সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জে প্রকাশ্যে পিস্তল উঁচিয়ে মাঠ গরম করেন নিয়াজুল ইসলাম খান। কেন তিনি পিস্তল বের করেছিলেন? ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থেকেও বরাবরের মতোই নিজস্ব স্টাইলে কারণগুলো ব্যাখ্যা করেছেন রস+আলোর গবেষক দল।
১. কদিন আগে নিয়াজুল ইসলাম খান নতুন একটা পিস্তল কিনেছিলেন। কিন্তু সেটার লাইসেন্স করা হয়নি। তাই তিনি সেদিন পিস্তল লাইসেন্স করার নিয়মকানুন সম্পর্কে জানতে সিটি মেয়রের কাছে গিয়েছিলেন।
২. তীব্র শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত। রাজনীতির মাঠও রেহাই পায়নি শীতের কবল থেকে। ঠান্ডায় জমে যাওয়া নেতা-কর্মীরা ঠিকমতো কাজও করতে পারছিলেন না। এটা দেখে ত্রাতা হিসেবে এগিয়ে যান নিয়াজুল। পিস্তল উঁচিয়ে চেষ্টা করেন ঠান্ডা রাজনীতির মাঠকে গরম করতে এবং তিনি সফলও হন।
৩. শখের বিজ্ঞানী নিয়াজুল ইসলাম খান দীর্ঘদিন গবেষণা করে পিস্তলটি উদ্ভাবন করেছিলেন। উদ্ভাবিত পিস্তল ঠিকভাবে কাজ করে কি না, সেটা পরীক্ষা করে দেখার জন্যই তিনি পিস্তল উঁচিয়ে মেয়রের দিকে এগিয়ে যান।
৪. নিয়াজুল ইসলাম খান ফেসবুকে নতুন প্রোফাইল পিকচার আপলোড করবেন বলে ভাবছিলেন। কিন্তু কেউই তাঁর ছবি তুলে দিচ্ছিল না। ডিএসএলআর ক্যামেরাওয়ালা বন্ধুরা নানা বাহানা এবং ছবি তোলার বিনিময়ে ট্রিট দাবি করছিল। তাই তিনি বুদ্ধি করে বের করলেন কীভাবে ফ্রি ছবি তোলা যায়। সেই উদ্দেশ্যেই মেয়রের দিকে পিস্তল উঁচিয়ে এগিয়ে যান তিনি। ফলে না চাইতেই সাংবাদিকেরা নিয়াজুলের অনেক ছবি তুলে ফেলেন। কেউ কেউ তো ভিডিও পর্যন্ত করে ফেলেন! এখন শুধু সাংবাদিকদের কাছ থেকে শেয়ারইট দিয়ে ছবিগুলো সংগ্রহ করে ফেসবুকে আপলোড দেওয়ার অপেক্ষা।
৫. নিয়াজুল ইসলাম খান আসলে একজন খেলনা পিস্তল ব্যবসায়ী। ‘ঠুসঠাস টয়’ নামে তাঁর একটা দোকানও আছে। সেদিন তিনি মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর সমর্থকদের কাছে দোকানের খেলনা পিস্তল বিক্রি করতে চেয়িছিলেন। এ জন্য ‘এই পিস্তল কিনবেন, পিস্তল...’ বলতে বলতে স্যাম্পল হিসেবে একটি পিস্তল উঁচু করে সাধারণ জনতার দিকে এগিয়ে যান। কিন্তু উপস্থিত জনতার সম্মিলিত চিৎকারে তাঁর কথা ঢাকা পড়ে যায়।
৬. গুলি ছোড়ার সময় বন্দুক কেন পশ্চাৎবেগ প্রাপ্ত হয়? পদার্থবিজ্ঞানের মনোযোগী ছাত্র নিয়াজুল ইসলাম সে প্রশ্নের উত্তর পেতেই পিস্তলসহ রাস্তায় নেমেছিলেন। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, গুলি ছোড়ার পর পশ্চাৎবেগ প্রাপ্ত হয়েই তাঁর পিস্তলটি হারিয়ে যায়!
৭. সৃজনশীল নিয়াজুল মেয়রকে সারপ্রাইজ গিফট দিতে জনসমক্ষে পিস্তল বের করেছিলেন। পিস্তলের ট্রিগার চাপ দেওয়ামাত্রই বুলেটের বদলে লাল গোলাপ বের হওয়ার কথা ছিল। তাড়াহুড়া করে বের হওয়ার সময় ভুলে খেলনা পিস্তল নিয়ে গিয়েছিলেন।
৮. সম্প্রতি বলিউডে মুক্তি পাওয়া সালমান খান ও ক্যাটরিনা কাইফ অভিনীত টাইগার জিন্দা হ্যায় সিনেমার কিছু অংশের শুটিং করা হয়েছিল নারায়ণগঞ্জে। শুটিং দেখতে গিয়ে নিয়াজুল পিস্তলটি কুড়িয়ে পান। রাস্তায় সবার সামনে সেই পিস্তল প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করতে গিয়েই বেধে যায় যত ঝামেলা।
৯. এই শীতে নারায়ণগঞ্জে মশার অত্যাচার বেড়ে গেছে আশঙ্কাজনক হারে। সিটি মেয়র মশা তাড়াতে ব্যর্থ। তাই নিয়াজুল পিস্তল ব্যবহার করে মশা তাড়ানোর বুদ্ধি দিতে গিয়েছিলেন। সবাই তাঁকে ভুল বুঝেছে।
১০. পিস্তল কী জিনিস, নিয়াজুল আসলে জানতেন না! রাস্তায় নামার পর কে বা কারা তাঁর হাতে একটি কালোমতো বস্তু ধরিয়ে দিয়ে বলে, ‘বাবু, এইটা ফুটাও। অনেক শব্দ হবে।’ শিশুর মতো সরল নিয়াজুল সেটা হাতে নিয়ে ট্রিগারে চাপ দিয়েছিলেন। তারপর ইতিহাস!
prothomalo
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন