উপজেলার ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা একটি গ্রামের বাসিন্দা কৃষক বাচ্চু মিয়া। কাঁটাতারের বেড়াসংলগ্ন অনেক অনাবাদী জমি পতিত থাকত।
গত বছর বাচ্চু মিয়া বেড়াতে যান কুমিল্লায়, সেখানে গিয়ে দেখেন কাশ্মীরির বড়ই (কুল) চাষ করে এক কৃষকের ভাগ্যবদল হয়েছে। এ স্বপ্ন নিয়ে তিনি বাড়ি এসে ২০২০ সালের জুন মাসে ভারতীয় কাঁটাতারের বেড়াসংলগ্ন পতিত জমিতে এ ধরনের বড়ই চাষে উদ্যোগী হন।
তিনি ইন্টারনেটের মাধ্যমে খবর পেয়ে ফরিদপুরের একটি নার্সারি থেকে ৩৫ হাজার টাকায় ৮০০ কাশ্মীরি বড়ইয়ের চারা ২২০ শতাংশ জমিতে রোপণ করেন। শুরু করেন গাছের পরিচর্যা।
এ বছরের জানুয়ারির মাঝামাঝি গাছে বড়ই আসতে শুরু করেছে। এখন থোকায় থোকায় বড়ই গাছে ঝুলছে। সুস্বাদু এ বড়ই বাজারজাত শুরু হয় ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে।
সুস্বাদু এ কাশ্মীরি বড়ই কিনতে বাচ্চু মিয়ার বাগানে ভিড় করছেন ক্রেতারা। উৎসুক মানুষেরও কমতি নেই। মাধবপুর উপজেলা সীমান্তবর্তী মেহেরগাঁও গ্রামের সৌদিফেরত বাচ্চু মিয়ার এজাতীয় বড়ই চাষ করে প্রথমবারেই তাক লাগিয়ে দেন। এলাকার কৃষকরা তাদের পতিত জমিতে কাশ্মীরি বড়ই গাছ রোপণের পদ্ধতি শিখছেন।
বাচ্চু মিয়া জানান, গাছ লাগানোর পর কৃষি বিভাগের সহযোগিতা চেয়েও পাননি তিনি। না পেলেও হাল ছাড়েননি। প্রথমবারে চারা সংগ্রহ করতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন। ১০ হাজার টাকা মার খেয়েছেন। পরে ইন্টারনেটের মাধ্যমে খবর নিয়ে ফরিদপুর থেকে উন্নতজাতের চারা এনে ২০২০ সালের জুন মাসে ২২০ শতক জায়গা রোপণ করেন।
প্রথম ধাপেই আশার আলো দেখছেন। প্রায় সাত মাসের মাথায় আশার আলো দেখেন বাচ্চু মিয়া। এখন থোকায় থোকায় সুস্বাদু বড়ই তার গাছে ঝুলছে।
বাচ্চু মিয়া জানান, এ পর্যন্ত দেড় লাখ টাকার বড়ই বিক্রি করছেন। আরও এ পরিমাণ টাকার বড়ই বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে। এ জাতীয় বড়ই চাষ করতে পরিশ্রম কম হয়।
এলাকার বাসিন্দা উবায়দুল্লাহ বলেন, বাচ্চু মিয়ার এ বড়ই চাষ এলাকার কৃষকদের মধ্যে মডেল হতে পারে। ধর্মঘর এলাকার অনেক অনাবাদী জমি আছে। গরু-ছাগল চড়ানো ছাড়া তেমন কাজে আসে না। এসব জমিতে এ জাতীয় বড়ই আবাদ করলে এলাকার কৃষকরা লাভবান হবেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন হাসান বলেন, এজাতীয় বড়ই এ অঞ্চলের জন্য নতুন। কৃষক বাচ্চু মিয়া প্রথম আবাদ করেই সফল হয়েছেন। এখানকার মাটি আবহাওয়া কাশ্মীরি বড়ই আবাদের জন্য উপযোগী। উদ্যোক্তাদের পরামর্শ ও উৎসাহ দিতে প্রস্তুত আছেন তিনি।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন