বিশ্ব উন্নয়নে ইসলামী অর্থায়ন বাড়ছে
নানা প্রতিকূলতার মাঝেও বিশ্বের টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নে বড় ধরনের ভূমিকা রাখছে ইসলামী অর্থায়ন। ধীরে ধীরে বাড়ছে এই সম্পদের পরিমাণ। এ খাতের বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আগামী দিনগুলোতে বিশ্বের নানা প্রান্তের টেকসই উন্নয়নে ইসলামী ব্যাংকগুলোর ভূমিকা আরও অর্থবহ ও অপরিহার্য হয়ে উঠবে।
পরিসংখ্যান নির্দেশ করছে, ২০১৬ সালে এ খাতের সম্পদ ৭ শতাংশ হারে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ দশমিক ২ ট্রিলিয়নে। আর ২০২২ সালে তা ৩ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইসলামী অর্থ উন্নয়ন তহবিল ও সূচক-২০১৭ (আইএফডিআই) শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে ইসলামি ব্যাংকগুলোর গুণগত উন্নয়ন, আর্থিক জ্ঞান, সুশাসন, সিএসআর নিয়েও ধারণা দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি বিশ্বের টেকসই উন্নয়নের কোন কোন খাতে ইসলামি ব্যাংকগুলো ভূমিকা রাখতে পারে, সে বিষয়েও আলোকপাত করা হয়েছে।
বুধবার মধ্যপ্রাচ্যের বাহরাইনে অনুষ্ঠিত বিশ্ব ইসলামী ব্যাংকিং সম্মেলনে আইএফডিআইর পঞ্চম সংস্করণের ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। যৌথভাবে তা প্রকাশ করে ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক (আইডিবি), বেসরকারি খাতের উন্নয়নের জন্য ইসলামী কর্পোরেশন (আইসিডি) এবং ব্যবসায়ী ও পেশাজীবীদের জন্য বিশ্বের শীর্ষ তথ্য সরবরাহকারী সংস্থা থমসন রয়টার্স।
ইসলামী অর্থায়ন শিল্পের এই প্রতিবেদনটি তৈরিতে ব্যাংকের পরিমাণগত উন্নয়ন, শিক্ষা, শাসন, কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা এবং সচেতনতা এই পাঁচটি বিষয়কে বিবেচনা করা হয়েছে। পাঁচটি বিষয়ে ভাল করেছে বিশ্বের এমন ১৩১টি দেশের তথ্য নিয়েই প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়। এতে ২০১৩ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরের ডাটা ব্যবহার করা হয়।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসলামী অর্থায়ন শিল্পের নেতৃত্বে গালফভুক্ত দেশগুলোর (সৌদি আরব, কুয়েত, আরব আমিরাত, কাতার, বাহরাইন ও ওমান) থাকার কথা থাকলে আইএফডিআইর প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এবার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে বেশি ভূমিকা রেখেছে মালয়েশিয়া, বাহারাইন ও আরব আমিরাত। তবে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলো, ইউরোপ, পূর্ব ও পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোও ইসলামী অর্থায়নের সূচকে ভাল করছে।
কিভাবে কঠিন অর্থনৈতিক অবস্থা মোকাবেলা করা যায়, সে বিষয়ে ইসলামী অর্থব্যবস্থা দেশগুলোকে পথ দেখিয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। ফলে দেশগুলো তাদের ইসলামী আর্থিক শিক্ষা ও সাহিত্যের উন্নতি করার চেষ্টা করছে।
যদিও প্রতিবেদনে বাংলাদেশের কথা উল্লেখ করা হয়নি, তবে বাংলাদেশেও এগিয়ে রয়েছে ইসলামী অর্থনীতির ধারা। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, প্রচলিত ধারার (কনভেনশনাল) ব্যাংকগুলোর চেয়ে গ্রাহক, আমানত, শাখা বৃদ্ধি ও ঋণ বিতরণে এগিয়ে রয়েছে ইসলামী ব্যাংকগুলো। রেমিট্যান্স আহরণেও এগিয়ে এসব ব্যাংক।
বর্তমানে বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনা করছে আটটি পূর্ণাঙ্গ ধারার শরিয়াহভিত্তিক ইসলামী ব্যাংক। এছাড়া দেশি-বিদেশি মিলিয়ে প্রচলিত ধারার ৯টি ব্যাংক চালু করেছে ইসলামী ব্যাংকিং শাখা, আটটি ব্যাংক চালু করেছে ইসলামী ব্যাংকিং উইন্ডো। দেশের ব্যাংকিং খাতের এক-পঞ্চমাংশই এখন নিয়ন্ত্রণ করছে ইসলামী ধারার এ ব্যাংকগুলো।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন