আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর ভারতের বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলায় রায় দিতে চলেছেন দেশটির বিশেষ সিবিআই আদালত। সেদিন ২৮ বছরের পুরোনো ওই মামলায় অভিযুক্তের তালিকায় থাকা সকলকে আদালতে হাজির থাকতে হবে। বুধবার এই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক সুরেন্দ্র কুমার যাদব।
অভিযুক্তদের তালিকায় রয়েছেন দেশটির তৎকালীন উপপ্রধানমন্ত্রী ও সিনিয়র বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আদবানি, সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুরলী মনোহর যোশী ও উমা ভারতী, সিনিয়র নেতা বিনয় কাটিয়ার, উত্তরপ্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিংয়ের মতো হেভিওয়েট বিজেপি নেতা-নেত্রীরা।
উল্লেখ্য, ধর্মের জিগির তুলে আধুনিক ভারতের ইতিহাসে ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর দুর্বৃত্তরা ধ্বংস করে দিয়েছিল বাবরি মসজিদকে। অভিযোগ ওঠে ভারতীয় জনতা পার্টি, রাষ্ট্রীয় সেবক সংঘ এবং সঙ্ঘ পরিবারের সদস্যরাই নাকি নিরাপত্তাবাহিনীর চোখের সামনেই বাবরি মসজিদ গুঁড়িয়ে দিয়েছিল। আদবানী, যোশী, উমা ভারতীসহ বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী ও শীর্ষস্থানীয় বিজেপি নেতা সেদিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেইে থেমে থাকেননি, প্ররোচনাও দিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনার পরই ভারতজুড়ে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে, মৃত্যু হয় প্রায় ৩ হাজার মানুষের।
ওই ঘটনার পরই করসেবকদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়। আডবানী-যোশীরা ছাড়াও অভিযোগ দায়ের করা হয় বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) নেতা অশোক সিঙ্ঘল, সাদভী রিথম্বরা এবং বিষ্ণু হরি ডালমিয়াসহ অন্যদের বিরুদ্ধে।
২০১৭ সালে দেশটির শীর্ষ আদালত বিশেষ আদালতকে জানায় যে, প্রতিদিন শুনানি শুরু করে ২ বছরের মধ্যে ওই মামলার বিচার প্রক্রিয়া শেষ করে রায় দিতে হবে। যদিও এর পর থেকে একাধিকার এই মামলার সময়সীমা বাড়ানো হয়।
শেষবার গত ৮ মে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট জানায় যে, এই মামলার বিচার প্রক্রিয়া তিন মাসের মধ্যে শেষ করে ৩১ আগস্টোর মধ্যে রায় দিতে হবে। কিন্তু গত মাসেই বিশেষ আদালতের বিচারক সুরেন্দ্র কুমার যাদব এই মামলার বিচার প্রক্রিয়া শেষ করার জন্য আরও কিছুটা সময় চাইলে অতিরিক্ত এক মাস সময় দেয় শীর্ষ আদালত। তারই সময়সীমা শেষ হচ্ছে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর। ওই দিনই পরিষ্কার হয়ে যাবে যে, অভিযুক্ত হাই প্রোফাইল ব্যাক্তিদের ভাগ্যে ঠিক কী লেখা আছে।
ইতোমধ্যেই লখনউয়ের বিশেষ সিবিআই আদালত ফৌজদারি আইনের ৩১৩ ধারা অনুসারে ৩২ জন অভিযুক্তের জবানবন্দি রেকর্ড করেছে। তাদের মধ্যে গত ২৪ জুলাই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বয়ান নথিভুক্ত করেন আডবানি। যদিও ৯২ বছর বয়সী আডবানীর দাবি, তাকে মিথ্যাভাবে এই মামলায় জড়ানো হয়েছে। তেমনি ২ জুলাই উমা ভারতী, ১৩ জুলাই কল্যাণ সিং, ২৩ জুলাই মুরলী মনোহর যোশীর বয়ান নথিভুক্ত করা হয়। অনেকে অবশ্য আদালতে সশরীরে উপস্থিত হয়েই নিজেদের বয়ান নথিভুক্ত করেন।
বিডি প্রতিদিন
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন