২০০৮ সালে ১৮ এপ্রিল মাসে গোপনে বিয়ে হয়েছিল শাকিব খান আর অপু বিশ্বাসের। শাকিবের ঢাকার বাসায় এই বিয়ে হয়। পরিবারের কাছের লোকজন সেই বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন। বিয়ের সময় অপু বিশ্বাসের নাম মুসলিম ধর্মমতে অপু ইসলাম খান করা হয়। শাকিবের ইচ্ছাতেই এতদিন ধরে বিয়ের বিষয়টি গোপন রেখেছিলেন অপু বিশ্বাস। তখন অপু আরো বলেছিলেন, শাকিবের ক্যারিয়ারের ভালো চিন্তা করে এতদিন চুপ করে ছিলেন তিনি। কিন্তু হঠাৎ করেই গত বছর একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে এসে তিনি বলেন, শাকিব তাকে সবসময় ছোট করেছে। শাকিবের কারণে অনেক লাঞ্ছনা সহ্য করেছেন তিনি। এসব আর সইতে না পেরে টিভি অনুষ্ঠানে লাইভের মাধ্যমেই সারাদেশকে জানিয়ে দিয়েছিলেন দীর্ঘদিনের গোপন প্রেম আর বিয়েসহ সন্তান আব্রাম খান জয়ের কথা।
অপু বিশ্বাস বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমকে বলেন, জয় যখন গর্ভে আসে তখন অ্যাবরশন করানোর জন্য তাকে ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে পাঠায় শাকিব। সেখানকার চিকিৎসক অপুকে জানান, যেহেতু আগে তিনবার অ্যাবরশন হয়েছে আর নতুন করে কনসেপ্টের সময় ৪ মাস হয়েছে, সেহেতু অ্যাবরশন করানো ঝুঁকিপূর্ণ। এরপর শাকিব অপুকে কলকাতা পাঠায় অ্যাবরশন করানোর জন্য। সেখানে শাকিব খান তখন ‘শিকারি’ ছবির শুটিং করছিল। শাকিব খান তার চাচাতো ভাই মুনিরকে দিয়ে অপুকে কলকাতার একটি হাসপাতালে পাঠায়। সেখানকার চিকিৎসকরাও অ্যাবরশন ওই সময় ঝুঁকিপূর্ণ জানিয়ে তা করতে অস্বীকৃতি জানায়। তখনই অপু বিশ্বাস সন্তান জন্মদানের সিদ্ধান্ত নেন। আর এতেই শাকিব অপু বিশ্বাসের ওপর খেপে যায়। দুজনের সম্পর্কের অবনতি ঘটে।
অপু বিশ্বাস আরো জানান, অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর শাকিব খান অপুকে বলেছিল নিজেকে লুকিয়ে রাখতে। তাই লুকিয়েছিলাম। কিন্তু সন্তান হওয়ার সময় শাকিব আমার পাশে ছিল না। তবে ঢাকায় আসার পর সন্তানকে দেখতে আসে।
এতদিন এসব খবর আড়াল রাখার প্রসঙ্গে অপু তখন জানান, শাকিবের ক্যারিয়ার এখন তুঙ্গে। সে আমার স্বামী। এসব কথা জানাজানি হয়ে গেলে তার সম্মানহানি হবে, ক্যারিয়ারের ক্ষতি হবে, তাই চুপ করে ছিলাম। কিন্তু সে এখন যেটা করছে সেটা অন্যায়। আমাকে আমার যোগ্য সম্মানটা দিচ্ছে না। একটা মেয়ের জীবনে এর চেয়ে অপমানের আর কী হতে পারে?
রেজিস্ট্রি করে বিয়ে হয় শাকিব খান আর অপু বিশ্বাসের। বিয়ের আট বছরের মাথায় অপু বিশ্বাসের কোল জুড়ে আসে ফুটফুটে এক পূত্র সন্তান। ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর কলকাতার এক ক্লিনিকে জন্ম হয় শাকিব ও অপুর সন্তানের। এ সন্তানের নাম রাখা হয় আব্রাম খান জয়। সন্তান জন্মের সময় ছবির শুটিংয়ের ব্যস্ততা থাকায় পাশে থাকতে পারেননি শাকিব। এছাড়া এক বছর শাকিবের সঙ্গে তার কথা হয়নি বলেও জানিয়েছিলেন লাইভে।
গেল বছরের ২২ নভেম্বর শাকিব খানের আইনজীবী সিরাজুল ইসলামের মাধ্যমে শাকিব খান তালাকের নোটিশ পাঠান অপু বিশ্বাসকে। যদিও ডিসেম্বর মাসের ৫ তারিখে অপু বিশ্বাস ডিভোর্স লেটার হাতে পাবার কথাস্বীকার করেন। এরপর ডিভোর্সের নিয়মানুযায়ী সিটি কর্পোরেশন এর সমঝোতা বৈঠকের প্রথম তারিখ গতকাল (১৫ জানুয়ারি) থাকলেও সেখানে শাকিব তার সিদ্ধান্তে অটল থেকে নিজে তো আসেননি এমনকি কোন প্রতিনিধিকেও পাঠাননি সেখানে। সেই সমঝোতা বৈঠকেও অংশ নিয়েছেন অপু বিশ্বাস।
এদিকে, সন্তানের দোহাই দিয়ে বারবার শাকিবের এত অপমান সহ্য করে অপু কেন সংসার করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন? এ নিয়ে প্রশ্ন পুরো মিডিয়া আর ফিল্মপাড়াতে। তবে কি অপু বিশ্বাস আত্নমর্যাদাশীল নারী নন? এমন প্রশ্নও তুলছেন কেউ কেউ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন