শুরু হলো দুই দিনব্যাপী জি-২০ নেতাদের শীর্ষ সম্মেলন। ইন্দোনেশিয়ার বালিতে আজ ও আগামীকালের এ সম্মেলনে বিশ্বের অনেক দেশের নেতা যোগ দিলেও অংশ নিচ্ছেন না রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
ক্রেমলিনের নেতার অংশ না নেওয়ার বিষয়টি গত বৃহস্পতিবার নিশ্চিত করে জাকার্তার রুশ দূতাবাস। কিন্তু কেন সম্মেলনে যাবেন না পুতিন-সোমবার এক প্রতিবেদনে সম্ভাব্য কিছু কারণ তুলে ধরেছে এএফপি।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মূলত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে পশ্চিমা সমালোচনা থেকে নিজেদের আড়ালে রাখতে চায় ক্রেমলিন। তবে পুতিনের অংশ না নেওয়া ইতোমধ্যেই পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় জর্জরিত দেশটিকে আরও বিচ্ছিন্ন করে তুলবে।
এর আগে জুলাইয়ে জি-২০ এর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে কর্মকর্তারা ইউক্রেনে রুশ হামলার নিন্দা জানাতে থাকলে প্রতিবাদে বৈঠকস্থল ছেড়ে যান ল্যাভরভ।
ডায়ালগ অব সিভিলাইজেশন্স ইনস্টিটিউটের প্রধান গবেষক আলেক্সি মালাশেঙ্কো বলেন, পুতিন আসলে আরেকবার জনসমক্ষে অপমানিত হতে চাননি। তিনি মনে করিয়ে দেন, ২০১৪ সালে ব্রিসবেনের জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের কথা। রাশিয়া শুধু ক্রিমিয়া দখল করেছিল। এরই জেরে পুতিনকে ভয়াবহভাবে একঘরে করে রাখা হয়েছিল। অপদস্থতা ঠেকাতে দ্রুত সম্মেলন ত্যাগ করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট।
অপরদিকে ক্রেমলিনের ঘনিষ্ঠ বৈদেশিক নীতি বিশেষজ্ঞ ফায়োদর লুকিয়ানভ ইঙ্গিত দিয়েছেন যে পুতিন ইউক্রেনের বিষয় নিয়ে ঝগড়া করতে প্রস্তুত নন। রাশিয়ার গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স জার্নালের সম্পাদক লুকিয়ানভ বলেন, ‘তার অবস্থান সুপরিচিত, এটি পরিবর্তন হবে না। অন্য পক্ষের অবস্থানও সুপরিচিত। তাহলে লাভ কী এ সম্মেলনে যোগ দিয়ে?’ রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সংস্থা আর পলিটিকের প্রতিষ্ঠাতা তাতিয়ানা স্ট্যানোভায়া বলেন, ‘পুতিনের জন্য এ সম্মেলনে যেতে তার অস্বীকৃতি রাশিয়াকে নিরপেক্ষ রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। তিনি ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী লাইনে অনেক সমর্থন পাচ্ছেন।’ স্ট্যানোভায়া উল্লেখ করেছেন যে, পুতিন আফ্রিকা, এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যে মিত্র খুঁজছেন। এমনকি তিনি পশ্চিমাবিরোধী জোট গড়ার চেষ্টা করছেন।
জাকার্তায় রুশ দূতাবাসের চিফ প্রটোকল কর্মকর্তা ইউলিয়া তোমস্কায়া বলেন, ‘আমি নিশ্চিত করতে পারি-জি-২০ সম্মেলনে (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) সের্গেই ল্যাভরভ রুশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন। প্রেসিডেন্ট পুতিন যোগ দিচ্ছন না; এমনকি তিনি ভার্চুয়ালিও অংশগ্রেহণ করবেন না।’ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অংশগ্রহণের কথা রয়েছে। যদিও পুতিন অংশ নিলেও তার সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা আগেই নাকচ করে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বাইডেন বলেন, ‘পুতিন যুদ্ধাপরাধী।’ রাজনৈতিক বিশ্লেষক কনস্ট্যান্টিন কালাচেভ বলেন, ‘পুতিনের বালি ভ্রমণে অস্বীকৃতি মানেই সামনে ইউক্রেনের ভয়াবহ পরিণতি। তার কাছে এমন কোনো প্রস্তাব নেই, যা বিশ্বনেতাদের সন্তুষ্ট করতে পারবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন