চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের রাশিয়া সফর শেষ হয়েছে গতকাল বুধবার। মস্কোয় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও জোরদারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের ভাষ্য, মস্কো-বেইজিংয়ের এই সম্পর্ক ‘সুবিধাভোগের বিয়ের মতো’।
দুই দিনের সফর শেষে গতকাল পুতিনকে বিদায় জানান সি চিন পিং। এর আগে সোম ও মঙ্গলবার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন তাঁরা। দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় অংশ নেন দুই দেশের কর্মকর্তারাও। সি বিদায় নেওয়ার পরপরই রাশিয়া-চীন সম্পর্ক নিয়ে ওই মন্তব্য করলেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটিকে অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘কিছু কিছু ক্ষেত্রে তারা (রাশিয়া ও চীন) বিশ্বকে আমাদের চেয়ে ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখে। এর ফলে তাদের মধ্যে যে সম্পর্কটা তৈরি হয়েছে, তা হলো সুবিধাভোগের জন্য বিয়ের মতো।’
ব্লিঙ্কেন বলেন, সম্পর্ক গঠনের দিক দিয়ে চীনের কাছে রাশিয়া অনেকটা ছোট অংশীদারের মতো। এমনকি ইউক্রেনে লড়াই করতে মস্কোকে অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করতেও রাজি হয়নি দেশটি। তিনি আরও বলেন, ‘আজ আমরা যখন এই আলোচনা করছি, ততক্ষণ পর্যন্ত চীন তাদের এই সিদ্ধান্তে বদল আনেনি।’
সিনেট কমিটির উদ্দেশে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যদিও চীন তাদের ‘সংকীর্ণ’ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বিশ্বব্যবস্থায় বদল আনতে চায়, তবে ‘বিশ্বে বিশৃঙ্খলা ডেকে আনা ছাড়া’ রাশিয়ার কোনো যৌক্তিক মতাদর্শ নেই।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে পুতিনের বেইজিং সফরের সময় ‘সীমাহীন বন্ধুত্বের’ ঘোষণা দিয়েছিল দুই দেশ। এরপর থেকেই রাশিয়া ও চীনকে সন্দেহের চোখে দেখছে পশ্চিমারা। এরই মধ্যে দুই দিনের বৈঠক এবং গতকাল বিদায়ের সময়ে পুতিন-সির কথোপকথন তাঁদের মধ্যে সম্পর্ক আরও জোরদারের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
দুই নেতার বিদায়ের সময়ের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, সি চিন পিং বলছেন, বর্তমান বিশ্বের ভূরাজনীতিতে এমন কিছু পরিবর্তন ঘটছে, যা বিগত ১০০ বছরেও দেখা যায়নি। বিদায়ের শেষ মুহূর্তে পুতিনের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘নিজের খেয়াল রাখবেন, প্রিয় বন্ধু।’ জবাবে পুতিন বলেন, ‘আপনার যাত্রা নিরাপদ হোক।’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন