোল্ড ওরিয়ন নামে অ্যান্টি-স্যাটেলাইট মিসাইলটি মহাকাশে নিক্ষেপ করা হয় বোমা বহনকারী একটি আকাশযান (বোমবার) থেকে। সেটি এক্সপ্লোরার-৬ নামে একটি স্যাটেলাইটের খুব নিকট দিয়ে চলে যায়। তবে পরীক্ষামূলক হওয়ায় মিসাইলটিতে কোনো ধরনের বিস্ফোরক ছিল না। নয়তো স্যাটেলাইটটি ধ্বংস হয়ে যেত।
কাছাকাছি সময়েই রাশিয়া তটকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নও একই ধরনের মিসাইলের পরীক্ষা চালায় মহাকাশে। অরবিটে শত্রুর স্যাটেলাইট ধ্বংস করার উদ্দেশ্যেই ৬০ দশকের শেষ থেকে ৭০ দশকের শুরুর দিকে রুশ বিজ্ঞানীরা এ অভিযান পরিচালনা করে।
১৯৮৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র এজিএম-১৩৫ নামে আরেকটি অ্যান্টি-স্যাটেলাইট মিসাইলের পরীক্ষা চালায়। এফ-১৫ যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া এ মিসাইল মহাকাশে সোলউইন্ড পি৭৮-১ নামে একটি মার্কিন স্যাটেলাইট ধ্বংস করে।
এরপর ২০ বছর মহাকাশে স্যাটেলাইট বিধ্বংসী কোনো ধরনের মিসাইলের পরীক্ষা চালায়নি কেউ।
২০০৭ সালে এসে আরেক ক্ষমতাধর রাষ্ট্র চীন এ মিসাইল অর্জন করে। তারা সে বছর পুরোনো একটি আবহাওয়া সংক্রান্ত স্যাটেলাইট ধ্বংস করে প্রথমবারের মতো এই মিসাইল পরীক্ষা চালায়। তবে মহাকাশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি স্যাটেলাইট অংশবিশেষের মেঘ সৃষ্টি হয় সেবার।
পরের বছর যুক্তরাষ্ট্র একটি অকেজো স্পাই স্যাটেলাইট ধ্বংস করে অ্যান্টি-স্যাটেলাইট মিসাইল দিয়ে।
মূলত যেসব স্যাটেলাইট দিয়ে শত্রু রাষ্ট্র গোয়েন্দাবৃত্তি চালায় সেগুলোকে ধ্বংস করাই এই অ্যান্টি-স্যাটেলাইট মিসাইলের কাজ। এ কোনো যুদ্ধে এগিয়ে থাকার বড় ধরনের অস্ত্র হিসেবে বিবেচনা করা হয় এ মিসাইলকে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন