প্রায় দেড় বছর আগে কণ্ঠশিল্পী আকবর মারা গেছেন। এক সন্তানকে নিয়ে মিরপুরে বসবাস করছেন স্ত্রী কানিজ ফাতেমা। আকবরের ব্যবহৃত ফেসবুক অ্যাকাউন্টটিই তিনি ব্যবহার করেন। এই অ্যাকাউন্টেই জানালেন নিজের কষ্টের কথা, জানালেন আর্তনাদ।
এক পোস্টে লিখেছেন, আমাদের এই নিষ্ঠুর সমাজে স্বামী ছাড়া মেয়েরা মূল্যহীন। স্বামী না থাকলে সমাজের কেউ মেয়েদের কে মানুষই মনে করে না।আচ্ছা কেউ কি চাই স্বামী তার আগে মারা যাক। হয়ত সমাজের সবচেয়ে খারাপ মেয়েটিও সেটা চায় না। কারণ একটা মেয়ের জীবনে সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ হলো স্বামী। স্বামীকে ছাড়া থাকতে একটা মেয়ের যে ভেতরে কতটা যন্ত্রণা হয় সেটা বাহির থেকে কেউ বুঝবে না। প্রতিটা মুহূর্তে মেয়েটা যে ভেতরে ভেতরে পুড়ে ছাই হয়ে যায় সেটা কেউ দেখতে পায় না।
তিনি বলেন, অথচ সমাজের নিষ্ঠুর মানুষগুলো প্রতিটা মুহূর্তে অপমান,অবহেলা,অবজ্ঞা করেই যায়। কারণ মেয়েটি বিধবা। সবাই ভাবে বিধবা বলে তার কখনো কষ্ট হয় না,কখনো খারাপ লাগে না,সবচেয়ে বড় কথা বিধবা বলে মেয়েটির কোনো মনই নাই। স্বামী নাই বলে সবকিছু মুখ বুজে সহ্য করতে হবে। যার যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে অপমান করবে। অন্যায় না করলেও অপরাধী হয়ে থাকতে হবে। কখনো প্রতিবাদ করা যাবে না। আর যদিও ভুলে কখনো কোনো অন্যায়ের প্রতিবাদ করেও ফেলে তাহলে তাকে ফাঁসির আসামি হতে হবে। কিন্তু কেন?
কানিজ ফাতেমা আর্তনাদ জানিয়ে বলেন, আল্লাহ আর নিতে পারছি না। আর সহ্য করতে পারছি না। কেন এই সমাজে আমাকে মানুষ হিসেবে পাঠালে? কেন আমাকে বিধবা বানালে?যতই নিজেকে মানসিকভাবে শক্ত ভাবি না কেন জীবনের এই যুদ্ধে আমি হেরে যাচ্ছি। বেঁচে থেকেও প্রতিটা মুহূর্তে আমি ভেতরে ভেতরে মরে যাচ্ছি। আল্লাহ এমন পরিস্থিতিতে তুমি আর কাউকে মুখোমুখি করো না।
গায়ক হিসেবে পরিচিতি পাওয়ার আগে যশোরে রিকশা চালাতেন আকবর। খুলনার পাইকগাছায় জন্ম হলেও আকবরের বেড়ে ওঠা যশোরে। ২০০৩ সালে যশোর এম এম কলেজের একটি অনুষ্ঠানে গান গেয়েছিলেন আকবর। বাগেরহাটের এক ব্যক্তি আকবরের গান শুনে মুগ্ধ হন। তিনি ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’তে চিঠি লেখেন আকবরকে নিয়ে। এরপর ‘ইত্যাদি’ কর্তৃপক্ষ আকবরের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ওই বছর ‘ইত্যাদি’ অনুষ্ঠানে কিশোর কুমারের ‘একদিন পাখি উড়ে’ গানটি গেয়ে রাতারাতি পরিচিতি পেয়ে যান আকবর।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন