দীপঙ্কর দীপনের ঢাকা অ্যাটাক সিনেমার সাফল্যের জন্য বদরুল আনাম সৌদ তাঁর ‘গহিন বালুচর’ ছবির মুক্তির তারিখ পিছিয়েছেন। কিন্তু সাহস দেখিয়েছেন ‘দুলাভাই জিন্দাবাদ’ সিনেমার প্রযোজক নাদির খান। তিনি সিনেমাটি দেশের শতাধিক প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি দিয়েছেন। এদিকে এই সিনেমা নিয়ে খুব বেশি প্রচারণায় দেখা যায়নি নায়ক-নায়িকাদের। আজ শুক্রবার সকালে প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপে এই সিনেমার নায়ক বাপ্পি চৌধুরীও তা-ই বললেন। তাঁর মতে, এ মুহূর্তে সিনেমাটি মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত মোটেও ঠিক হয়নি।
বাপ্পী, আপনি কোথায়?
কক্সবাজারে। পারিবারিক কাজে এখানে এসেছি।
আজ আপনার নতুন সিনেমা মুক্তি পেয়েছে।
সিনেমা মুক্তিতে আমার যেখানে খুশি হওয়ার কথা, হয়েছে কিন্তু উল্টোটি। আমি মোটেও চাইনি এই সময় দুলাভাই জিন্দাবাদ সিনেমা মুক্তি পাক।
কেন?
সবাই যেহেতু এখনো ঢাকা অ্যাটাক সিনেমাটি আগ্রহ নিয়ে দেখছেন, আমরা কিন্তু আরও কিছুদিন সময় নিতে পারতাম। একটা সিনেমা যেখানে ভালো চলছে, তখন আরেকটা ভালো সিনেমা দেওয়ার মোটেও দরকার ছিল না। এটা হয়েছে আমাদের প্রযোজকের একক সিদ্ধান্তে। তিনি ভালো বলতে পারবেন, কী ভেবে এমনটা করেছেন। আমরা তো শুধু অনুরোধ করতে পারি, কমান্ড করতে পারি না। শুনেছি অনেকগুলো হল পেয়েছে, সবচেয়ে বড় কথা, টেবিল মানিও অনেক পেয়েছে। এটা নাকি ঢাকা অ্যাটাক সিনেমার থেকেও বেশি।
কত দিন পর সিনেমাটি মুক্তি দিলে ভালো হতো?
দুলাভাই জিন্দাবাদ কিন্তু বিগ কাস্টিং সিনেমা। দর্শক হিসেবে আমি নিজেও চাইব, পরপর দুটি ভালো সিনেমার দরকার নেই। আর যদি মুক্তি দিতেই হয়, তাহলে মাসখানেক পর হলে খুব ভালো হতো।
‘দুলাভাই জিন্দাবাদ’ সিনেমার পোস্টারে বাপ্পি ও মিম
চলচ্চিত্রে আপনি এ প্রজন্মের একজন নায়ক। চলচ্চিত্রের অবস্থা কেমন হচ্ছে?
চলচ্চিত্রে এখন পেশিশক্তির জোর বেশি। খুবই দুঃখজনক। এই গ্রুপিং আমাদের জন্য আত্মঘাতী সিদ্ধান্তও বলতে পারেন। এসব কারণে চলচ্চিত্র ভালোর দিকে যাচ্ছে না। একটা-দুইটা ভালো সিনেমা দিয়ে ইন্ডাস্ট্রি চলবে না। ঢাকা অ্যাটাক, শিকারি, নবাব, সুলতানা বিবিয়ানা হঠাৎ হঠাৎ ভালো সিনেমা হলে মোটেও ভালো হয় না। সিনেমাকে ভালোর দিকে নিয়ে যেতে হলে, অন্তত প্রতি মাসে একটা করে হিট সিনেমা লাগবে।
চলচ্চিত্র ভালোর দিকে যাচ্ছে না কেন?
চলচ্চিত্র নষ্ট হচ্ছে গ্রুপিংয়ের কারণে। গ্রুপিংয়ে ব্যক্তিস্বার্থ রক্ষা হচ্ছে, কিন্তু চলচ্চিত্রের স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দর্শক নায়কের কাছ থেকে সুন্দর সুন্দর সিনেমায় চায়। কিন্তু রাজনীতি, হাঙ্গামা করে খবরের শিরোনাম হবে এমনটা তাঁরা চায় না। দর্শক তাঁদের প্রিয় অভিনয়শিল্পী কিংবা নায়ক-নায়িকাকে নতুন নতুন কাজ দিয়ে খবরে আসলে বেশি খুশি হয়। আমাদের এখানে তো গ্রুপিংয়ের কারণে চলচ্চিত্রের কাজ থেমে থাকে। এই জটিলতায় দেখা যায় নতুন সিনেমা মুক্তি দেওয়া সম্ভব হয় না। শিল্পীদের নির্বিঘ্নে কাজ করতে দেওয়া উচিত।
গ্রুপিংয়ের কারণে সিনেমায় নতুন প্রযোজকেরা লগ্নি করার সাহস পায় না?
একদমই তাই। আমাদের সিনেমায় দুটি গ্রুপ হয়ে গেছে। অনেকে ভাবেন আমি সমিতির কিংবা পরিবারের। আমি আসলে তা না। আমি সবার। আমি সিনেমা করতে এসেছি, রাজনীতি করতে নয়। সমিতি তো প্রযোজক ফিরিয়ে আনতে পারছে না। সিনেমায় এখন যে দু-একজন প্রযোজক কাজ করছেন, তাঁরাও গ্রুপিংয়ের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। চলচ্চিত্রের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির জন্য নতুন কেউ বিনিয়োগ করার সাহস পাচ্ছে না। যারা গ্রুপিং করছে তারা সবকিছু নিজেদের মতো করে সাজানোর চেষ্টা করছে। আমরা পর্দায় কাজ করার মানুষ, আমাদের কাজের পরিবেশ দিন, প্লিজ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন