রাজনীতিবিদরা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ। তাদের নির্বাচিত করা হয় সমাজের উন্নতি সাধনের জন্য, মানব জাতির কল্যাণের জন্য। সমাজের সমস্যাগুলো সমাধান করার দায়িত্ব তাদের হতে তুলে দেন ভোটাররা। কিন্তু তারা তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে না পারলে কী হবে? বিশ্বের বেশির ভাগ দেশে, একজন নেতা তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হওয়ার পরেও সমাজে মাথা উঁচু করে চলাফেরা করেন। স্বাভাবিকভাবে জীবনযাপন করেন। এর থেকে বেশি কিছু হলে বড়জোর জনগণ তাদের ভোট না দিয়ে গদিচ্যুত করেন। কিন্তু ইতালির ছোট শহর ট্রেন্টোতে, যখন একজন রাজনীতিবিদ ভুল কাজ করে থাকেন তার সঙ্গে যে আচরণ করা হয় তা অনেকেই হয়তো কল্পনাও করতে পারবেন না। বিশ্বাস করুন বা না করুন, শহরের বাসিন্দারা তাদের ব্যর্থ রাজনীতিবিদদের খাঁচায় বন্দি করে নদীতে ডুবিয়ে শাস্তি দেন। এটি অবশ্যই কোনো মৃত্যুদণ্ড নয়। খাঁচাটি মাত্র এক সেকেন্ডের জন্য নামানো হয়, তারপর পানি থেকে তুলে নেয়া হয়।
শহরবাসীর দাবি, নেতা যে ভুল করেছেন সেটা তাকে উপলব্ধি করানোর জন্যই এই ধরনের ‘শাস্তি’ দেয়া হয়। প্রতি বছরের জুনে নেতাদের সারা বছরের প্রতিশ্রুতির হিসাব নেয়া হয়। কতগুলো পালিত হয়েছে, কতগুলো পালিত হয়নি, তার হিসাব কষা হয়। তারপরই শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়। নেতাদের এ ধরনের শাস্তি দেয়ার রীতি অস্বাভাবিক নয়। বিশ্বের অনেক জায়গার এ সংক্রান্ত নিজস্ব রীতি-নীতি এবং আচার-অনুষ্ঠান রয়েছে। ট্রেন্টোতে এই আচারটিকে ‘টোনকা’ বলা হয়। এটি ভিজিলিয়ান উদ্যাপনের অংশ হতে পারে যা শহরটি প্রতি বছর জুনের দ্বিতীয়ার্ধে উদ্যাপন করে। উদ্যাপনের সময় নেতাদের খাঁচায় বন্দি করে পানিতে ডুবিয়ে দেয়া যার অন্যতম অংশ। একে বলা হয় পেনিটেন্স কোর্ট, যেখানে রাজনীতিবিদ এবং শহরের বিখ্যাত ব্যক্তিদের বছরের পর বছর ভুল করার জন্য ‘বিচার’ করা হয়। শাস্তির প্রধান লক্ষ্য হলো- প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ নেতাদের প্রকাশ্যে উপহাস করা। টোনকা ঐতিহ্যগতভাবে ২৬শে জুনের আগে শেষ রোববারে অনুষ্ঠিত হয়। ২০২২ সালের ১৯শে জুন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এই বছরের ২৫শে জুন এটি অনুষ্ঠিত হতে পারে।
সূত্র: টাইমস নাও
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন