জ্ঞান-বিজ্ঞান ও উন্নয়নের যুগ চলছে। যুগের প্রেরণায় নারীরা উন্নয়ন কর্মে শামিল হচ্ছে। সমাজের চাকা গতিশীল হচ্ছে। কিন্তু নৈতিক ও মনস্তাত্ত্বিক দেউলিয়াপনা সমাজে অস্বস্তিকর অবস্থা তৈরি করছে। আজকে সমাজে নৈতিক অবক্ষয় চরমে পৌঁছেছে। পত্রিকার পাতা উল্টালেই পাষণ্ডদের শিশু নির্যাতনের খবরে ব্যথিত হই। অথচ ইসলাম যুদ্ধের ময়দানেও পরাজিত নারী ও শিশুর নিরাপত্তা দিয়েছে।
বিদ্যাপীঠেও নারীরা নিরাপদ নয়। শিক্ষকের নির্যাতনে দেশবাসী শঙ্কিত। পাপ কখনও গোপন থাকে না। চরিত্র হারাল যার, সব হারাল তার।
প্রগতির নামে অবাধ মেলামেশা-ব্যভিচারের অন্যতম কারণ। দাম্পত্য কলহেও ব্যভিচারের পথ তৈরি হয়। আল্লাহ জিনা কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে বলেন, ‘আর তোমরা জিনার ধারে কাছে যেও না এটা নিশ্চিত অশ্লীল ও নিকৃষ্ট আচরণ।’
ইসলাম মানব সমস্যা সমাধানে যুগোপযোগী জ্ঞান-ভাণ্ডার। আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ ও তার রাসূল (সা.) কোনো বিষয়ে নির্দেশ দিলে কোনো মুমিন নর ও কোনো মুমিন নারী সে বিষয়ে ভিন্নমত পোষণের অধিকার রাখে না।’ আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন, ‘এবং তোমরা বিবাহ করবে নারীদের মধ্যে যাকে তোমাদের ভালো লাগে, দুই, তিন অথবা চার। আর যদি আশঙ্কা কর যে, সুবিচার করতে পারবে না তবে একজনকে।’ একাধিক বিবাহ বৈধ করার পেছনে সঙ্গত কারণ রয়েছে। পুরুষের চেয়ে নারীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়া ও স্ত্রী সন্তান ধারণে সক্ষম না হলে বংশধারা রক্ষা করা এবং চিররুগ্ন স্ত্রীর স্বামী ব্যভিচারের আশঙ্কা থেকে। সুবিচার অর্থাৎ স্ত্রীদের মধ্যে সমতা বিধান- এই অলঙ্ঘণীয় শর্ত সাপেক্ষে একাধিক বিয়ের অনুমতি দেয়া হয়েছে।
হজরত উম্মে সালমা (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘কোনো নারী তার স্বামীকে সন্তুষ্ট করে মরলে বেহেশতে যাবে।’ (কিন্তু স্বামীর শরিয়তবিরোধী কাজে সন্তুষ্টি রাখা যাবে না) তিরিমিজি।
সুশিক্ষায় একটি আদর্শ পরিবার গড়ে ওঠে। পরিবারই সমাজের দর্পণ। সুস্থ সুন্দর পরিবার সমাজের উজ্জ্বল মুখচ্ছবি। সব মা-বাবা সন্তানের কল্যাণ কামনা করেন। কিন্তু গুণগত পরিচর্যার অভাবে সন্তান পথহারা হয়। নষ্ট সন্তান সমাজের বিপর্যয় বয়ে আনে। রাসূল (সা.) বলেন, ‘তোমরা তোমাদের সন্তানদের স্নেহ কর এবং ভালো ব্যবহার শিখাও।’ ভালো ব্যবহার শিখানই সন্তানদের জন্য উত্তম উপহার।
ইসলামের বিধিবিধান অনুসরণ না করে সমাজে কখনও শান্তি ফেরান যাবে না। আসুন ইসলামী জ্ঞানের সঙ্গে প্রযুক্তি জ্ঞানের সমম্বয় সাধনে পরিবার তথা সমাজের কাঙ্ক্ষিত আশা পূরণ করি।
লেখক : অধ্যাপক, চৌধুরী ছবরুন্নেছা মহিলা কলেজ, শেরপুর
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন