পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে থাকা ইউক্রেনকে গোপনে দূরপাল্লার এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। খবর রয়টার্সের।
প্রতিবেদন মতে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়তে গত কয়েক সপ্তাহে ইউক্রেনীয় বাহিনীকে শক্তিশালী এই ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করা হয়েছে যা এরই মধ্যে তারা যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহার করেছে। এক মার্কিন কর্মকর্তা বুধবার (২৪ এপ্রিল) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলা ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের শুরু থেকেই ভলোদিমির জেলেনস্কির সরকারকে সামরিক খাতে কোটি কোটি ডলার আর্থিক সহায়তা দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র।
এরই ধারাবাহিকতায় গত মাসে (১২ মার্চ) ইউক্রেনকে আরও ৩০ কোটি ডলারের একটি নতুন সামরিক সহায়তা প্যাকেজ অনুমোদন করেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান যদিও তখন বলেছিলেন, এই অর্থ উচ্চ গতিসম্পন্ন আর্টিলারি রকেট সিস্টেম (হিমার্স)-এর জন্য আর্টিলারি রাউন্ড এবং যুদ্ধাস্ত্র ক্রয়ে ব্যবহার করা হবে।
তবে এখন বলা হলো, ওই অর্থের বিনিময়ে দূরপাল্লার এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করা হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক মার্কিন কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স। তবে ইউক্রেনকে এই ক্ষেপণাস্ত্র কতগুলো দেয়া হয়েছে তা প্রকাশ করেননি তিনি।
এদিকে বেশ কয়েক মাস ধরে অচলাবস্থার পর গত সপ্তাহে মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষে ইউক্রেনের জন্য প্রায় ৬০ বিলিয়ন ডলার বা ৬ হাজার কোটি ডলারের সামরিক সাহায্যের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে।
প্রস্তাবটি এরই মধ্যে ডেমোক্রেটিক-সংখ্যাগরিষ্ঠ সিনেটে পাঠানো হয়েছে। উচ্চকক্ষ সিনেটের দ্রুত সমর্থনের পর বাইডেনের স্বাক্ষরের মধ্যদিয়ে এটি দ্রুত বাস্তবায়ন হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাইডেন ভলোদিমির জেলেনস্কিকে জানিয়েছেন, তিনি ইউক্রেনে নতুন সামরিক সাহায্য পাঠাতে ‘দ্রুত পদক্ষেপ নেবেন’।
ন্যাটোকে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের আবেদন জেলেনস্কির
ন্যাটোকে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের আবেদন জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। গত শুক্রবার ন্যাটোর প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের তিনি বলেন, রাশিয়ার হামলা ঠেকাতে তাদের বিমান-প্রতিরক্ষার প্রয়োজন। এর জন্য তিনি ন্যাটোর সহযোগিতা চান।
রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান বিমান হামলা ঠেকাতে এই মুহূর্তে ইউক্রেনের অন্তত সাতটি প্যাট্রিয়ট আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রয়োজন জানিয়ে তিনি বলেন, ইউক্রেন ও ন্যাটো পরস্পরের মিত্র কি না এই ইস্যুই তা নির্ধারণ করবে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ন্যাটোর প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের আরও বলেন,
ন্যাটো দেশগুলো বিপর্যস্ত ইউক্রেনকে আরো সামরিক সহায়তা দিতে ইচ্ছুক কি না তার ওপর বিচার করে প্রকৃত মিত্র কে, তা নির্ধারণ করা হবে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ যেভাবে ইসরাইলকে অস্ত্র দিচ্ছে, সেভাবে ইউক্রেনকেও অস্ত্র দেয়ার আবেদন জানান জেলেনস্কি। তিনি বলেন,
যুক্তরাষ্ট্র-নির্মিত সাতটি প্যাট্রিয়ট এয়ার-ডিফেন্স সিস্টেমের প্রয়োজন ইউক্রেনের। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে অবশ্যই থামাতে হবে। তাহলে আকাশসীমা আবার নিরাপদ হবে। আর এটি পুরোপুরি ন্যাটোর ব্যাপার। তারা ঠিক করবে, আমরা তাদের বন্ধু কি না।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন