ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক মাধ্যম ইউজারদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর বলে স্বীকার করেছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।শুক্রবার ফেসবুকে প্রকাশিত একটি ব্লগ পোস্টে ফেসবুকে কর্মরত গবেষক বিজ্ঞানী ময়েরা বার্ক একথা জানান।ফেসবুকে কর্মরত গবেষকরা দেখেছেন, ফেসবুকে 'নিস্ক্রিয়ভাবে তথ্য গ্রহণ' করার ফলে মানুষের মনে হতাশার জন্ম নেয়।
ফেসবুকের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট চামাথ পালিহাপিটিয়া সম্প্রতি ফেসবুকের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, ‘আমরা যে স্বল্পস্থায়ী, উম্মাদনায় ভরা ফিডব্যাক লুপ বা প্রতিক্রিয়া দেখার সুযোগ তৈরি করেছি সেগুলো সমাজকের কার্যকারিতা নষ্ট করে দিচ্ছে।’
পালিহাপিটিয়ার মন্তব্যের মাত্র কিছুদিন পরেই মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপর ফেসবুকের ক্ষতিকর প্রভাব স্বীকার করে নিয়ে সামাজিক মাধ্যমটি এই বক্তব্য দিল।
২০১৭ সালে ফেসবুক বিভিন্ন কারনে সমালোচিত ছিল। রাশিয়া ফেসবুক ব্যবহার করে আমেরিকার নির্বাচনকে প্রভাবিত করায় অভিযোগ তদন্ত শুরু হয়েছে। এছাড়াও সমাজে ঘৃণা ও বিদ্বেষ ছড়ানো ও ভুয়া সংবাদ প্রচারে সহায়তা করায় সমালোচিত ছিল ফেসবুক।
একই সাথে বিভিন্ন দেশের নিপীড়ক সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা ও প্রতিবাদ করে দেয়া পোস্ট গায়েব করে দেয়ায় বিভিন্ন দেশের আন্দোলন কর্মীরাও ফেসবুকের সমালোচনা করে আসছে।
গবেষণায় বার বার দেখা গেছে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম মানুষের স্বাস্থ্যের উপর বিভিন্ন নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তবে ফেসবুকের গবেষণা বিভাগের প্রধান ডেভিড গিন্সবার্গ ও ময়েরা বার্ক ওইসব গবেষণার সিদ্ধান্তকে চূড়ান্ত বলে মানতে নারাজ। তারা দাবি করেছেন ইউজাররা তাদের আচরণ পরিবর্তন করলে ফেসবুক দিয়ে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করাও সম্ভব।
ফেসবুক থেকে সুফল পেতে মানুষের বিশেষ করে পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের সাথে যোগাযোগ বাড়িয়ে দিতে হবে। ময়েরা ও বার্ক দেখেছেন যেসব ছাত্র নিজেদের প্রোফাইলে বেশি সময় করেছেন তাদের আত্মবিশ্বাস আগের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে।
অন্যদিকে যারা বিভিন্ন অপরিচিত মানুষ বা পেজ বেশি ফলো করেছেন তাদের ফেসবুক তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলেছে। যারা গড়পড়তা ফেসবুক ব্যবহারকারীদের চেয়ে চারগুন বেশি লাইকে ও শেয়ার করেন তাদের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ।
ব্লগপোস্টে ফেসবুক একটি গবেষণার কথা উল্লেখ করেছে, যেখানে বলা হয়েছে মোবাইল ফোন সবাইকে 'একসঙ্গে একা' বানিয়ে ফেলছে। এটি কিশোর-কিশোরীদের মানসিক অবসাদও বাড়িয়ে দিচ্ছে।
দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী মার্ক জুকারবার্গ একটি বক্তৃতায় ক্ষমা চেয়েছেন এবং তার নতুন লক্ষ্য হবে পৃথিবীর মানুষকে আরও কাছাকাছি নিয়ে আসা।
ব্লগপোস্টে ফেসবুক জানায়, তারা তাদের বাজে অভিজ্ঞতাগুলো কাটিয়ে উঠতে বছর শেষে নতুন কয়েকটি টুল চালু করেছে।
শুক্রবার ফেসবুক একটি নতুন 'স্নুজ' অপশন চালু করেছে তাদের সাইটে। 'স্নুজ' দিয়ে ইউজাররা যেকোনো একাউন্টের খবরাখবর পাওয়া ২৪ ঘণ্টা থেকে এক মাসের জন্য বন্ধ রাখতে পারবেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন