:বন্ধু বইমেলায় যাবি?
:নারে বন্ধু। বসন্ত আর ভালোবাসা দিবসে গিয়েছিলাম! মনে হলো রমনা পার্কে গিয়েছি। আর লাল হলুদ যুগল দেখতে দেখতে নিজেরে এখন কালার ব্লাইন্ড মনে হচ্ছে।
:কি যে বলিস না! চল তো বইমেলায়! এক বন্ধুর বইয়ের মোড়ক উন্মোচন আছে।
:না দোস্ত মোড়ক উন্মোচন মঞ্চে আমার যেতে ভালো লাগে না।
:কেন?
:ছোটবেলায় ভাবতাম বই লিখতে পারে মহৎ জ্ঞানী ব্যাক্তিরা। এ ছাড়া বই লিখা সম্ভব না। কিন্তু এখন বইমেলায় দেখি সবাই বই লিখে। মোড়ক উন্মোচন মঞ্চে এমন এমন মানুষদেরকে দেখি যারা জীবনে একটি বই মনোযোগ দিয়ে পড়েছেন কি না তা সন্দেহ। সাহিত্যচর্চা কথা তো দূরের কথা। কেউ কেউ তো আমাকে বলে ফেলে, হিমু তুইও একটা বই লিখে ফেল! শিরোনাম দিবি ইনসাইড হিমু।সত্যিই কি আমি বই লিখতে পারবো!
:আরে পারবি না কেন বই লিখতে। শোন, একজন প্রকাশককে ম্যানেজ করলেই পারবি। আমার বন্ধু, যার বই প্রকাশ হচ্ছে, ওখানে তো ওর নাম নাই।
:মানে?
:তার বই লেখার খুব খায়েশ, তাই সে বই লিখসে আর তার এলাকার এমপির নামে বইটা প্রকাশ পাচ্ছে। এখন নাম নাই তো কি হয়েছে, সে চায় তার লেখা বইটার জন্য হলেও আমরা যেন যাই। আর অবাক হয়ে লাভ নেই। এটাই স্বাভাবিক। চল যাই বইমেলায়।
বন্ধুর কথার টানে গেলাম বইমেলায়। ও মা সে কি কাণ্ড! এক স্টলের সামনে তো ঘেষাই যাচ্ছে না।
:কিরে বন্ধু এখানে আবার কি হলো?
:লেখক আসছে মনে হয় তাই না? তু্ই খুব প্রশ্ন করিস! নিশ্চয়ই কোন টিভি চ্যানেল লাইভ করছে। সে জন্য সব গিয়ে ওখানে জমায়েত করছে। আর না হয় কোন সেলিব্রেটি আসছে নিজের প্রমোশন করতে! আজকাল বইমেলায় মানুষ বই কিনে কম। এগুলা করে বেশি। এটাতো কমই। লেখকও চিনেই না! সেদিন শুনলাম আনিসুল হকের বই কিনে ইমদাদুল হক মিলনের কাছে অটোগ্রাফ চাইসে এক পোলা।
সেলফি তোলার নেশায় বই কিনে মলাট খুলে লেখকের ছবিটা পর্যন্ত দেখে নাই। আজব পাবলিক। খালি এক হুমায়ূন আহমেদকেই চেনে! তার বই পড়ুক আর নাই পড়ুক।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন