খেলাপি ঋণের ভার কমাতে সরকারের পক্ষ উদ্যোগ নেওয়া হলেও প্রথম মাসে দৃশ্যমান ফলাফল আসেনি রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের জনতা ব্যাংকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হাল হালনাগাদ প্রতিবেদনে এমন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। তবে জনতা ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে এখনো যে সময় আছে তাতে ভালো ফলাফল আসবে।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী জনতা ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ২১ হাজার ৬৬০ কোটি টাকা। যা ব্যাংকটির মোট বিতরণ করা ঋণের ৪৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ। এর মধ্যে মন্দমানের ঋণের ১৯ হাজার ৬১৪ কোটি টাকা। একই সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যে দেখা যায়, ব্যাংকটির মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ৪৮ হাজার ৬০০ কোটি ২৭ লাখ টাকা।
তথ্য অনুযায়ী, খেলাপি ঋণ কমানোর উদ্যোগের আগে ২০১৯ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২০ হাজার ৯৯৪ কোটি টাকা। যা মোট ঋণের ৪৩ শতাংশ। আর মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ছিল ৪৮ হাজার ৮৬৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। সে অনুযায়ী খেলাপি ঋণ কমানোর বিশেষ সুবিধা ঘোষণার পর ঋণ বিতরণের পাশাপাশি বাণিজ্যিক ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে। দেশের ব্যাংক খাতের মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ এক লাখ ১৬ হাজার ২৮৮ কোটি ৩১ লাখ টাকা। যা মোট বিতরণ করা ঋণের ১১ দশমিক ৯৯ শতাংশ।
এর বাইরে অবলোপনকৃত ঋণের পরিমাণ প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা। বিপুল এই ঋণের ভারে ভারাক্রান্ত ব্যাংক খাত। যে কারণে ইচ্ছা করলেও ব্যাংকগুলো সুদ হার কমাতে বা গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী ঋণ বিতরণ করতে পারছে না। সরকার মনে করছে খেলাপি ঋণ কমাতে পারলে ঋণ হার আপনা আপনি কমে আসবে। এ কারণে খেলাপি ঋণ কমাতে উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত যে সব ঋণ খেলাপি হয়ে গেছে ওই মোট খেলাপি ঋণের ২ শতাংশ জমা দিলেই ওই খেলাপি ঋণ নিয়মিত হয়ে যাবে। পাশাপাশি ৯ শতাংশ সুদ হারের সুবিধা পাবে ওই ঋণ। সেপ্টেম্বর মাস থেকে শুরু হয়ে চলতি ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত এ সময় বলবৎ আছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, জনতা ব্যাংক এ সুযোগ কাজ লাগাতে পারেনি। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চাইলে নাম না প্রকাশের শর্তে দায়িত্বপ্রাপ্ত একটি সূত্র জানায়, কিছু গ্রাহক দুই শতাংশ অর্থ জমা দিয়ে পুনঃতফসিলির আবেদন করেছিল কিন্তু অন্য কিছু শর্ত পূরণ না হওয়ায় সে সব ঋণ পুনঃতফসিলি হয়নি। ব্যাংকটি আশা করছে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত সময় আছে, এর মধ্যে তারা ‘ভালো’ ফলাফল দেখাতে পারবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন