সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) সামিটে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ভারত। এর মধ্য দিয়ে পারমাণবিক অস্ত্রধারী চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী এই দুটি দেশের মধ্যে সম্প্রতি সম্পর্কের যে বরফ জমেছে, তা গলতে পারে বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। মে মাসে ভারতের গোয়া’য় এই সম্মেলন হতে যাচ্ছে। ভারতীয় মিডিয়াকে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডন। তবে এর আগে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ সব অনিষ্পন্ন গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা সমাধানে ভারতের সঙ্গে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন। এর মধ্যে থাকবে ভারত দখলীকৃত জম্মু-কাশ্মীর। তিনি আরও পরিষ্কার করেছেন যে, ২০১৯ সালের ৫ই আগস্ট একতরফাভাবে কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন বাতিল করে ভারত। কাশ্মীরকে আগের মর্যাদা ফিরিয়ে দিতে হবে। তাছাড়া ভারতের সঙ্গে কোনো আলোচনা হতে পারে না।
এক মাস আগে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির একটি মন্তব্যে ভারতের রাস্তায় রাস্তায় প্রতিবাদ বিক্ষোভ হয়। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের মিটিংয়ের এক ফাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে গুজরাটের কসাই বলে অভিহিত করেছিলেন বিলাওয়াল।
তার এই মন্তব্যকে ‘অসভ্য’ বলে উল্লেখ করে ভারত। এমন উত্তেজনাকর মুহূর্তে বিলাওয়ালকে এসসিওর সম্মেলনে যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ ইস্যুতে দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কোনো মন্তব্য করেননি।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের মতে, বিলাওলায়ের কাছে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের আমন্ত্রণ ইসলামাবাদে ভারতীয় হাইকমিশনের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। এতে বলা হয়, ওই আমন্ত্রণপত্রে যে তারিখ উল্লেখ আছে তা ৪ঠা মে এবং ৫ই মে। যদি ভারতের এই আমন্ত্রণ বিলাওয়াল গ্রহণ করেন তাহলে প্রায় ১২ বছরের মধ্যে প্রথম পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে তিনি ভারত সফরে আসতে পারেন। সর্বশেষ ২০১১ সালে ভারত সফরে এসেছিলেন পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রাব্বানি খার।
পাকিস্তান, চীন, ভারত, রাশিয়া ও কিরগিজস্তানের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে এসসিও। মধ্য এশিয়ার দেশ কিরগিজস্তান, কাজাখস্থান, তাজিকিস্তান ও উজবেকিস্তানের সঙ্গে সম্প্রতি কূটনৈতিক সম্পর্ক শক্তিশালী করেছে পাকিস্তান।
১৯৪৭ সালে বৃটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতা অর্জনের পর তিনটি যুদ্ধ করেছে পাকিস্তান ও ভারত। এসব যুদ্ধের মূল কারণ হলো ভারত দখলীকৃত জম্মু-কাশ্মীর। ২০১৯ সালে এই উত্তেজনা আবার তুঙ্গে ওঠে। ওই সময় কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন বাতিল করে ভারত। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ বলেন, নয়া দিল্লির এসব কর্মকা- মানবাধিকারের ভয়াবহ লঙ্ঘন। এই দুটি দেশের মধ্যে তখন থেকেই সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনা স্থগিত হয়ে আছে। তবে ব্যাকডোর ডিপ্লোম্যাসির মাধ্যমে সম্পর্ক নিয়ে সমঝোতার চেষ্টা করা হয়েছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন